সোমবার, ২১ এপ্রিল ২০২৫, ০৯:৫২ পূর্বাহ্ন
শামীম আহমেদ: আর্মি জেনারেল থেকে ৯ বছরের দাপুটে স্বাধীন বাংলার শাষক ও পল্লী বন্ধু খ্যাত লাঙ্গল প্রতীকের প্রতিষ্ঠাতা হোসাইন মোহাম্মদ এরশাদের শাষন আমলে বরিশাল জেলার ৬টি আসনে ৮২ থেকে ৯০ সাল পর্যন্ত রাজত্ব কায়েম করা জাতীয় পার্টির প্রথম শ্রেনীর প্রভাবশালী নেতৃবৃন্দরা হোম আইসোলেশনে অবস্থান করছে। বর্তমান কোভিড-১৯ প্রাণঘাতী করোনা সংক্রমন ভাইরাসকালে গত ৬৬ দিনে স্থানীয় নেতৃবৃন্দ নেতা কর্মীদের সাথে নিয়ে জাতীয় পার্টির হাল ধরা নেতা ইকবাল হোসেন তাপস দু’একবার নগরের কয়েকটি ওয়ার্ড ও সদর উপজেলার কয়েকটি ইউনয়নের বেশকিছু মানুষের মাঝে ত্রান সহযোগীতার পর থেকে হোম কোয়ারেন্টিনে চলে যায়।
এর পর থেকে জাতীয় পার্টির নেতৃবৃন্দ ও দলীয় কর্মীরা কে কোথায় আছে তা কেহ বলতে পারছে না নগরের সাধারন অসহায় মানুষ । মাঠ প্রর্যায়ের দিন আনে দিন খায় সেই অসহায় দলীয় কর্মী ও সাধারন মানুষগুলো এখন মনে করছেন জাপার নেতা-কর্মীরা হয়ত বরিশাল নগরে করোনা সংক্রমন বৃদ্ধির সাথে সাথে আগে ভাগে তারা কোয়ারেন্টিনে বা আইসোলেশনে চলে যাবার কারনে এই দুর সময়ে তাদের আর দেখা পাওয়া যাচ্ছে না।
বরিশালের সরেজমিনে জাপা দলীয় বিভিন্ন মাঠ প্রর্যায়ের কর্মীদের সাথে আলাপ করে জানা যায় জাতীয় পার্টির প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যান সাবেক রাস্ট্রপতি হোসাইন মোহাম্মদ এরশাদ জিবিত থাকাকালীন বরিশালের এক সময়ের দাপুটে দলটি বরিশাল মহানগর ও জেলার স্থানীয় নেতৃবৃন্দের দলীয় কোন্দলের মুখে পড়ে এক রকম হযবরল অবস্থার মধ্যে দলের কার্যক্রম চলছে।
অপরদিকে বরিশাল মহানগর ও জেলার নেতাদের নেতৃত্ব নিয়ে দলের অভ্যন্তরীন কোন্দলের কারনে কয়েকবার নেতৃত্বের হাত বদল হলেও দলের ভিতর ও সাংগঠনিক কোন উন্নয়ন হয়নি।
এছাড়া মহানগর ও জেলার নেতা-কর্মীরা এক অপরের চেহারা নাদেখে চলতে পারলে খুবই ভাল মনে করেন। এর পরেও সামনা সামনি হলেও তাদের মধ্যে তেমন একটা কথা-বার্তা হয় না।
এরসাদের শাষন আমলে বরিশালে নেতাদের যে রকম ছড়াছড়ি ছিল এখন আর আগের মত সেই ধরনের মাঠ কাপানো কোন নেতাই নেই। আবার যা আছে দলের ভিতর তারা কে কাকে লাথি মারবে সেই চিন্তায় বেশি সময় নষ্ট করেন তারা।
এদিকে বরিশাল জেলা জাতীয় পার্টি একমাত্র পুরানো দলের ত্যাগি বর্তমান জেলা আহবায়ক ও পার্টির কেন্দ্রীয় উপদেষ্টা অধ্যাপক মহসিন-উল-ইসলাম হাবুল ও তার দীর্ঘদিনের একনিষ্ট কর্মী সমর্থকদের কাধে ভর করে দলটি পরিচালিত হচ্ছে।
অপরদিকে আরেক ত্যাগি নেতা এ্যাড. মর্তুজা আবেদিন তিনি মহা নগরের সভাপতি দায়ীত্ব পালন করেন। বর্তমান চেয়ারম্যান দলের দায়ীত্ব গ্রহন করার পর থেকে বরিশাল জেলা ও মহানগর কমিটি ভেঙ্গে দেওয়া হয়।
এর পূর্বে জেলা ও মহানগরের কমিটি থাকাকালীন সময়ে দলের বর্ষপূর্তি কোন সময়ে এক হয়ে তারা পালন করেন নাই। করেছেন যে যারমত করে যেখানে সেখানে দাড়িয়ে।
এছাড়া বরিশাল জেলা জাতীয় পার্টিতে তিনটি গ্র“পে বিভক্ত হয়ে রয়েছে। জেলা দেখছেন অধ্যাপক মহসিন-উল ইসলাম হাবুল, মহানগর রয়েছে মর্তুজা আবেদিনের দখলে ও সদর উপজেলার নেতৃত্ব দিচ্ছেন বসির আহমেদ ঝনু।
এই তিনটি গ্র“পের মধ্যে অধ্যাপক হাবুল ও মর্তুজা আবেদিন ছাড়া এই নগরে অন্য কোন নেতাকে নগরবাশি ঠিকমত তাদের চেনেন না।
তবে বরিশাল সিটি ও জাতীয় নির্বাচনকে সামনে রেখে বরিশালের এক সময়ের ছাত্র সমাজ করা সংগঠনের নেতা ও পরবর্তী সময়ের বিশিষ্ট ব্যবসায়ী শিল্পপতি ইকবাল হোসেন তাপসকে বরিশাল সিটি নির্বাচনে মেয়র প্রার্থী ও পরবর্তীতে জাতীয় নির্বাচনে প্রার্থী করার পর থেকে অনেকদিন পর বরিশালে জাতীয় পার্টি কর্মীদের মাঝে এক রকম চাঞ্চল্য ফিরে আসে। নির্বাচন দুটি শেষ হয়ে যাবার পরপরই পুনরায় জাতীয় পার্টি কার্যক্রম এক রকম চার দেয়ালের মাঝে সিমাবদ্ধতার ভিতরে আটকে পরে।
এদিকে কেন্দ্রীয় জাপায় পার্টির চেয়ারম্যান পরিবর্তনের পর ইকবাল হোসেন তাপসকে কেন্দ্রীয় যুগ্ম মহাসচিব করার পর কয়েকবার বরিশালে এসে তিনি দলীয় নেতা-কর্মীদের নিয়ে সভা করলেও আগের মত দলের গতি ফিরিয়ে আনতে এখনো পারেননি।
এতসবের পর বরিশাল বিভাগের জাতীয় পার্টির গতি ফিরিয়ে আনার জন্য জাতীয় পার্টির সংসদ সদস্য ও বিশিষ্ট ব্যবসায়ী গোলাম কিবরিয়া টিপুকে দায়ীত্ব দেওয়া হলে তিনি এখন পর্যন্ত দলের নেতা-কর্মীদের ভিতরে জমে থাকা অন্ধকার দুর করে আলোর ঝলকানী আনতে পারেননি।
করোনাকালে ত্রান উপহার ও দলের অভ্যন্তরীন বিষয়ে বরিশাল জেলা জাপা আহবায়ক ও কেন্দ্রীয় উপদেষ্টা অধ্যাপক মহসিন-উল-ইসলাম হাবুল বলেন আমাদের দলের সাংগঠনিক কার্যক্রম বৃদ্ধির করার জন্য নতুন করে বিভিন্ন ওয়ার্ডে ও সদর উপজেলা ইউনিয়ন প্রর্যায়ে কিছু কিছু কমিটি করা হয়েছে। এছাড়া জেলা ও মহানগরের কমিটি কাজ শেষ আগেই কার হত বর্তমান করোনা সংক্রমনের কারনে কমিটি গঠন করার কাজ স্থগিত রাখা হয়েছে।
তিনি বলেন এই প্রাণঘাতী করোনার সময়ে বরিশালে জাতীয় পার্টির কোন নেতাদের দেখা যায়নি বলে যে অভিযোগ আনা হয়েছে তা সঠিন না। আমরা আমাদের যুগ্ম মহাসচিব ইকবাল হোসেন তাপসকে সাথে নিয়ে মহানগরের ত্রিশটি ওয়ার্ড ও বরিশাল সদর উপজেলার দশটি ইউনিয়নে ৫কেজি চাল,১ লিটার তেল,৩ কেজি ডাল,আলু, সেমাই সহ ঈদ সামগ্রী দিয়ে সহযোগীতা করেছি।
এর মধ্যে নগরের দেড় হাজার পরিবার ও সদর উপজেলার পাঁচশত পরিবারের মাঝে ত্রান দেওয়া হয়েছে এতে যাদি কোন মিডিয়া বন্ধুদের সন্দ্রেহ থাকে তাহলে আমি লিখিত ব্যাক্তিদের নামের তালিকা দিতে পারি।
এব্যাপারে কেন্দ্রীয় যুগ্ম মহাসচিব ও বরিশাল সিটি এবং জাতীয় নির্বাচনে বরিশাল সদর আসনের প্রার্থী ইকবাল হোসেন তাপস বলেন, আমি জাপা চেয়ারম্যান জিএম কাদের সাহেবের নির্দেশে আমার ব্যাক্তিগত তহবিল থেকে প্রায় নগরী ও সদর উপজেলার দু’ হাজার পরিবারের মাঝে ত্রান উপহার দিয়েছি যা অনেক পত্র পত্রিকায় সংবাদ প্রাশিত হয়েছে।
এছাড়া তিনি আরো বলেন এই করোনাকালে এককভাবে কিছুই করার নেই এখানে নেই কোন সমন্বয়। এখানে সুযোগটা সিমিত কোথায় রোগী নিবেন। হাসপাতাল বলেন বা ক্লিনিক বলেন কোথাও কি ঠিক মত চিকিৎসা হচ্ছে না।
সে কারনেই আমরা পুনরায় সাধারন মানুষকে সুস্থ ও নিরাপদ থাকার জন্য পুনরায় সচেতনতামূলক কর্মকান্ড জেলা ও মহানগরের পক্ষ থেকে একর্মসূচি চালু করতে যাচ্ছি।