বৃহস্পতিবার, ১৩ নভেম্বর ২০২৫, ০৭:৪০ অপরাহ্ন
২১ জুন অনুষ্ঠিত হওয়া ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে বরিশালের হিজলা উপজেলায় একটি ওয়ার্ডে অনিয়মের অভিযোগ এনে প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কে এম নূরুল হুদা, বাংলাদেশ নির্বাচন কমিশনের সচিব ও সহকারী সচিবসহ ১১ জনের নামে মামলার আবেদন করা হয়েছে। মামলাটি দায়ের করেছেন হিজলা উপজেলার ২ নম্বর মেমনিয়া ইউপির ৩ নম্বর ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য (মোরগ) প্রতীক প্রার্থী আ. লতিফ মৃধা। মঙ্গলবার তিনি বরিশালের যুগ্ম জেলা জজ তৃতীয় আদালতে মামলাটি দায়ের করেন। আদালতের বিচারক মো. ইফতেখারুল ইসলাম মামলাটির আদেশে পরবর্তী দিন ধার্য্যরে নির্দেশ দেন।
মামলায় অন্য বিবাদীরা হলো, বিজয়ী ইউপি সদস্য মনির হোসেন চৌকিদার, অপর প্রার্থী দুলাল হোসেন, বাংলাদেশ নির্বাচন কমিশনের সচিব ও সহকারী সচিব, বরিশাল অঞ্চলের আঞ্চলিক নির্বাচন কর্মকর্তা, সিনিয়র জেলা নির্বাচন কর্মকর্তা, হিজলা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা, রিটার্নিং অফিসার উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা, মেমনিয়া ইউপি চেয়ারম্যান ও সচিব।
মামলা পরিচালনাকারী আইনজীবী আজাদ রহমান জানান, গত ২১ জুন হিজলার ২ নম্বর মেমনিয়া ইউপির ৩ নম্বর ওয়ার্ড সদস্য পদে মনির হোসেন চৌকিদার ফুটবল প্রতিক, দুলাল হোসেন টিউবওয়েল প্রতিক ও আ. লতিফ মৃধা মোরগ প্রতীকে নির্বাচনে অংশগ্রহণ করেন।
প্রার্থীদের মধ্যে মনির হোসেন চৌকিদারের জনসমর্থন না থাকলেও অর্থশালী ও প্রভাবশালী হওয়ায় সে কৌশলে নির্বাচনে জয়ী হতে রিটার্নিং অফিসারকে বেআইনি ও অবৈধ উপায়ে ম্যানেজ করেন। এর পরিপ্রেক্ষিতে গত ১৭ জুন রিটার্নিং কর্মকর্তাকে দিয়ে আবুল ঢালীর বাড়ির মল্লিক এবতাদায়ী মাদরাসা ভোটকেন্দ্রে প্রিজাইডিং কর্মকর্তা হিসাবে উপ-সহকারী উদ্ভিদ সংরক্ষণ কর্মকর্তা সৈয়দ আল আমিনকে নিয়োগ দেন।
এতে আ. লতিফ মৃধা আপত্তি জানালে ১৯ জুন প্রিজাইডিং কর্মকর্তা হিসাবে মহিষখোলা ফাজিল মাদরাসা প্রভাষক কামাল উদ্দিনকে নিয়োগ দেওয়া হয়। কিন্তু ২০ জুন প্রিজাইডিং কর্মকর্তা হিসাবে পুনরায় উপ-সহকারী উদ্ভিদ সংরক্ষণ কর্মকর্তা সৈয়দ আল আমিনকে বহাল করা হয়।
ফলে নির্বাচনের দিন প্রিজাইডিং কর্মকর্তা পুনরায় উপ-সহকারী উদ্ভিদ সংরক্ষণ কর্মকর্তা সৈয়দ আল আমিন প্রকাশ্যে তার প্রশাসনিক ও একদলভূক্ত ব্যক্তিদের নিয়ে ফুটবল প্রতীকের মনির হোসেন চৌকিদারের পক্ষে কাজ করেন। তারা অন্যান্য প্রার্থীদের এজেন্টদের মারধর করাসহ তাদের কেন্দ্র দিয়ে তাড়িয়ে দেন।
এসময় মোরগ প্রতীকের আ. লতিফ মৃধা প্রতিবাদ করলে তাকেও মারধর করে আহত করা হয়। পরে ফুটবল প্রতীকে সীল দিয়ে ব্যালট বাক্স ভর্তি করে। আ. লতিফ আবারো প্রতিবাদ করলে দুই ঘণ্টার জন্য ভোট গ্রহণ বন্ধ রাখা হয়। কিন্তু আ. লতিফ অসুস্থ হয়ে পড়লে তাকে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়।
দুই ঘণ্টা পর পুনরায় জনশুন্য ভোট কেন্দ্রে ভোট গ্রহণ শুরু করে অন্যান্য প্রার্থীদের অনুপস্থিতিতে ফুটবল প্রতীকের প্রার্থীকে বিজয়ী ঘোষণা করা হয়।
এ ঘটনায় আ. লতিফের ছেলে সোহাগ মৃধা নির্বাচনের সকল অনিয়ম উল্লেখ করে হিজলা থানায় মামলা দায়ের করেন।
আ. লতিফের অবস্থার অবনতি হলে তাকে বরিশাল শেবাচিম হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। বর্তমানে সে শেবাচিম হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আছেন।