বৃহস্পতিবার, ২১ নভেম্বর ২০২৪, ০৬:০১ অপরাহ্ন
ধীরে ধীরে বাড়ছে শীতের প্রকোপ। অবস্থাসম্পন্ন মানুষরা নিজেদের প্রয়োজনীয় গরম পোশাকের ব্যবস্থা করতে পারলেও নিঃস্ব ও অসহায়দের শীতে কাবু হয়েই থাকতে হয়। তাদের অনেকেই মানুষের কাছে হাত পাততেও দ্বিধায় ভোগেন।
ওই মানুষগুলোর পাশে দাঁড়িয়ে একটু উষ্ণতার পরশ ছড়িয়ে দিতে কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের (কুবি) কিছু উদ্যমী শিক্ষার্থী শুরু করেছেন ‘ইচ্ছের দেয়াল’ কার্যক্রম। দেয়ালটিতে যাদের ইচ্ছে, তাদের অপ্রয়োজনীয় কাপড়গুলো রেখে যেতে পারবেন এবং যাদের প্রয়োজন, তারা ইচ্ছে করলেই নিয়ে যেতে পারবেন।
কুবি ক্যাম্পাস সংলগ্ন আনসার ক্যাম্প মোড়ের দেয়ালে দৃষ্টিনন্দন চিত্রাঙ্কন করে চলছে এ মানবিক কার্যক্রম। দেয়ালিকায় আঁকা প্রতীকী ছবিতে দেখা যাচ্ছে- একটি বাচ্চা মেয়ে শীতে কষ্ট করছে। কেউ তার হাতে কাপড় তুলে দেয়ায় মুখে হাসি ফুটে উঠেছে। সমাজের অসংখ্য সুবিধাবঞ্চিত মানুষ, বিশেষত যাদের শীতে অনেক দুর্ভোগ পোহাতে হয়, তাদের প্রতীকায়িত করা হয়েছে।
সংশ্লিষ্টরা জানান, ইচ্ছের দেয়াল মূলত ‘মানবতার দেয়াল’ থেকেই অনুপ্রাণিত। কিন্তু তারা ভিন্ন কিছু যুক্ত করেছেন। শীতে কষ্ট পাওয়ার চিত্রের পাশাপাশি মহান বিজয়ের মাসে স্মৃতিসৌধ সংবলিত বিজয়ের চিত্র তুলে ধরেছেন তারা, যেন পথচারীদের আকৃষ্ট করতে পারে।
প্রধান উদ্যোক্তা কুবি সায়েন্স ক্লাবের সভাপতি ও গণিত বিভাগের স্নাতকোত্তরের ছাত্র মো. ওবায়দুল হক অবি বলেন, ‘ভালো লাগার বিষয় হলো, আমরা যে কাপড়গুলো বিকালে ঝুলিয়ে রেখে এসেছিলাম, সেগুলো সন্ধ্যা হতে না হতেই যাদের প্রয়োজন, তারা এসে নিয়ে গেছেন।’
‘তাই সবার প্রতি আহ্বান থাকবে, ইচ্ছের দেয়ালে যেন সবাই কিছু না কিছু অবদান রাখেন। সবার এই ছোট্ট কাজই অনেকের কাছে উষ্ণতার পরশ হয়ে উঠবে।’
‘ইচ্ছের দেয়াল’ ইতিমধ্যে ক্যাম্পাস ও আশপাশের লোকজনের কাছে বেশ প্রশংসিত হয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা বিভাগের শিক্ষার্থী তাসমিনা নাজনীন বলেন, ‘ইচ্ছের দেয়াল’র মাধ্যমে অসহায় শীতার্ত মানুষকে সাহায্য করা আমাদের জন্য খুব সহজতর হয়েছে।’
চিত্রাঙ্কনসহ দেয়ালটির বিভিন্ন বিষয়ে স্বতঃস্ফূর্ত সহায়তা দেয়া টিনা, মাহবুব, অপর্ণা, সুপ্রিয়, রাহাত ও ফাহিম বলেন, অপ্রয়োজনীয় কাপড় যে কেউ ঝুলিয়ে আসতে পারেন অথবা জানালে তারাই সংগ্রহ করে নেবেন। সব মানুষ নিজ নিজ অবস্থান থেকে উষ্ণতার ভাগাভাগিতে অবদান রাখবেন- এমনটাই প্রত্যাশা করেন তারা।