সোমবার, ০১ ডিসেম্বর ২০২৫, ০৭:৪৫ পূর্বাহ্ন

সর্বশেষ সংবাদ :
বাউফলে ৯ম পে-স্কেল বাস্তবায়নের দাবিতে কর্মচারীদের আলোচনা সভা মনোনয়ন বঞ্চিতদের অপপ্রচারের প্রতিবাদে দুমকি উপজেলা বিএনপি নেতাদের সংবাদ সম্মেলন কলাপাড়ায় ব্যবসায়ীদের সাথে বিএনপি নেতৃবৃন্দের সৌজন্য সাক্ষাৎ এবং আমন্ত্রণ পত্র বিতরণ বেগম জিয়ার সুস্থতার জন্য দোয়ার আয়োজন বরিশালে স্কুল ফিডিং প্রোগ্রাম : উন্নত ব্যবস্থায় বেড়েছে শিক্ষার্থীদের উপস্থিতি ভূমি সেবা সহজীকরনে সাফল্য। কলাপাড়ায় চান্দিনাভিটি নবায়নে একদিনে ৬ লাখ টাকা আদায় রজপাড়া দিন-এ-এলাহী মাদ্রাসার নিয়োগ পরীক্ষা এবং ফলাফল অনুষ্ঠিত ক্ষমতায় আসলে ফ্যামিলি কার্ড,বেকার ভাতা ও নারী উন্নয়নে কাজ করবে বিএনপি …..এবিএম মোশাররফ হোসেন প্রেসক্লাব পটুয়াখালী”‘র আহ্বায়ক নাজিম উদ্দিন সদস্য সচিব আল-আমিন ‎বরিশালে ইএসডিও এর আয়োজনে চাকুরী মেলা অনুষ্ঠিত বরিশালে স্কুল ফিডিং প্রোগ্রাম : উন্নত ব্যবস্থায় বেড়েছে শিক্ষার্থীদের উপস্থিতি কলাপাড়ায় প্রাণিসম্পদ প্রদর্শনী, আলোচনা সভা ও পুরস্কার বিতরণ অনুষ্ঠিত ইসলামীক রিচার্স সেন্টার বাস্তবায়নের দাবিতে মুসলিম ইনস্টিটিউটের মানববন্ধন সততা, আচরণ ও প্রচারণায় বাবুগঞ্জ–মুলাদীবাসীর আস্থায় জহির উদ্দিন বাবর কলাপাড়ায় থেমে থাকা ট্রলিতে মোটরসাইকেলের ধাক্কা।বিকাশ কর্মী নি/হ/ত
মোঘল আমলের স্থাপত্য বরিশালের মিয়া বাড়ি জামে মসজিদ

মোঘল আমলের স্থাপত্য বরিশালের মিয়া বাড়ি জামে মসজিদ

Sharing is caring!

মোঘল শাসনামলের ঐতিহ্যের ধারক বরিশালের মিয়াবাড়ি জামে মসজিদ ।

বরিশালের ইতিহাস ও ঐতিহ্যের অন্যতম ধারক মোগল শাসনামলে নির্মিত মিয়া বাড়ি জামে মসজিদ। সদর উপজেলার রায়পাশা-কড়াপুর ইউনিয়নের কড়াপুর গ্রামে মোগল সম্রাট বাবরের সময়কালে মসজিদটি নির্মাণ করা হয়। স্থানীয় অনেকের মতে তারও আগে এ মসজিদ নির্মাণ করা হয়েছে। নির্মাণশৈলী ও এর উপকরণের কারণেই এমন ধারণা স্থানীয়দের।

জানা যায়, মাহমুদ হায়াৎ মিয়া ও জাহিদ হায়াৎ মিয়া নামের দুই ভাই ইসলাম প্রচারের জন্য পারস্য থেকে এ দেশে আসেন। তারাই বরিশাল শহর থেকে ১০ কিলোমিটার দূরে ৬৬ একর জমির উপর দৃষ্টিনন্দন এ মসজিদটি নির্মাণ করেন। কথিত আছে তাজমহল নির্মাণকারী কারিগরদের দিয়ে মসজিদটি নির্মাণ করা হয়েছে।

প্রতিষ্ঠাতারা প্রায় দুই একর জমির মাটি কেটে চাড়া ইট তৈরি করে মসজিদটি নির্মাণ করলেও নিজেদের বসবাসের জন্য করেননি পাকা কোনো ইমারত। শুধুমাত্র বাড়ির মহিলাদের পর্দার কথা চিন্তা করে একই ইট দিয়ে পুরু দেওয়াল নির্মাণ করেছেন। অনেকে বলেন, এটি ব্রিটিশ আমলের সূচনালগ্নে নির্মিত একটি মসজিদ। এ মসজিদের প্রতিষ্ঠাতা মাহমুদ হায়াৎ ইংরেজ শাসনের বিরুদ্ধে বিদ্রোহ করার কারণে প্রিন্স অফ ওয়েলস দ্বীপে নির্বাসিত হন এবং তার বুজুর্গ উমেদপুরের জমিদারিও কেড়ে নেওয়া হয়। দীর্ঘ ষোলো বছর পর দেশে ফিরে তিনি দুটি দীঘি এবং দোতলা এ মসজিদটি নির্মাণ করেন। স্থাপত্যরীতিতে এতে পুরান ঢাকায় অবস্থিত শায়েস্তা খান নির্মিত কারতলব খান মসজিদের অনুকরণ দেখা যায়। মসজিদের আশপাশে ছোট বড় আরও ২৩টি পুকুর রয়েছে। ৪০ ফুট চওড়া ও ৭০ ফুট লম্বা মসজিদটি নির্মাণে চুন, সুরকি, মাসকালাই ও চিটাগুড় পচিয়ে নির্মাণসামগ্রী তৈরি করা হয়। কোনো রংয়ের ব্যবহার ছাড়াই লাল রংয়ের এ মসজিদটিতে ছোট বড় তিনটি গম্ভুজ ও ২০টি মিনার রয়েছে। ভেতরে ও বাইরে দৃষ্টিনন্দন কারুকার্য খচিত। এর অন্যতম বৈশিষ্ট্য ছাদ নির্মাণে কোনো রডের ব্যবহার করা হয়নি। ইট ও সুরকির ছাদটির পুরত্ব প্রায় এক ফুট। আর নিচ তলার দেওয়াল ৪০ ইঞ্চি ও দোতলার দেওয়াল ৩০ ইঞ্চি পুরো। দ্বিতল মসজিদটির নিচতলায় ৯টি বিভিন্ন আকৃতির কক্ষ রয়েছে। যা এক সময় স্কুল ও পরবর্তীতে মাদ্রাসা হিসেবে ব্যবহৃত হতো। নামাজের ব্যবস্থা রাখা হয় শুধুমাত্র দোতলায়। আর সেখানে উঠতে সামনে থেকে সরাসরি চওড়া একটি সিঁড়ি নির্মাণ করা হয়। একই আকৃতির দুটি জানালা ও তিনটি দরজাবিশিষ্ট মসজিদটির ভেতরে তিন কাতারসহ ছাদের অংশে ৫ কাতার মিলিয়ে প্রায় তিনশত মুসলিস্নর নামাজের ব্যবস্থা রয়েছে। আর দোতলায় উঠার সিঁড়ির নিচেই রয়েছে মসজিদের প্রতিষ্ঠাতা দুই ভাই মাহমুদ হায়াৎ মিয়া ও জাহিদ হায়াৎ মিয়ার সমাধি।

বংশপরম্পরায় মসজিদটি প্রতিষ্ঠাতাদের উত্তরাধিকাররা দেখভাল করলেও ১৯৮১ সালের পর এরশাদ সরকারের শাসনামলে এটি প্রত্নতত্ত্ব বিভাগের অন্তর্ভুক্ত হয়। পরবর্তীতে আদালতে মামলা করে আবারো পরিচালনার ভার নেন মিয়া বংশের উত্তরাধিকাররা।

বর্তমানে মসজিদের পরিচালনাকারীদের মধ্যে অন্যতম সদস্য প্রতিষ্ঠাতাদের ১৩তম বংশধর মিজানুর রহমান মিয়া জানান, প্রত্নতত্ত্ব বিভাগ মসজিদ পরিচালনা ও রক্ষণাবেক্ষণের দায়িত্ব নেওয়ার পর এটি তার নির্মাণশৈলীর ঐতিহ্য হারাতে বসে। তারা সংস্কারের নামে মসজিদটির কারুকার্যের মধ্যে থাকা বিশেষ পাথরগুলো অপসারণসহ নিম্নমানের নির্মাণসামগ্রী ব্যবহার করে। তাই মামলার মাধ্যমে আবারো রক্ষণাবেক্ষণের দায়িত্ব পান মিয়া বংশ। পুনরায় দায়িত্ব পেয়ে তার ভাই আমিনুর রহমান ফিরোজ প্রায় ২৯ লাখ টাকা ব্যয়ে মসজিদটির সংস্কার কাজ করেন। সংস্কারে সময় লাগে ৪ বছর। কেননা আগের মতোই বিশেষ উপায়ে চুন, সুরকি, চিটাগুড় ও মাসকালাই ডাল পচিয়ে এর পুনসংস্কার সামগ্রী তৈরি করা হয়।

নিউজটি আপনার বন্ধুদের সাথে শেয়ার করুন




© All rights reserved © crimeseen24.com-2024
Design By MrHostBD