বুধবার, ১৪ মে ২০২৫, ১২:৫১ অপরাহ্ন
বরিশাল প্রতিনিধি ঃ
ওয়ারিশগণদের, বাংলাদেশ ওয়াক্ফ প্রশাসকের কার্যালয় ও বরিশাল সিটি করপোরেশনের অনুমতি ছাড়াই ‘ওয়াকফ এস্টেট ভুক্ত’ ৩য় তলা বিশিষ্ট আবাসিক হোটেল ‘গুলবাগ’ এর ৪র্থ তলায় অবৈধভাবে ভবন নির্মাণাধীন কার্যক্রম চলমান রেখেছে ইকবাল পারভেজ কুন্তল। বরিশাল নগরীর প্রাণ কেন্দ্র সদর রোডে (প্যারারা রোডের সম্মুখে) অবস্থিত হোটেল গুলবাগে যে কেউ পরিদর্শন করলেই এর প্রমাণ মিলবে। কুন্তলের অবৈধ পন্থায় ভবন নির্মাণ কার্যক্রমের বিরুদ্ধে উপরোক্ত দুই দপ্তরে লিখিত আবেদনের পাশাপাশি চলমান মাসের গত ১৫ নভেম্বর লিগ্যাল নোটিশও করেছেন এটিএম ইয়াসিন ফেরদৌস। ওয়ারিশগণ ছাড়াই একতরফাভাবে ভবনে নির্মাণ কাজ করে যাচ্ছে মরহুম আব্দুল বারেক সিকদারের ছেলে কুন্তল। বরিশাল জেলা প্রশাসক কার্যালয়ের ৩য় তলা রেভিনিউ মুন্সিখানা সূত্রে জানা গেছে, ‘ওয়াকফ এস্টেটভুক্ত’ যে কোন সম্পত্তিতে নির্মাণাধীন কোন কার্যক্রম সম্পন্ন করতে হলে সকল ওয়ারিশগণদের এক মতামত হয়ে ‘বাংলাদেশ ওয়াক্ফ প্রশাসকের কার্যালয়’ এর অনুমতিসহ স্থানীয় পর্যায়ে সিটি করপোরেশন বা পৌরসভা বা ইউপি কার্যালয়সহ ডিসি অফিসের নিয়ম-কানুন মেনে ভবনের নির্মাণ কাজ সম্পন্ন করতে হয়। চলমান বছরের গত ৭ নভেম্বর ‘হোটেল গুলবাগ’ এ অবৈধ স্থাপনা বন্ধ ও উচ্ছেদের অভিযোগ এনে বরিশাল সিটি করপোরেশন বরাবর আবেদন করেছেন ওই সম্পত্তির ওয়ারিশ কাজী রেজাউল করিম মামুন, জিল্লুর রহমান ও তাহমিনা বেগম। অভিযোগে উল্লেখ থাকে, মরহুম আব্দুর রাজ্জাক শিকদার দেশ স্বাধীন হওয়ার পূর্বে ‘হোটেল গুলবাগ’ ৩ তলা ভবন করেছিলেন। তার মৃত্যুর পর একমাত্র স্ত্রী, ৫ পুত্রের মধ্যে ৪ পুত্র ও ৩ কন্যা মৃত্যুবরণ করেন। মৃত্যুবরণের পূর্বে মরহুম আব্দুর রাজ্জাক শিকদার তার নগরীর ১৭ নং ওয়ার্ডের রাখাল বাবুর পুকুর পাড়ের বিপরীত পাশে অবস্থিত বাড়ি ‘রাজ্জাক মঞ্জিল’ ও ‘হোটেল গুলবাগ’ ‘ওয়াক্ফ এস্টেটে’ অন্তর্ভুক্ত করে যায়। বর্তমানে মরহুম রাজ্জাক শিকদারের ওয়ারিশ সংখ্যা ১ জীবিত পুত্রসহ মৃত ৪ পুত্র ও মৃত ৩ কন্যাদের পুত্র-কন্যাগণ। কিন্তু গত ৭ দিন পূর্বে মরহুম আব্দুর রাজ্জাক শিকদারের ৩য় পুত্র, মরহুম আব্দুল বারেক শিকদারের পুত্র ইকবাল পারভেজ কুন্তল ” অন্যান্য ওয়ারিশগণের সাথে আলোচনা বা পরামর্শ না করে এবং বাংলাদেশ ওয়াক্ফ প্রশাসকের কার্যালয়ের অনুমতি না নিয়ে, বরিশাল সিটি কর্পোশেন থেকে প্লান না নিয়ে হোটেল গুলবাগের ৩য় তলার উপর অবৈধভাবে ৪র্থ তলা ভবন নিমার্ণাধীন কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছে।” আবার একই বিষয় তুলে ধরে ‘ওয়াকফ্ প্রশাসক’ বরাবরও ‘হোটেল গুলবাগ’ এর অবৈধ স্থাপনা বন্ধ ও দখল উচ্ছেদের জন্য আবেদন করেন মরহুম আব্দুল মালেক সিকদারের পুত্র এটিএম ইয়াসিন ফেরদৌস। উপায়ন্ত না পেয়ে গত গত ১৫ নভেম্বর ইকবাল পারভেজ কুন্তলের বিরুদ্ধে লিগ্যাল নোটিশ করেছেন এটিএম ইয়াসিন ফেরদৌস। নোটিশ দাতার পক্ষের আইনজীবী হলেন মোঃ আনোয়ার হোসেন বাচ্চু। তিনি বলেন, তার মক্কেল (নোটিশ দাতা) বরিশাল শহরস্থ ইসি নং- ১৫৭৬৪ আব্দুর রাজ্জাক সিকদার ওয়াকফ্ (আওলাদ) স্টেট এর সম্পত্তির বৈধ আয়ের অংশ নিয়মিত ভোগ দখল করে আসছেন। সম্প্রতি আপনি (নোটিশ গ্রহীতা) মরহুম আব্দুর রাজ্জাক ওয়াকফ স্টেট এর সম্পত্তি ঐতিহ্যবাহী হোটেল গুলবাগের ৪র্থ তলায় যথাযথ কর্তৃপক্ষের অনুমতি না নিয়ে ইমারত নির্মাণ করিতেছেন। আইনের নিয়ম কানুনের তোয়াক্কা না করে ইমারত নির্মাণ কাজ করায় আগামী ১৫ দিবসের মধ্যে নোটিশ দাতার নিয়োজিত আইনজীবী বরাবর কারণ প্রদানের জন্য নির্দেশ প্রদান করা হইল। অন্যথায় আপনার (নোটিশ গ্রহীতা) বিরুদ্ধে দেওয়ানী ও ফৌজদারী অপরাধে অভিযুক্ত করিয়া বিজ্ঞ আদালতে মোকদ্দমা দায়ের করা হইবে। তবে নোটিশ গ্রহীতা ইকবাল পারভেজ কুন্তল জবাব দিবে এই মর্মে সময় নিয়েছেন বলে জানান ওই আইনজীবী। ইকবাল পারভেজ কুন্তলের ব্যবহৃত মুঠোফোনে কল দিলে তিনি বলেন, দেশে কোন কাজই এখন নিয়ম মেনে হয় না। সেখানে আমি কাজ করতে গেলেই নিয়ম-অনিয়মের প্রশ্ন উঠে। সব কাজই হয়ে যেত, যদি সংশ্লিষ্ট দপ্তরগুলোতে মাল (ঘুষের টাকা) দিতে পারতাম। না দেয়ার কারণে একটু এলোমেলা হয়েছে। এটা ঠিক করে নিব।