বুধবার, ০২ এপ্রিল ২০২৫, ০৯:৩৩ পূর্বাহ্ন

সর্বশেষ সংবাদ :
সভাপতি রাকিবুল ইসলাম রাকিব ,সাধারন সম্পাদক নাসির উদ্দীন নাসির কলাপাড়ায় কুইজ প্রতিযোগিতায় উত্তীর্ণদের সন্মাননা ও কৃতি শিক্ষার্থীদের সংবর্ধনা অনুষ্ঠিত তারেক রহমানের পক্ষ থেকে বরিশাল মহানগর বিএনপির ঈদ উপহার বিতরণ পর্যটক আকর্ষনে ঈদকে ঘিরে কুয়াকাটায় চলছে শেষ সময়ের প্রস্তুতি কলাপাড়ায় ঈদের চাঁদ উৎসব কলাপাড়ায় ১১ গ্রামের ১৫ হাজার মানুষ উদযাপন করছে আগাম ঈদ পটুয়াখালীতে আজ ৩৫টি গ্রামে পবিত্র ঈদুল ফিতর উদযাপন পালিত হচ্ছে কলাপাড়ায় ৩৪টি এসএসসি ব্যাচের ‘হাইস্কুলিয়ান ইফতার ২০২৫’ অনুষ্ঠিত কলাপাড়া পৌর নির্বাচন।।মেয়র পদে নির্বাচন করতে তৎপর নান্নু মুন্সী কলাপাড়ায় জামায়াতে ইসলামীর আলোচনা সভা, ইফতার ও দোয়া অনুষ্ঠিত বাকেরগঞ্জ উপজেলা ও পৌর বিএনপি এবং এর অঙ্গ সংগঠনের উদ্যোগে বেগম জিয়ার রোগমুক্তির জন্য ইফতার কলাপাড়া সাংবাদিক ক্লাবের ইফতার ও দোয়া অনুষ্ঠান কুয়াকাটায় ১০ দোকানে তালা ঝুলিয়ে দিয়েছেন বিএনপি সভাপতির দুই ছেলে বিএনপি ও অঙ্গ সংগঠনের ১১ নেতার পদ স্থগিত বাউফলে থানায় মিথ্যা অভিযোগের প্রতিবাদে সংবাদ সম্মেলন
বরিশালের নলচরে ১৩ ব্রিজের ৬টিই ব্যবহার অনুপযোগী

বরিশালের নলচরে ১৩ ব্রিজের ৬টিই ব্যবহার অনুপযোগী

Sharing is caring!

আড়িয়াল খাঁ ও কালাবদর নদী ঘিরে থাকা বরিশাল সদর উপজেলার একটি বিচ্ছিন্ন জনপদ চরমোনাই ইউনিয়নের নলচর গ্রাম। প্রায় ছয় হাজার মানুষের এ ছোট গ্রামে হেঁটে চলাচলের জন্য মাটির কাঁচা রাস্তার পাশাপাশি রয়েছে ইট দিয়ে তৈরি হেরিংবনের রাস্তা। আর সেসব সড়কগুলোকে গ্রামের মধ্য দিয়ে বয়ে চলা খালগুলোর এপারের সঙ্গে ওপারের সংযোগ ঘটিয়েছে বেশকিছু ব্রিজ ও কালভার্ট।

যদিও সড়কের যানবাহনবিহীন গ্রামটিতে পণ্যসহ যেকোনো ধরনের সামগ্রী পরিবহন করা হয় নৌকা কিংবা ইঞ্চিনচালিত ট্রলারের মাধ্যমে। সেক্ষেত্রে নদী থেকে মাছ আহরণ ও কৃষি কাজ করে বেঁচে থাকা গ্রামের মানুষগুলোর কাছে সড়ক থেকে নদী ও খালের প্রতি ভালোবাসাটা একটু বেশি। তবে হাঁটা সড়কপথের গুরুত্বটাও কম নয় তাদের কাছে।

কিন্তু সেই সড়কের যোগাযোগ ব্যবস্থাই এখন গলার কাটা হয়ে দাঁড়িয়েছে নলচরবাসীর কাছে। জানা গেছে, গোটা নলচরে বিভিন্ন খালের ওপর ১৩টি ব্রিজ রয়েছে। এর বেশিরভাগই ১৯৯৬ সালে নির্মাণ করা হয়েছে। যারমধ্যে প্রত্যেকটি ব্রিজেরই এখন বেহাল দশা।

সরেজমিনে গিয়ে দেখা গেছে, ব্রিজগুলোর একটিরও অবকাঠামো ভালো অবস্থানে নেই। যারমধ্যে পাঁচটি ব্রিজের কোনো না কোনো অংশ সংযোগ সড়ক থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে গেছে এবং দেবে গেছে। এমনও দুই/একটি ব্রিজ রয়েছে যার একটি অংশ ভেঙে খালের মধ্যে পড়ে রয়েছে। আর সেখানে গ্রামবাসী মিলে কাঠ ও বাঁশ দিয়ে পাটাতন তৈরি করে ব্রিজের সঙ্গে জুড়ে দিয়েছেন। যা দিয়ে কোনোভাবে চলছে হাঁটাচলা।

এছাড়াও নলচর প্রাথমিক বিদ্যালয় ভবনের পেছনের দিকে থাকা একটি ব্রিজ তো ভেঙেই খালে পড়ে গেছে। যার লোহার তৈরি কাঠামোগুলো খালের পাশে তুলে রেখে গ্রামবাসী বাঁশ ও সুপারি গাছ দিয়ে সাঁকো বানিয়ে নিয়েছেন হাঁটাচলার জন্য।

ব্রিজগুলো সংস্কার ও পুননির্মাণের দাবি গ্রামবাসীর দীর্ঘদিনের। কিন্তু স্থানীয় ওয়ার্ডের মেম্বর, উপজেলা চেয়ারম্যানসহ জনপ্রতিনিধিরা এ জনপদে না আসায় দাবি এখনও বাস্তবায়নের আকার ধারণ করেনি।

গ্রামের বাসিন্দা রফিকুল ইসলাম বলেন, দীর্ঘদিন সংস্কারের অভাবে গ্রামের খালগুলোর ওপরে থাকা ব্রিজগুলোর বেহাল দশা। অনেক ব্রিজের একাংশ ভেঙে রয়েছে দীর্ঘদিন ধরে। কিন্তু যথাযথ কর্তৃপক্ষ সেগুলো মেরামতের উদ্যোগ না নেওয়ায় গ্রামবাসী নিজ উদ্যোগ ভাঙা ও দুর্বল ব্রিজগুলোর ওপর দিয়ে চলাচলের ব্যবস্থা করে যাচ্ছেন। আবার ভাঙা ও জোড়াতালি দেওয়া ব্রিজ দিয়ে পার হতে গিয়ে প্রায়ই দুর্ঘটনা ঘটছে।

তিনি বলেন, শুধু ব্রিজ নয়, রাস্তাঘাটেরও খারাপ অবস্থা গ্রামজুড়ে। খালের পাশ দিয়ে বয়ে চলা রাস্তার বিভিন্ন অংশ প্রায়ই ধসে পড়েছে এবং অনেকস্থানের মাটি সরে গিয়ে রাস্তা ও কালভার্টের সংযোগ বিচ্ছিন্ন হওয়ার পথে।

গ্রামবাসীর মতে, এ মুহূর্তে খাল ও খালের তীর সংস্কার, রাস্তাঘাট, ব্রিজ-কালভার্টসহ সবকিছুরই সংস্কার প্রয়োজন। কারণ এ সড়ক ও ব্রিজগুলো দিয়ে গ্রামের খুদে শিক্ষার্থী, বৃদ্ধ ও নারীসহ গ্রামবাসীরা চলাচল করে।

গ্রামের বাসিন্দা মিজানুর রহমান জানান, নলচর গ্রামটি বরিশাল সদর উপজেলার চরমোনাই ইউনিয়নের এক নম্বর ওয়ার্ড। এ ওয়ার্ডের মেম্বর আ. রব হাওলাদার থাকেন বরিশাল শহরে। তিনি এদিকে তেমন একটা আসেন না। ফলে তাকে সমস্যার কথাও বলা যায় না। আর জাতীয় সংসদ নির্বাচনের পর স্থানীয় সংসদ সদস্য একবার এসেছিলেন। তিনি গ্রামের বেহাল দশা দেখে রাস্তাঘাট, ব্রিজ-কালভার্টগুলো প্রয়োজন অনুযায়ী মেরামত ও পুননির্মাণ করা, বিদ্যুতের লাইন এনে দেওয়া, গ্রামবাসীর বিশুদ্ধ পানির জন্য বেশকিছু চাপকল বসানোর আশ্বাস দিয়ে গেছেন। যার পরিপ্রেক্ষিতে সম্প্রতি বৈদ্যুতিক খুঁটি বসানোর কাজ শুরু হলেও বাকিগুলো নিয়ে কোনো আশার আলো দেখছেন না।

গ্রামের বাসিন্দা হাবিবুর রহমান বলেন, সংসদ সদস্য আসার পর প্রকৌশলীরা এসে ব্রিজ ও রাস্তার অবস্থা দেখে গেছেন। তারা কাজ করার কথাও বলে গেছেন। কিন্তু দীর্ঘ সময় পার হলেও এখন পর্যন্ত বাস্তবে কিছুই দেখা যাচ্ছে না।

এ বিষয়ে বরিশাল সদর উপজেলার ভাইস চেয়ারম্যান অ্যাডভোকেট মাহববুর রহমান মধু বলেন, সংসদ সদস্য কর্নেল (অব.) জাহিদ ফারুক শামীমের নির্দেশে নলচরের সমস্যাগুলো সমাধানে কাজ শুরু হয়েছে। গ্রামের একটি মসজিদ সংস্কারে অর্থ দেওয়া হয়েছে। এরইমধ্যে বিদ্যুৎ সংযোগ দেওয়ার জন্য গ্রামজুড়ে খুঁটি বসানো হয়েছে। বাকি কাজ চলছে। বিদ্যুৎ গেলে উন্নয়ন কাজ আরও বেগবান হবে। পাশাপাশি দারিদ্রতাও কমে যাবে।

তিনি বলেন, ব্রিজ ও রাস্তা সংস্কারের কাজও কিছুদিনের মধ্যে শুরু হবে। এছাড়া বিশুদ্ধ পানির সংকট নিরসনেও বেশকিছু চাপকল বসানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছেন সংসদ সদস্য নিজেই।

জাহিদ ফারুক বলেন, এলাকাটি বরিশাল থেকে বিচ্ছিন্ন। বৈদ্যুতিক খুঁটি লাগানো হয়েছে। সড়কে বাতি (সোলার বাতি) দিয়েছি। আরও দিচ্ছি। লোহার কালভার্ট ও রাস্তার কাজ করার কথা আমরা বলেছি। কালভার্টের কয়েকটি বরাদ্দও পেয়েছি। কাজ শুরু হওয়ার কথা। তবে শুরু হয়নি কেন তা দেখছি। আশা করি দুই/তিন মাসের মধ্যে একটি ভিন্ন ধরনের নলচর আপনারা দেখতে পারবেন।

নিউজটি আপনার বন্ধুদের সাথে শেয়ার করুন




© All rights reserved © crimeseen24.com-2024
Design By MrHostBD