বুধবার, ১৬ এপ্রিল ২০২৫, ১১:১৯ পূর্বাহ্ন
ঝালকাঠির সুগন্ধা নদীতে অভিযান-১০ লঞ্চে অগ্নিকান্ডের ঘটনায় এখন শেরেবাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ৩৬ জন রোগি ভর্তি আছে। এরমধ্যে ৩ জন আছে আইসিউইতে। তবে চিকিৎসকরা বলছেন সব রোগিই এখন শঙ্কা মুক্ত। ঢাকায় পাঠানোর প্রয়োজন হবে না। তবে অনেকের পুরোপুরি সুস্থ হতে মাসাধিক সময় লাগতে পারে।
বরিশাল শেরেবাংলা হাসপাতালের চক্ষু ইউনিটে চিকিৎসাধনি অগ্নিদগ্ধ অভিযান লঞ্চের লস্কর ভোলার চরফ্যাশন উপজেলার মো. সেলিম মিয়া জানায়, লঞ্চের ইঞ্জিন পুরানো থাকায় ঘটনার রাতে বরিশাল ঘাট দেয়ার পর থেকেই সমস্যা দেখা দেয়। তবে মাষ্টার এবং ইঞ্জিন চালকরা সচেতন থাকলে দুর্ঘটনা এড়ানো যেত।
এদিকে হাসপাতালের স্টাফরা বলেন, তারা বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকদের নির্দেশনা অনুযায়ী রোগিদের চিকিৎসা সুবিধা দিচ্ছেন। রোগিরা বলছে তারা আগের চেয়ে অনেকটা সুস্থবোধ করছে। আর স্বজনরাও হাসপাতালের চিকিৎসায় সন্তোষ প্রকাশ করেন।
চিকিৎসাধীন রোগিদের অবস্থা নিয়ে হাসপাতালের সহকারী পরিচালক ডা. মনিরুজ্জামান বলেন, এখন সব রোগিই শঙ্কামুক্ত। তাদের চিকিৎসার জন্য বিশেষজ্ঞ টিম প্রয়োজন অনুযায়ী থাকবেন। ব্যবস্থা করেছেন প্রয়োজনী বিষয়ে। আর যে ৩ জন রোগি আইসিইউতে আছে তাদের অবস্থাও উন্নতির দিকে।
লঞ্চ দুর্ঘটনায় শেরেবাংলা মেডিকেলে ৮১ জন রোগি ভর্তি হয়েছিল। বর্তমানে ৯ জন নারী ৫ শিশু মিলিয়ে ৩৬ রোগি চিকিৎসা নিচ্ছে।
এ দিকে,অগ্নিদগ্ধদের দিনরাত সেবা দিচ্ছেন রেড ক্রিসেন্ট সোসাইটির সেচ্ছাসেবীরা। বরিশাল রেডক্রিসেন্ট ইউনিটির প্রতিষ্ঠানের প্রায় ৭০ জন সেচ্ছসেবীকর্মী দিনরাত শেবাচিম হাসপাতালে রোগীদের সেবাদান করে যাচ্ছেন। যা এখনো চলমান থাকায় বিষয়টি সর্বমহলে প্রশংসনীয়।
বরিশালের এমন ঘটনাই নয় প্রতিটি দূর্ঘটনায় এগিয়ে আসে বরিশালের এই সেচ্ছাসেবী সংগঠনটি। ঘটনার পরপরই নিজেদের শ্রম দিয়ে পুরোতালে রোগীদের সেবা করছেন তারা। গত শুক্রবার সকাল থেকে রাত অবদি বরগুনাগামী এমভি অভিযান-১০ লঞ্চের অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় প্রথমেই বরিশাল হাসপাতালে প্রায় ৮১ জন রোগী ভর্তি হয়। এই রোগী ভর্তির পর পরই চিকিৎসা দিতে হিমশিম খেতে হয়েছে শের-ই-বাংলা মেডিক্যাল কতৃপক্ষের। কারন বরিশালে বার্ণ ইউনিট খোলা হলেও সেটি বর্তমানে অকেজো হয়ে পড়ে আছে।
যে কারনে বরিশাল শেবাচিম হাসপাতালে পোড়া রোগীদের কোনো চিকিৎসা দেয়া হয় না। এর পরও অভিযান-১০ লঞ্চের ঘটনা বেশ গুরুত্বপূর্ণ হওয়ায় অনান্য বিভাগের চিকিৎসক ও নার্স সংযুক্ত করে তাদের প্রাথমিকভাবে চিকিৎসা কার্যক্রম পরিচালনা করে যে পর্যন্ত ঢাকা থেকে বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক না আসে। ঠিক এই সময় থেকেই হাসপাতাল কতৃপক্ষকে পুরোদমে সহযোগীতার হাত বাড়িয়ে দিয়েছে রেড ক্রিসেন্টে ইউনিটির এক ঝাক সেচ্ছাসেবী কর্মীরা।
বরিশাল রেডক্রিসেন্ট ইউনিটিরলং সংগঠনের উপ-যুব প্রধান ২ এর সানজিদা আক্তার ইলমা বলেন, আহতদের সেবায় তাৎক্ষনিক বরিশাল সিটি কর্পোরেশনের মেয়র ও বরিশাল রেডক্রিসেন্ট ইউনিটের ভাইস চেয়ারম্যান সেরনিয়াবাত সাদিক আব্দুল্লাহর ও বরিশাল ইউনিট এর সেক্রেটারি মো. মিজানুর রহমান মিজান এর নির্দেশে, বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে কাজ করছেন যুব রেড ক্রিসেন্ট বরিশাল ইউনিটের সেচ্ছাসেবক দল। ঘটনার পরপরই আমরা সেখানে অবস্থান নেই। কিন্তু ওই দিন সময় যতো বাড়ে রোগীর সংখ্যাও বাড়তে থাকে। ধীরে ধীরে পরিস্থিতি জটিল হতে থাকে। কিন্তু কেহই হাল ছাড়িনী। কারণ রোগী যতোই হোক হাসপাতালের চিকিৎসকদের সাথে আমাদের সমান তালে সেবা পরিচালনা করতে হবে।
তাই আমাদের সেচ্ছাসেবীর সংখ্যাও দ্রুত বাড়িয়ে নার্সদের সাথে সেবা কাজ চালিয়ে গেলাম। এমন ঘটনার মুখোমুখি ভাবে সহযোগীতায় অংশ নিতে পেরে গর্ব বোধ করি। কারন মানুষের মৃত্যুর যন্ত্রনার দৃশ্য সহ্যকরা কতো কস্টো সেটা অগ্রভাগে না থাকলে বোঝা যাবে না। গতকাল শেরেবাংলা মেডিকেল অনেক রোগীদের ড্রেসিং করানো হয়েছে এ সকল কাজে সহযোগিতা করছে করে আসছে রেড ক্রিসেন্ট। বর্তমানে বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে কাজ যুব রেড ক্রিসেন্ট বরিশাল ইউনিটের ৭০ জন সেচ্ছাসেবকরা কর্মরত রয়েছে।