বুধবার, ২৩ এপ্রিল ২০২৫, ০৬:০৫ পূর্বাহ্ন
নাব্যতা সংকট নিরসনে আগামী মঙ্গলবার থেকে বরিশাল বিভাগের বিভিন্ন নৌ রুটে শুরু হচ্ছে খনন বা ড্রেজিং কার্যক্রম। আসন্নশুকনো মৌসমুকে ঘিরে শুরু হতে চলে এই কার্যক্রম চলবে আগামী ডিসেম্বর মাস পর্যন্ত। আর এইসময়ের মধ্যে বিভাগের অন্তত ৩০টি পয়েন্টে মোট প্রায় ১২ কিলোমিটার নৌপথ ড্রেজিং করাহবে। এসব পয়েন্ট থেকে ১৪ লাখ ঘনমিটার বালু অপরসারণ করা হবে। যার ব্যয় নির্ধারণ করাহয়েছে ১৪ কোটি টাকা।
বৃহস্পতিবার দুপুরে বরিশাল নদী বন্দরের সম্মেলন কক্ষে মেইন্টেনেন্সড্রেজিং বিষয়ক এক মতবিনিময় সভায় বিআইডব্লিউটিএ’র তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী মিজানুর রহমানভূঁইয়া এ তথ্য জানিয়েছেন।
এসময় তিনি বলেন, ‘ভাঙ্গন ও বর্ষার উজান থেকে নেমে আসা পানিরসাথে আমাদের দেশের নদ-নদী হয়ে প্রচুর বালু বা পলিমাটি বঙ্গোপসাগরে যায়। যদিও হিসেবঅনুযায়ী ৩০ শতাংশ বালু আমাদের অভ্যন্তরীন নদ-নদীতে থেকে যায়, বাকি ৭০ শতাংশবঙ্গোপসাগরে যায়। আর তাই ৩০ শতাংশের কারণে প্রতি বছর নৌ-রুটে রক্ষায় মেইন্টেনেন্সড্রেজিং কার্যক্রম পরিচালনা করতে হচ্ছে আমাদের। নয়তো শুকনো মৌসুমে নৌপথগুলো চলাচলেরঅনুপযোগী হয়ে যাবে। বর্তমান পরিস্থিতিতে এমনও হয় খনন করার পরপরই কয়েখ দিনের মধ্যেআবার পলি পরে নদী তার নাব্যতা হারিয়ে ফেলছে। তখন নৌপথ সচল রাখতে আবার আমাদের সেখানে ড্রেজিং করতে হবে।
তিনি আরও বলেন, ‘মংলা থেকে পাকসী পর্যন্ত একটি নৌরুট রয়েছে। যার মধ্যে হিজলা ও মেহেন্দিগঞ্জের নৌরুটটি পরেছে। এটি একটি প্রকল্পের মাধ্যমে খননকরা হয়। এর বাহিরে সম্প্রতি এক সমীক্ষায় দেখাগেছে, বরিশাল, পটুয়াখালী, বরগুনা ও ভোলানদী বন্দর এবং পাতারহাট লঞ্চঘাট সংলগ্ন এলাকায় খনন কাজের প্রয়োজন রয়েছে।
এছাড়া বরিশাল-ভোলা রুটের ভোলা খাল (কড়ইতলা নদী), লাহারহাট-ভেদুরিয়া রুট হয়ে ভোলা নদী বন্দর পর্যন্ত ইলিশা-মজুচৌধুরীর হাট (মতিরহাট) রুট, লালমোহন-নাজিরপুর-ঢাকা রুট, পটুয়াখালী-ঢাকা নৌ রুটের বগা, বাকেরগঞ্জের কবাই, কারখানা নদীর বিভিন্ন স্থানে ২২ থেকে ৩০টি স্থানে দ্রুত খননের প্রয়োজন দেখা দিয়েছে। বিশেষ করে পটুয়াখালী-ঢাকা নৌরুটে দ্রুত খনন কাজ শুরু করা না গেলে লঞ্চ চলাচল বন্ধ হয়েযাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে বলে জানিয়েছেন প্রকৌশলী মিজানুর রহমান ভূঁইয়া।
তিনি বলেন, ‘যে সব নদীর তীরে আমাদের জায়গা রয়েছে, সেখানেনদী খনন করা বালু আমরা ফেলছি। কিন্তু কিছু কিছু সময় এটা করা সম্ভব নয় না। তখন আমরা খননকৃত বালু নদীতে ফেলছি। তবে তা অবশ্যই নদীর গভীরতম এবং বহমান স্রোতধারার মাঝে।অবশ্য জলাশয় ব্যতিত নীচু জায়গা ভরাটের জন্য আমাদের কাছে জানালে আমরা তা ভরাট করেদিবো। এ ক্ষেত্রে কোন খরচের প্রয়োজন হবে না। তবে এজন্য আমাদের সক্ষমতা অনুযায়ী বলতেহবে।
মিজানুর রহমান ভূঁইয়া, বিআইডব্লিউটিএ’র বর্তমানে ৪৫টি ড্রেজার রয়েছে। বরিশাল বিভাগের খনন কাজে ৮-১০টি ড্রেজার কাজ করবে। প্রয়োজনে সরকারের পাশাপাশি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের ড্রেজারও ব্যবহার করা যাবে। আমরা এটুকু নিশ্চিত করতেপারি যে আমাদের অর্থাৎ বিআইডব্লিউটিএ’র খননের কারণে নদীর তীর ভাঙে না। আমরা ১৪ফিট ড্রাফটের জাহাজের জন্য নদী খননের কাজ করি। আর এটা খবই পরিকল্পিতভাবে নদীর নাব্যতাঠিক রাখতে করা হয়। কিন্তু অবৈধভাবে নিয়ম না মেনে বালু তোলার কারণেই নদী তীর ভাঙছে। তার পরেও অনেক সময় আমাদের খনন কাজে বাধা দেয়া হয়, মামলা দয়ো হয়।
অনুষ্ঠিত এ মতবিনিময় সভায় বরিশাল নদী বন্দর কর্মকর্তা আজমল হুদামিঠু সরকারসহ বিআইডব্লিউটিএ, বিআইডব্লিউটিসি, লঞ্চ মালিক ও সাংবাদিকবৃন্দ উপস্থিতছিলেন।