রবিবার, ২৬ জানুয়ারী ২০২৫, ০৮:৫৯ পূর্বাহ্ন

সর্বশেষ সংবাদ :
কলাপাড়ায় কমিউনিষ্ট পার্টির “গনতন্ত্র অভিযাত্রা” যৌতুক মামলায় গ্রেপ্তার আমেরিকান প্রবাসি জাহাঙ্গীর কবির পটুয়াখালী গলাচিপায় তিনটি মোটরসাইকেল সহ চোর আটক পটুয়াখালীতে প্রশাসনের নিরব ভূমিকা, চলছে তিন ফসলি জমির মাটি কাটার মহােৎসব বাউফলে একই দিনে সড়ক দুর্ঘটনায় ও লঞ্চের ধাক্কায় দুজন নিহত কলাপাড়ায় ৫ দিনব্যাপী ৪র্থ উপজেলা কাব ক্যাম্পুরী অনুষ্ঠিত ব্যাটারি চালিত অটোরিকশার চাপায় ১০ বছরের এক শিশু নিহতের প্রতিবাদে সড়ক অবরোধ করেছে বরিশালের সরকারি ব্রজমোহন (বিএম) কলেজের শিক্ষার্থীরা বিএনপির চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার সুস্থতা কামনা করে বরিশালে দোয়া অনুষ্ঠিত হয়েছে ২০২৫ সালের শেষে নয়তো ২০২৬ সালের প্রথম দিকে ভোট অনুষ্ঠিত হওয়ার একটি ঘোষণা দিয়েছেন “নির্বাচন কমিশনার (ইসি) আব্দুর রহমানেল মাছউদ জামায়াত আমির “আগে গণহত্যার বিচার, পরে আ.লীগের রাজনীতির অধিকারের প্রশ্ন পটুয়াখালীতে জমি দখলকে কেন্দ্র করে মাকসুদকে হত্যার চেষ্টা, থানায় মামলা দায়ের বিদ্যুৎকেন্দ্রের স্ক্র্যাপ চুরির মামলায় শ্রমিকদল সভাপতি জেল হাজতে কলাপাড়ায় গভীর রাতে বসত ঘরে প্রবেশ করে এক নারীকে হত্যা করে দুর্ধর্ষ ডাকাতি দুমকিতে দু‘পক্ষের সহিংসতায় অন্তঃসত্ত্বা নারীসহ আহত-৪ বউফলে একই পরিবারের তিনজন (মা-বাবা, ছেলে) ইয়াবাসহ গ্রেফতার
‘প্রশ্নফাঁসে জড়িত ৪৬ জন গ্রেপ্তার, নজরদারিতে ১০০ জন’

‘প্রশ্নফাঁসে জড়িত ৪৬ জন গ্রেপ্তার, নজরদারিতে ১০০ জন’

Sharing is caring!

ক্রাইমসিন২৪ ডেস্ক: পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি) বলছে, ভর্তি ও নিয়োগ পরীক্ষায় মূলত দুইভাবে জালিয়াতি হয়। একটি চক্র প্রশ্নফাঁস করে, অন্য চক্রটি পরীক্ষার দিন প্রশ্ন সংগ্রহ করে সমাধান বের করে। এরপর ডিজিটাল ডিভাইসের মাধ্যমে তা পরীক্ষার্থীদের সরবরাহ করে।

সিআইডি জানিয়েছে, নিয়োগ ও ভর্তিতে প্রশ্নফাঁস এবং ডিজিটাল জালিয়াতের দুই আলাদা চক্রকে তারা আইনের আওতায় এনেছে। সর্বশেষ ডিজিটাল ডিভাইস জালিয়াত চক্রের মূল হোতা হাফিজুর রহমান হাফিজ ও মাসুদ রহমান তাজুলসহ এখন পর্যন্ত দুটি চক্রের ৪৬ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।

বৃহস্পতিবার দুপুরে সিআইডির অর্গানাইজড ক্রাইম আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানান সংস্থাটির প্রধান অ্যাডিশনাল আইজিপি হিমায়েত হোসেন।

তিনি বলেন, ‘প্রশ্নপত্র ফাঁস নিয়ে সিআইডি দীর্ঘদিন ধরে কাজ করে আসছিল। এই কাজে আমরা অনেকটাই সফল হয়েছি। সিআইডি এই পর্যন্ত ৪৬ জনকে গ্রেপ্তার করেছে। সিআরপিসি অনুযায়ী তাদের জবানবন্দি নেওয়া হয়েছে। এত আসামি জবানবন্দি দিয়েছে তার কোনো ইতিহাস নেই।’

গত পাঁচ বছরেরও বেশি সময় ধরে প্রশ্নফাঁস দেশ তুমুল আলোচিত বিষয়। তবে গত বছর এইচএসসি পরীক্ষায় প্রশ্ন আগেভাগে আসেনি সামাজিক মাধ্যমে। এর আগে এসএসসি পরীক্ষা চলাকালে প্রচুর গ্রেপ্তার হয়।

সিআইডির বিশেষ পুলিশ সুপার মোল্লা নজরুল ইসলাম বলেন, ২০১৭ সালের ১৯ অক্টোবর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের দুইটি হলে অভিযান চালিয়ে প্রশ্নপত্র ফাঁস ও জালিয়াতি চক্রের সঙ্গে জড়িত অভিযোগে রানা ও মামুন নামের দুই শিক্ষার্থীকে গ্রেপ্তার করা হয়। এ ঘটনায় তাদের বিরুদ্ধে শাহবাগ থানায় একটি মামলা করা হয়।

গ্রেপ্তারদের  কাছ থেকে পাওয়া তথ্য থেকে পরীক্ষার হল থেকে গ্রেপ্তার করা হয় ভর্তিচ্ছু শিক্ষার্থী রাফিকে। এরপর গ্রেপ্তারকৃতদের তথ্যমতে প্রযুক্তি অনুসন্ধানের মাধ্যমে প্রশ্ন পেয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তি হওয়া সাত শিক্ষার্থীকে গ্রেপ্তার করে সিআইডি।

এই শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে জানা যায় পরীক্ষার আগেই প্রেস থেকে ফাঁস হয়ে যেত ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশ্ন। এই চক্রের মাস্টারমাইন্ড নাটোরের ক্রীড়া কর্মকর্তা রাকিবুল হাসান এছামী, প্রেস কর্মচারী খান বাহাদুর, তার আত্মীয় সাইফুল, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী বনি ও মারুফসহ ২৮ জন। তাদের গ্রেপ্তারের মধ্য দিয়ে চক্রের মূলোৎপাটন করা হয়।

সংঘবদ্ধ এই চক্রটি ২০১৫ এবং ২০১৬ সালে প্রশ্নপত্র ফাঁস করে এবং সাভারের একটি বাসায় আগের রাতে ভর্তিচ্ছু শিক্ষার্থীদের পড়াতেন বলে তিনি জানান।

মোল্লা নজরুল ইসলাম বলেন, ‘দীর্ঘ তদন্ত শেষে আমরা দেখেছি, ভর্তি কিংবা নিয়োগ পরীক্ষায় দুইভাবে জালিয়াতি হয়। একটি চক্র আগের রাতে প্রেস থেকে প্রশ্নপত্র ফাঁস করে। অন্য চক্রটি পরীক্ষা শুরুর কয়েক মিনিট আগে বিভিন্ন কেন্দ্র থেকে প্রশ্নপত্র নিয়ে দ্রুত তা সমাধান করে ডিজিটাল ডিভাইসের মাধ্যমে পরীক্ষার হলে শিক্ষার্থীদেরকে সরবরাহ করে। আগের রাতে প্রেস থেকে প্রশ্নপত্র ফাঁসকারি পুরো চক্র চিহ্নিত করা গেলেও ডিভাইস চক্রটি বাকি ছিল।’

‘প্রেস বা অন্য কোনো প্রতিষ্ঠান যারা এনালগ পদ্ধতিতে প্রশ্নপত্র ফাঁস করে তাদের আইনের আওতায় আনা ততোটাই জটিল। কিন্তু সিআইডি প্রশ্নপত্র ফাঁস রোধে বদ্ধপরিকর ছিল। ফলে টানা সাঁড়াশি অভিযানে নিয়োগ ও ভর্তি পরীক্ষায় জালিয়াতি চক্রের মাস্টার মাইন্ড বিকেএসপির সহকারী অলিপ কুমার বিশ্বাস, মূল হোতা ৩৮ তম বিসিএসের নন ক্যাডারে সুপারিশপ্রাপ্ত ইব্রাহিম মোল্ল্যা বিএডিবির সহকারী প্রশাসনিক কর্মকর্তা মোস্তফা কামাল আইয়ুব আলী বাঁধনসহ নয়জনকে গ্রেপ্তার করে সিআইডি।’

এই চক্রটি গত কয়েক বছর ধরে বিসিএস পরীক্ষাতেও জালিয়াতি করেছে বলেও জানানো হয় সংবাদ সম্মেলনে।

সিআইডির বিশেষ পুলিশ সুপার বলেন, পরীক্ষার কেন্দ্রে থেকে পরীক্ষার শুরুর কয়েক মিনিট আগে প্রশ্নপত্র সরবরাহের অভিযোগে রাজধানীর অগ্রনী স্কুলের ইংরেজির শিক্ষক গোলাম মোহাম্মদ বাবুল, অফিস সহায়ক (পিওন) আনোয়ার হোসেন মুজমদার এবং নূরুল ইসলামকে গ্রেপ্তার করা হয়।

একই অভিযোগে ধানমন্ডি গভর্নমেন্ট বয়েজ স্কুলের সমাজবিজ্ঞানের শিক্ষক হোসনে আরা বেগম এবং পিওন হাসমত আলী শিকদারকেও গ্রেপ্তার করে সিআইডি।

গ্রেপ্তারে সময়ে হাসমতের কাছ থেকে ওইদিনের বিসিএস লিখিত পরীক্ষার কয়েক কপি প্রশ্নপত্র এবং ৬০ হাজার টাকা পাওয়া যায়।  অলিপ, ইব্রাহিম, মোস্তফা, তাজুল, হাফিজ ও বাঁধন ডিভাইস জালিয়াতির এই ছয় মূলহোতার প্রত্যেকের আবার নিজস্ব সহযোগী চক্র ছিল।

সিআইডির সংবাদ সম্মেলন
সর্বশেষ অভিযানে এদের কয়েকজন সহযোগীকেই গ্রেপ্তার করা হয়। অলিপের অন্যতম সহযোগী অগ্রণী ব্যাংকের ক্যাশ অফিসার জাহাঙ্গীর আলম এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ফার্মেসি বিভাগের শিক্ষার্থী সাঈদুর রহমান সাঈদ, তাজুলের প্রধান সহযোগী ঢাকা কলেজের সাবেক শিক্ষার্থী অসীম বিশ্বাস মুম্বাই থেকে পরীক্ষায় জালিয়াতির কয়েকশত ডিভাইস আমদানি করেছে।

সিআইডির এই কর্মকর্তা  বলেন, সর্বশেষ অভিযানে জনতা ব্যাংকের জেষ্ঠ কর্মকর্তা হাফিজুর রহমান হাফিজ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ফার্মেসি বিভাগের দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী আবদুর রহমান, একই বিভাগের তৃতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী সাঈদুর রহমান সাঈদ, চতুর্থ বর্ষের মোহায়মিনুল ইসলাম গ্রিন ইউনিভার্সিটির শিক্ষার্থী রিমন হোসেন, ব্যবসায়ী মাসুদুর রহমান তাজুল, অগ্রণী ব্যাংকের ক্যাশ অফিসার জাহাঙ্গীর আলম, ঢাকা কলেজের পিওন মোশাররফ হোসেন মোশা এবং ঢাকা কলেজের সাবেক শিক্ষার্থী অসিম বিশ্বাস।

এ ঘটনায় অভিযুক্তদের ৩০ কোটি টাকার সম্পদের খোঁজ পায় সিআিইডি। এদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতেও কাজ চলছে। তাদের বিরুদ্ধে মানিলান্ডরিংয়ের মামলা করা হয়েছে।

নিউজটি আপনার বন্ধুদের সাথে শেয়ার করুন




© All rights reserved © crimeseen24.com-2024
Design By MrHostBD