শনিবার, ০৫ অক্টোবর ২০২৪, ০৩:৫৬ অপরাহ্ন
ক্রাইমসিন২৪ ডেস্ক: দেশের সর্ব উত্তরের জেলা পঞ্চগড়ে দিন দিন বাড়ছে শীতের প্রকোপ। প্রচণ্ড ঠাণ্ডার পাশাপাশি বইছে উত্তরে হিমালয় থেকে আসা ঠাণ্ডা বাতাস। গত কয়েকদিন ধরে জেলার সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ৫ থেকে ৬ ডিগ্রি সেলসিয়াসের মধ্যে ওঠানামা করছে। গতকাল মঙ্গলবার জেলার সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ছিল ৫ দশমিক ৭ ডিগ্রি সেলসিয়াস। বুধবার তা কমে দাঁড়িয়েছে ৪ দশমিক ৯ ডিগ্রি সেলসিয়াসে। এটিই এ বছরে পঞ্চগড়ের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা। তাপমাত্রা আরো কমে আসতে পারে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা।
আজ দুপুরে সূর্যের তাপ থাকলেও তাতে নেই তেমন উত্তাপ। সন্ধ্যা নামার সাথে সাথে কুয়াশার সাথে সাথে বইছে উত্তরে হিমালয় থেকে আসা ঠাণ্ডা বাতাস। ঘন কুয়াশায় চারপাশ ঢেকে আসছে। রাতভর চলছে কুয়াশাপাত। কুয়াশার সাথে সাথে পাল্লা দিয়ে বইছে ঠাণ্ডা বাতাস। এই সময় তাপমাত্রাও একেবারে নিচে নেমে আসছে। সকালে ৮/৯ টারপর সূর্যের দেখা মিলছে। তার আগে কুয়াশার চাদরে ঢাকা থাকে দিগন্তজুড়ে। রাত ৯ টার পর হাঁট বাজারগুলোতে মানুষ সমাগম কমে যাচ্ছে। ঘন কুয়াশার কারণে হেড লাইট জ্বালিয়ে যানবাহনগুলো চলাচল করছে।
শীতের প্রকোপ বাড়ায় নিম্ন আয়ের মানুষেরা বেশ দুর্ভোগে পড়েছেন। কেউ কেউ খরকুটো জ্বালিয়ে শীত নিবারণের চেষ্টা করছেন। শহরের চেয়ে গ্রামাঞ্চলে ঠাণ্ডার পরিমাণ আরো বেশি। গত বছর এই সময় বিগত পঞ্চাশ বছরের মধ্যে সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ২.৬ ডিগ্রি সেলসিয়াসে নেমে এসেছিল পঞ্চগড়ে। বুধবার তেঁতুলিয়া আবহাওয়া পর্যবেক্ষণ কেন্দ্র পঞ্চগড়ের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড করেছে ৪ দশমিক ৯ ডিগ্রি সেলসিয়াস এবং সর্বোচ্চ তাপমাত্রা রেকর্ড করেছে ২৩ দশমিক ৭ ডিগ্রি সেলসিয়াস।
এরমধ্যে জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে শীত নিবারণের জন্য দরিদ্রদের জন্য ২৫ হাজার শীতবস্ত্র ইউনিয়ন পরিষদের মাধ্যমে বিতরণ করা হয়েছে। এদিকে শীতের প্রকোপ বৃদ্ধি ও আবহাওয়ার পরিবর্তনজনিত কারণে জেলার হাসপাতালগুলোতে রোগীর সংখ্যা বাড়তে শুরু করেছে। এদের অধিকাংশই শিশু ও বৃদ্ধ। চিকিৎসকরা জানিয়েছেন শিশু ও বৃদ্ধরা ডায়েরিয়া, নিউমোনিয়া ও শ্বাসকষ্টজনিতসহ বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত হচ্ছেন। প্রতিদিন শতাধিক রোগী হাসপাতালে ভর্তি হয়ে চিকিৎসা নিচ্ছেন। গতকাল মঙ্গলবার দুপুর থেকে আজ বুধবার দুপুর পর্যন্ত পঞ্চগড় আধুনিক সদর হাসপাতালে শুধুমাত্র ডায়েরিয়া রোগে আক্রান্ত হয়ে ভর্তি হয়েছেন ৩০ জন শিশু। কেউ কেউ বহিঃবিভাগ থেকে চিকিৎসা নিয়েই চলে যাচ্ছেন। পঞ্চগড় আধুনিক সদর হাসপাতালে চিকিৎসক সংখ্যক থাকায় কেউ কেউ রোগী নিয়ে ছুটছেন ঠাকুরগাঁও, দিনাজপুর ও রংপুরে।
পঞ্চগড় আধুনিক সদর হাসপাতালের আবাসিক মেডিক্যাল অফিসার ডা. প্রতীক কুমার বণিক বলেন, এখন হাসপাতালে শীতজনিক রোগীর সংখ্যা ব্যাপক হারে বাড়ছে। আমরা আমাদের সাধ্য মতো চিকিৎসা দিয়ে যাচ্ছি।
জেলা প্রশাসক সাবিনা ইয়াসমিন জানান, পঞ্চগড়ের দরিদ্র শীতার্তদের জন্য জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে ২৫ হাজার শীতবস্ত্র ইউনিয়ন পরিষদের মাধ্যমে বিতরণ করা হয়েছে। নতুন করে আরো শীতবস্ত্রের জন্য চাহিদা পাঠানো হয়েছে। এ ছাড়া বেসরকারিভাবে বিভিন্ন সামাজিক সংগঠনক শীতবস্ত্র বিতরণ করছে।