রবিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৫, ০৭:১০ অপরাহ্ন
অনলাইন ডেক্স: লঞ্চে অগ্নিসংযোগের পরিকল্পনার অভিযোগে গ্রেপ্তার বরিশাল মহানগর ছাত্রদলের সভাপতি অ্যাডভোকেট রেজাউল করিম রনি (৩৬) যুক্তরাজ্য ও কানাডাসহ বিদেশে সহিংসতার ভিডিও পাঠাতেন বলে জানিয়েছে র্যাব।
প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে রেজাউল করিম রনি এ তথ্য স্বীকার করেছেন।
বুধবার (১৫ নভেম্বর) র্যাব-৮ সদর দপ্তরে সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য দেন র্যাবের আইন ও গণমাধ্যম শাখার পরিচালক কমান্ডার খন্দকার আল মুঈন।
এরআগে মঙ্গলবার (১৪ নভেম্বর) দিনগত মধ্যরাতে রেজাউল করিম রনি ও তার সহযোগী সরকারি সৈয়দ হাতেম কলেজ ছাত্রদলের সদস্য সচিব আহাদ হোসেন আবিরকে (২৭) গ্রেপ্তার করে র্যাব-৮।
সংবাদ সম্মেলনে র্যাব কমান্ডার খন্দকার আল মুঈন জানান, রাজনৈতিক দল সমূহের কর্মসূচিকে কেন্দ্র করে একটি মহল হামলা ও নাশকতার মাধ্যমে দেশের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি অবনতি করে জনমনে আতঙ্ক সৃষ্টির চেষ্টা করছে। এ ঘটনার পর র্যাব গোয়েন্দা নজরদারি বৃদ্ধি করে। গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে রনি ও আবিরকে বরিশাল সদর থেকে গ্রেপ্তার করা হয়।
রনির বরাতে খন্দকার মুঈন বলেন, প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে রনি জানিয়েছেন- তিনি তার দলের শীর্ষ পর্যায়ের নেতাদের নির্দেশে গত ২৮ অক্টোবর ঢাকায় এবং পরবর্তী সময়ে বরিশালের বিভিন্ন স্থানে যানবাহনে আগুন দেওয়াসহ নাশকতামূলক কর্মকাণ্ড পরিচালনা ও পরিকল্পনা করেছেন। এসব নাশকতামূলক কর্মকাণ্ডের ভিডিও সংগ্রহ করে দেশে ও দেশের বাইরে দলের শীর্ষ পর্যায়ের নেতাদের কাছে পাঠিয়েছেন তিনি।
র্যাব কমান্ডার জানান, রনির ব্যবহৃত মোবাইলফোন চেক করে যুক্তরাজ্য ও কানাডসহ দেশের বাইরের বিভিন্ন দেশে অবস্থানরত ব্যক্তিদের নাম্বার ও তার দলের শীর্ষ নেতাদের নাম্বার সেভ পাওয়া গেছে। সেই নাম্বারে যানবাহনে আগুন দেওয়াসহ নাশকতামূলক কর্মকাণ্ডের ভিডিও পাঠানোর তথ্য পাওয়া গেছে। পাশাপাশি তিনি ভিডিওগুলো সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে দিয়েছেন।
তিনটি কারণে রনি এ কাজ করতেন বলে জানান র্যাব কমান্ডার।
তিনি বলেন, একটি হলো- দলের শীর্ষ পর্যায়ের নেতাদের কাছ দৃঢ় অবস্থান তৈরি করা। অর্থাৎ মাঠে থেকে নাশকতা ও সহিংসতামূলক কর্মকাণ্ড চালাচ্ছেন, শীর্ষ নেতাদের পরিকল্পনা বাস্তবায়ন করছেন সেগুলো নিশ্চিত করা। আরেকটি হলো সাধারণ জনমনে আতঙ্ক সৃষ্টি করা। তৃতীয়ত সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভিডিও ছড়িয়ে দেশে অরাজকতা চলছে সহিসংতা-নাশকতা চলছে বা আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতির বিষয়টি বোঝানোর চেষ্টা করা।
বিষয়গুলো আইনশৃঙ্খলা বাহিনী খতিয়ে দেখছে জানিয়ে খন্দকার মুঈন বলেন, সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে সম্প্রতি তার একটি কল রেকর্ড ছড়িয়ে পড়ে। যার সূত্র ধরে গ্রেপ্তারের পর রনি জানিয়েছেন, জাতীয় সংসদ নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার পর ঢাকা-বরিশাল লঞ্চগুলোতে নাশকতা করে বড় ধরনের আলোড়ন সৃষ্টি করার উদ্দেশ্য ছিল তার।
তিনি জানান, এসব ঘটনার সঙ্গে দলের শীর্ষ পর্যায়ের যারাই জড়িত রয়েছেন বলে প্রমাণিত হবে তাদের আইনের আওতায় আনা হবে। এ বিষয়ে র্যাবসহ অন্যান্য আইনশৃঙ্খলা বাহিনীও কাজ করছে।
রনি এরআগেও অগ্নিসংযোগের কারণে কারাভোগ করেছেন বলে জানান খন্দকার মুঈন।
গ্রেপ্তার আবিরের বিষয়ে তিনি বলেন, রনির নির্দেশে বরিশাল মহানগরে বিভিন্ন স্থানে সড়ক ও মহাসড়কে গণপরিবহন, ব্যক্তিগত যানবাহন ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগ করে রাস্তা অবরোধসহ চোরাগোপ্তা হামলায় অংশ নিয়েছেন আবির।
গ্রেপ্তার দুজনের বিরুদ্ধে আগের ৫টিসহ গত ২৮ অক্টোবরের পর ঢাকা ও বরিশালের বিভিন্ন নাশকতার মামলার আসামি হিসেবে গ্রেপ্তার দেখানো হবে। তাদের হস্তান্তরের বিষয়টি প্রক্রিয়াধীন রয়েছে।