রবিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৫, ১১:০০ অপরাহ্ন

সর্বশেষ সংবাদ :
নবায়নযোগ্য জ্বালানি উৎসব ২০২৫: টেকসই ভবিষ্যতের প্রত্যয়ে আয়োজন পটুয়াখালীতে স্বতন্ত্র ইবতেদায়ী মাদ্রাসা শিক্ষক-শিক্ষিকাদের মানববন্ধন ও স্মারক লিপি প্রদান বাউফলে মায়ের সাথে খেলতে গিয়ে ছিটকে পড়ে শিশুর মৃত্যু কুয়াকাটায় চলছে ৩দিন ব্যাপী রাখাইনদের ঐতিহ্যবাহী সাংগ্রাই জলকেলি উৎসব সিদ্দিক সভাপতি, মিজান সম্পাদক। মহিপুর থানা যুবদলের দ্বি-বার্ষিক সম্মেলন অনুষ্ঠিত গৃহবধূ হত্যা মামলার আসামীদের গ্রেফতারের দাবিতে কুয়াকাটায় মানববন্ধন গৌরনদীতে চোর সন্ধেহে গনপিটুনিতে আহত যুবকের দুইদিন পর মৃত্যু কুয়াকাটায় আগুনে পোঁড়া বন পরিদর্শন কলাপাড়ায় পরীক্ষা কেন্দ্রে নকলে সহায়তার দায়ে দুই শিক্ষককে অব্যাহতি সড়ক সংস্কারের দাবীতে এলাকাবাসীর মানববন্ধন বিক্ষোভ মিছিল বাড়িতে ছাগল ঢোকাকে কেন্দ্র করে দুই প্রতিবেশীর সংঘর্ষ, আহত-৪ বরিশালে ৬ দফা দাবিতে পলিটেকনিক শিক্ষার্থীদের সড়ক অবরোধ বরিশালের জেলা সাব রেজিস্ট্রি অফিসে উৎস করের নির্ধারিত ফি কম নিয়ে দলিল রেজিষ্ট্রেশন করার প্রমান পেয়েছে দুদক কলাপাড়ায় কৃষকদের অবস্থান ধর্মঘট ও স্মারকলিপি প্রদান কলাপাড়ায় ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডে বিএনপি কার্যালয়সহ ৫টি দোকান ভস্মীভূত
৪০১ প্রতিমা নিয়ে দুর্গাপূজার বৃহৎ আয়োজনে রাজ মন্দির

৪০১ প্রতিমা নিয়ে দুর্গাপূজার বৃহৎ আয়োজনে রাজ মন্দির

Sharing is caring!

অনলাইন ডেক্স: ৪০১টি প্রতিমা নিয়ে গোটা বরিশাল বিভাগে সব থেকে বড় দুর্গাপূজার আয়োজন করা হয়েছে পিরোজপুরের মঠবাড়িয়া উপজেলার কবুতরখালীর রাজ মন্দিরে। এরই মধ্যে প্রতিমা তৈরিসহ পূজার আয়োজনের সব প্রস্তুতি সম্পন্ন করা হয়েছে।

আয়োজকরা জানান, বিগত তিন মাস ধরে ছয়জন সহযোগীকে নিয়ে ছয়জন শিল্পী রাত-দিন অক্লান্ত পরিশ্রম করে এ কাজ শেষ করেছেন। এবারের আয়োজনে বিগত বছরের সঙ্গে নতুন অনেক কিছুই যুক্ত হচ্ছে। যেমন বিগত বছরগুলোর মতো এবারও দুর্গাপূজা যে কয়দিন চলবে প্রতিদিন কয়েক হাজার লোকের জন্য প্রসাদের ব্যবস্থা রাখা হবে। দূরদূরান্ত থেকে আসা মানুষদের জন্য খাবারের পাশাপাশি থাকার ব্যবস্থাও নিশ্চিত করা হবে। অসহায়, দুস্থ নারীদের মধ্যে বস্ত্র বিতরণ এবং দরিদ্র-মেধা ও কন্যাদায়গ্রস্ত বাবা-মাকে আর্থিক সহায়তা দেওয়া হবে।

এছাড়া মন্দির এলাকায় থাকছে চিকিৎসা ক্যাম্প ও শিশুদের বুকের দুধ খাওয়ানোর জন্য ব্রেস্ট ফিডিং কর্নার। ভাষা আন্দোলন ও মুক্তিযুদ্ধের বিভিন্ন তথ্যচিত্র নিয়ে বই কর্নার বা লাইব্রেরি স্থাপনের পাশাপাশি পদ্মা সেতু স্পেনের আদলে বানানো গ্যালারিতে লোকসংস্কৃতিকে ফুটিয়ে তোলা হয়েছে।

রাজ মন্দিরের বৃহৎ পূজার উদ্যোক্তা ডা. সুদীপ কুমার হালদার বলেন, আমি ও আমার স্ত্রী ডা. স্নিগা চক্রবর্তী এ বৃহৎ পূজার আয়োজনের উদ্যোক্তা। আমার বাবা-মা, ভাই-বোন-বোন জামাই মিলেই সবকিছু ম্যানেজ করছেন।

তিনি বলেন, প্রতিবছর রাজ মন্দিরের দুর্গাপূজার আয়োজনে কয়েক লাখ লোকের সমাগম ঘটে। আর আসাদের সেবায় ডাক্তার বাড়ির সব লোকজন নিজেদের নিয়োজিত করেন। গত একমাস ধরে আমাদের ৩০ জন আত্মীয়-স্বজন পূজার আয়োজনকে কেন্দ্র করে শ্রম দিয়ে যাচ্ছেন।

সুদীপ কুমার হালদার বলেন, এবারও সার্বিক নিরাপত্তায় সিসি ক্যামেরা স্থাপনসহ নিজস্ব শতাধিক ভলানটিয়ার ও আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা কাজ করছেন। পূজা শুরুর দিন থেকে শেষ পর্যন্ত প্রতিদিন আসাদের উদ্দেশে প্রসাদের ব্যবস্থা করা হবে। রাজ মন্দিরের পাশেই নারী ও শিশুদের জন্য ব্রেস্ট ফিডিং কর্নার, নারীদের স্যানিটারি ন্যাপকিন ব্যবহারে উদ্বুদ্ধ করার লক্ষ্যে কাউন্সেলিং পয়েন্ট ও ফ্রি স্যানিটারি ন্যাপকিন বিতরণ, পূজা চলাকালে টানা চারদিন ফ্রি মেডিকেল ক্যাম্পের ব্যবস্থা করা হয়েছে।

তিনি বলেন, দুর্গাপূজার এ আয়োজনে মন্দিরে ৪০১টি প্রতিমা রয়েছে এবার। যেখানে মহাভারত, রামায়নের সমস্ত পৌরাণিক কাহিনি তুলে ধরার চেষ্টা করা হয়েছে। মন্দিরের সীমানায় প্রবেশের সঙ্গে সঙ্গে দেখা মিলবে কৃষ্ণের রাসলীলা, তার নিচেই রয়েছে লোকসংস্কৃতি, ডান পাশে থাকবে আদি শক্তি ব্রহ্মা, বিষ্ণু, শিব এদের প্রতিমা। এরপর মা কালী মন্দির, এরপরেই কৃষ্ণসহ বিভিন্ন প্রতিমা। পুরো মন্দির ঘুরে অনেক কিছুই দেখতে পাবেন এখানে। ঐতিহাসিক অনেক কিছুই রয়েছে।

সুদীপ কুমার হালদার বলেন, আমাদের এখানে মা দুর্গার প্রতিমা, মা সরস্বতীর মন্দির, মতুয়া ধাম, শ্রী শ্রী লোকনাথ ব্রক্ষ্মচারীর মন্দির, মা মনসার মন্দির, ধর্মরাজ জমরাজের প্রতিমাও রয়েছে।

রাজ মন্দিরের সভাপতি অবসরপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক বাবু শৈলেশ্বর হালদার বলেন, বিগত বছরগুলোর মতো এবারও আমরা চাই উৎসবমুখর পরিবেশে শান্তিপূর্ণভাবে পূজার আয়োজন শেষ করতে। এরই মধ্যে স্থানীয় প্রশাসন আমাদের সার্বিক সহযোগিতা করছে।

অপর আয়োজক নমিতা হালদার বলেন, তার চার সন্তানসহ স্বজনদের অংশগ্রহণে কয়েক বছর ধরে বৃহৎ আকারে রাজ মন্দিরে দুর্গাপূজার আয়োজন চলছে। আমাদের এখানে হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের পাশাপাশি বিভিন্ন ধর্মের মানুষ আসেন পূজা দেখতে।

রাজ মন্দিরের সাধারণ সম্পাদক পলাশ গাইন বলেন, এটা সত্যিই অবিশ্বাস্য প্রথমে দাদা-বৌদি (চিকিৎসক দম্পতি) মাত্র ৪১ খানা প্রতিমা দিয়ে এ কবুতরখালী গ্রামের ডাক্তার বাড়িতে দুর্গাপূজার আয়োজন শুরু করেছিল, যা ধীরে ধীরে আজ ৪০১ খানা প্রতিমায় পরিণত হয়েছে। এটি আমার কাছে সত্যিই অবিশ্বাস্য মনে হচ্ছে, আমরা খুব আনন্দিত ও উদ্বেলিত।

স্থানীয় বাসিন্দা পলাশ জানান, এ পূজাকে ঘিরে আশপাশের মানুষদের মধ্যেও বেশ উৎসাহ রয়েছে। এ মন্দিরকে ঘিরে গ্রামীণ মেলাও বসবে। আর দিনে দিনে এত ভিড় বাড়ছে যে আশপাশের সড়কগুলোতেও যানবাহন চলাচলে নিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থা নিশ্চিত করতে হয়। এদের এ আয়োজনে নতুন প্রজন্ম ধর্মের ওপর আরও শ্রদ্ধাশীল হবে বলে মনে করছি।

উল্লেখ্য, নিজের ইচ্ছে ও বাবার মানত পূরণ করার লক্ষ্যে দীর্ঘ প্রচেষ্টার পর ডা. সুদীপ কুমার হালদার কবুতরখালীর ডাক্তার বাড়ির রাজ মন্দিরে গত ২০১৬ সালে ৪১টি প্রতিমা দিয়ে প্রথম বৃহৎ আকারে দুর্গাপূজার আয়োজন করেন। এরপরের বছর একশ ও পরের বছর আড়াইশ প্রতিমা নিয়ে দুর্গাপূজার আয়োজনের আকার বড় হতে থাকে। পূজামণ্ডপ এলাকায় বাহারি রঙের আলোকসজ্জার মধ্যেই সাজানো হয়েছে প্রতিমাগুলো।

নিউজটি আপনার বন্ধুদের সাথে শেয়ার করুন




© All rights reserved © crimeseen24.com-2024
Design By MrHostBD