মঙ্গলবার, ০৮ অক্টোবর ২০২৪, ০৬:৩০ পূর্বাহ্ন
শামীম আহমেদ(বিশেষ প্রতিবেদক): গত ১০ দিনে বরিশালের বিভিন্ন এলাকা থেকে তিনজন যুবক, একজন শ্রমিক, তিনজন শিক্ষার্থী ও দুইজন গৃহবধূর লাশ উদ্ধার করেছে পুলিশ। উদ্ধার হওয়া এসব লাশের বেশিরভাগেরই মৃত্যুর সঠিক কোনো কারণ জানা যায়নি। যে কারণে থানাগুলোতে অপমৃত্যুর মামলাই বেশি রুজু হয়েছে।
সূত্রমতে, গত ১১ জানুয়ারি ঢাকার কেরানীগঞ্জ থেকে নিখোঁজের সাতদিন পর যুবক রাসেলের (৩২) লাশ উদ্ধার করা হয় কীর্তনখোলা নদী থেকে। ১০ জানুয়ারি নলছিটিতে নিখোঁজের একদিন পর খালের পাশ থেকে হানিফ খন্দকার (৫৮) নামের এক শ্রমিকের লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। ৭ জানুয়ারি মুলাদীতে নিখোঁজের ১৬দিন পর গিয়াস উদ্দিন নামের এক যুবকের এবং ৫ জানুয়ারি উজিরপুরের জল্লা ইউনিয়নের পীরেরপাড় এলাকার ধানক্ষেত থেকে উদ্ধার করা হয় ননী বাড়ৈ (২২) নামের আরেক যুবকের লাশ।
একইদিন বরিশালের সংলগ্ন কীর্তনখোলা নদীর চরআইচা খেয়াঘাট এলাকা থেকে অজ্ঞাতপরিচয় যুবকের লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। যদিও পরবর্তীতে লাশটি নগরীর ৬নম্বর ওয়ার্ডের বাসিন্দা সরকারী টেকনিক্যাল স্কুল অ্যান্ড কলেজের শিক্ষার্থী সৈয়দ ফয়সালের (২৩) বলে শনাক্ত করেন তার স্বজনরা। এছাড়া আগৈলঝাড়ায় উদ্ধার হয় এসএসসি পরীক্ষার্থী তাজুলের ঝুলন্ত মরদেহ।
পরিবারের পক্ষ থেকে ঘটনাটিকে আত্মহত্যা হিসেবে দাবি করা হয়। ৩ জানুয়ারি আগৈলঝাড়ার রাজিহার ইউনিয়নের আহুতি বাটরা গ্রাম থেকে গৃহবধূ রীতা হালদারের (৩২) মরদেহ ঝুলন্ত অবস্থায় উদ্ধার করা হয়েছে। এছাড়া মঠবাড়িয়া থানা পুলিশ উপজেলার সাপলেজা থেকে এলিজা বেগম (৩০) নামে দুই সন্তানের জননীর মরদেহ উদ্ধার করে গত ২ জানুয়ারি। সর্বশেষ গত ১৫ জানুয়ারি সন্ধ্যায় গৌরনদী উপজেলার সুন্দরদী এলাকায় ব্যবসায়ী আক্তারুজ্জামান রিটুর কন্যা এইচএসসি পরীক্ষার্থী আয়শা আক্তারের (১৮) লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। পরিবারের দাবি আয়শা ওড়ানা দিয়ে বসত ঘরের আঁড়ার সাথে গলায় ফাঁস দেয়ার পর মুমূর্ষ অবস্থায় তাকে গৌরনদী হাসপাতালে নিয়ে আসার পর চিকিৎসকেরা তাকে মৃত বলে ঘোষণা করেন। তবে থানা পুলিশের দাবি আয়শা আক্তারের লাশটি দেখে আত্মহত্যার কোন লক্ষন পাওয়া যায়নি। তাই ময়নাতদন্তের জন্য লাশ মর্গে প্রেরণ করা হয়েছে।
এ বিষয়ে বিএম কলেজের জীববিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক রেখা সুলতানা বলেন, একের পর এক লাশ উদ্ধারের ঘটনা অত্যন্ত দুঃখজনক। প্রতিটি মৃত্যুর সঠিক কারণ খুঁজে বের করা উচিত। এরপর আগে সতর্কতামূলক ব্যবস্থা ও জনসচেতনতা বাড়ানোর মাধ্যমে মানুষকে সচেতন করা সম্ভব হলে এমন দুঃখজনক ঘটনার মাত্রা অনেকাংশে কমিয়ে আনা সম্ভব হবে। বরিশালের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার নাইমুর ইসলাম বলেন, লাশগুলো উদ্ধারের পর ঘটনার তদন্ত করে ব্যবস্থা নেওয়া হয়। তাছাড়া সব ঘটনাই কিন্তু হত্যাকান্ড নয়, এরমধ্যে দুর্ঘটনাও হয়ে থাক।