সোমবার, ২১ এপ্রিল ২০২৫, ১২:৩০ পূর্বাহ্ন
বরিশাল কেন্দ্রীয় বাস টার্মিনালে কাউন্টার ও বাস চালানোর জন্য দাবিকৃত সম্মানী না দেয়ায় পরিবহনের ম্যানেজারকে মারধর করে ২ লাখ ৪৩ হাজার টাকা ছিনতাইয়ের অভিযোগ উঠেছে।
এই ঘটনায় মামলা দায়েরের পর রোববার দুপুরে বরিশাল শহীদ আব্দুর রব সেরনিয়াবাত বরিশাল প্রেসক্লাবে সংবাদ সম্মেলনে করেছেন ভুক্তভোগী বরিশাল নগরীর নথুল্লাবাদ কেন্দ্রীয় বাস টার্মিনালের গোল্ডেন লাইন পরিবহনের ম্যানেজার মোঃ শহিদুল ইসলাম শহিদ।
লিখিত বক্তব্যে তিনি বলেন, আমি দীর্ঘ ৬ বছর যাবত সুনামের সাথে গোল্ডেন লাইন পরিবহনের বরিশাল কাউন্টারে ম্যানেজার হিসেবে কর্মরত রয়েছি। আমার কর্মস্থলে খোজ নিয়ে জানা যাবে আমি বিগত দিনে বরিশাল মালিক সমিতি ও শ্রমিক ইউনিয়নের সভাপতি সম্পাদকসহ সদস্যদের সাথে সুসম্পর্ক বজায় রেখে কাজ করে আসছি।
তিনি বলেন, চাকরি করার সুবাদে বরিশাল কাউন্টারে যোগদান করার পর থেকেই বরিশাল সদর উপজেলার কাশিপুর ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান ও শ্রমিক নেতা লিটন মোল্লাকে টার্মিনালে যাতায়াত করতে দেখতাম। পরবর্তীতে তিনি একদিন হঠাৎ আমার কাউন্টারে গিয়ে বলেন নথুল্লাবাদ বাস টার্মিনালে কাউন্টার এবং বাস চালাতে চাইলে তাকে প্রতি মাসে ২৫ হাজার টাকার সম্মানী দিতে হবে। পরবর্তীতে আমি বাস টার্মিনালের অন্যান্য কাউন্টারে যোগাযোগ করলে তারাও জানান, লিটন মোল্লাকে সম্মানী না দিলে কেউই বাস চালাতে পারেনা। একপর্যায়ে আমি কয়েকমাস কম বেশি করে তাকে সম্মানী পাঠিয়েছি। কিন্তু করোনাকালীন সময়ে বাস চলাচলে খুব সমস্যা হওয়ার কারনে গত দুই মাস যাবত তাকে তার সম্মানী পাঠাতে পারিনি। এই কারনে সে তার লোকদের মাধ্যমে কিছুদিন পূর্বে আমাকে তার বাসায় ডেকে নিয়ে যান এবং তার বাসায় নিয়ে আমাকে অকত্থ ভাষায় গালাগালি করেন এবং তার সম্মানী না দিলে আমাদের গোল্ডেন লাইন কাউন্টার উচ্ছেদ ও আমাকে মেরে ফেলার হুমকি প্রদান করে।
তিনি বলেন, এই ঘটনার সূত্রপাতে বুধবার রাত ১২টার দিকে নথুল্লাবাদে অবস্থিত গোল্ডেন লাইন পরিবহনের কাউন্টার বন্ধ করে বাসার যাওয়ার সময় হঠাৎ মামলার এজাহারভুক্ত আসামী রনি মৃধা, রুবেল, তারেক, নাসির, সোহাগ, মাসুম, সুজন, জলিল, মাসুদ ও ইউনুসসহ আরো কয়েকজন মিলে মক্কা-মদিনা হোটেলের সামনে আমাকে ঘিরে ধরে। এসময় তারা অতর্কিত হামলা চালিয়ে আমার সাথে থাকা গোল্ডেন লাইন পরিবহনের কাউন্টারের ২লক্ষ ৪৩ হাজার টাকা ছিনতাই করে পালিয়ে যায়।
পরবর্তীতে আমার ডাক চিৎকার শুনে বাস টার্মিনালে ডিউটিরত এয়ারপোর্ট থানায় কর্মরত পুলিশ সদস্য এএসআই রুহুল আমীন তার সঙ্গীয় ফোর্স নিয়ে ঘটনাস্থলে পৌঁছালে ছিনতাইকারীরা ততক্ষনে পালিয়ে যায়। এরপর পুলিশ সদস্যরা স্থানীয়দের সহযোগিতায় আমাকে উদ্ধার করে শেবাচিম হাসপাতালে ভর্তি করেন। ঘটনার ২ দিন পরে আমি সামান্য সুস্থতা লাভ করলে বরিশাল মেট্রোপলিটন পুলিশের এয়ারপোর্ট থানায় একটি ছিনতাই ও হত্যা চেষ্টা মামলা দায়ের করি। যেখানে কালাম হোসেন লিটন মোল্লা, রনি মৃধা, তারেকসহ ১১ জনকে আসামী করা হয়।
এদিকে রোববার বেলা ১১ টায় বরিশাল সদর উপজেলার ২নং কাশিপুর ইউনিয়ন চেয়ারম্যান ও থ্রি হুইলার শ্রমিক নেতা কামাল হোসেন লিটন মোল্লার বিরুদ্ধে মামলা প্রত্যাহারের দাবীতে মানববন্ধন করেছে শ্রমিকরা। নগরীর নথুল্লাবাদ কেন্দ্রীয় বাস টার্মিনালের সামনে এই মানববন্ধন করে তারা।
এসময় বক্তারা, অবিলম্বে শহিদুল ইসলামের দায়ের করা মিথ্যা মামলা প্রত্যাহার করা না হলে কঠোর আন্দোলনের হুমকি দেয়। তারা দাবী করেন মামলাটি ষড়যন্ত্রমূলকভাবে মিথ্যে ঘটনা সাজিয়ে দেয়া হয়েছে।