শনিবার, ১৭ মে ২০২৫, ০৮:২৭ অপরাহ্ন
অনলাইন ডেক্স :‘পুলিশের গুলিতে নিহত অবসরপ্রাপ্ত মেজর সিনহা সবসময় পরবর্তী প্রজন্মের কথা ভাবতো; দেশকে ভালোবাসতো। সে কখনো নিজের পরিচয় ব্যবহার করত না। মানুষকে মানবিক গুনাবলী দিয়ে বিচার করত। তাই তার প্রতিটি কাজেই আমার সমর্থন ছিল। ভিতরে ভিতরে আমি গর্ববোধ করতাম। সে প্রচুর ভালো কাজ করতে চাইত। তাই আমি কখনোই বাঁধা দেই নি।’
আজ সোমবার সকালে নিহত সিনহা রাশেদের পরিবারের সাথে দেখা করতে রাজধানীর উত্তরার বাসায় যান বেশ কয়েকজন সাবেক সেনা কর্মকর্তা। সে সময় নিহত সিনহার মা সংবাদ সম্মেলনে কান্নাজড়িত কণ্ঠে এসব কথা বলেন। এসময় আসামিদের দৃষ্টান্তমূলক বিচার চান তিনি। বলেন, এটাই যেন হয় শেষ বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ড।
তিনি আরও বলেন, সিনহা সবসময় সারপ্রাইজ দিতে চাইতো। ক্রিয়েটিভ কাজ করা তার নেশা ছিল। মূলত মনের খোরাক মেটাতেই সিনহা এসব কাজ করত। তাই আমি শতভাগ আস্থা নিয়েই বসে থাকতাম যে, আমার ছেলে কাজ করতেছে।
কান্নাজড়িত কণ্ঠে সিনহার মা বলেন, ‘আমার একটা ভয় ছিল, সিনহা খুব দ্রুতবেগে গাড়ি চালাত। কখনো দুর্ঘটনা ঘটে কী না- এই ভয় আমি সবসময় পেতাম।’
ঘটনার দিন রাতের বর্ণনা দিয়ে সিনহার মা বলেন, রাত ১১ টার দিকে আমি সিনহাকে ফোন দিয়েছি, কিন্তু সে ফোন ধরে নি। মনে করেছি হয়ত কাজে ব্যস্ত। কিন্তু পরে আর ফোনও দেয়নি। ১২ টার দিকে টেকনাফ থানার ওসি আমাকে ফোন দিয়ে সিনহা সম্পর্কে বিভিন্ন বিষয় জানতে চায়।
তখন আমার একটু খটকা লাগে যে, সিনহা তো দ্রুত গাড়ি চালায় কোন কিছু হলো কী না। তখন আমি সিনহার সাথে কথা বলতে চাইলে সে বলে, ‘ও একটু দূরে আছে, তবে কথা বলা যাবে। তারপর ফোন রেখে দেয়। আর ফোন ধরে না।’ আবার সিনহার সাথে যারা কাজ করে তাদের ফোন নম্বরও আমার কাছে ছিল না। পরে আমি মেজর মহসিনকে ফোন দিয়ে বিস্তারিত বলি। পরদিন সকালে ১০ টার পর উত্তরা পশ্চিম থানার পুলিশ আসে আমার বাসায়। তারা আমার সাথে বিভিন্ন বিষয় নিয়ে কথা বলে। আমিও তাদের সাথে কথা বলি। পরে জানতে চায়, ‘সিনহা কোন রাজনীতির সাথে জড়িত ছিল কী না?’ আমি না বললে তারা চলে যায়।’ এরপরই তার মৃত্যুর খবর পাই।
তবে বিচারপ্রক্রিয়া নিয়ে সন্তুষ্ট সিনহার মা ও তার পরিবার।
সংবাদ সম্মেলনে রাওয়া প্রেসিডেন্ট নুরুল আফসার কথা বলেন। তিনি বলেন, মেজর সিনহা কেমন ছিলেন তার রেকর্ড সেনাবাহিনীতে আছে। এই হত্যার বিচার পেলে সিনহার পরিবার শান্তি পাবে। মেজর সিনহার ঘটনাই যেনো শেষ বিচারবহির্ভুত হত্যাকান্ড হয় সে দাবিও জানান তিনি।
রাওয়া প্রেসিডেন্ট বলেন, সিনহাকে ঠান্ডা মাথায় হত্যা হয়েছে। সঠিকভাবে তদন্ত করে দ্রুত বিচারের উদাহরণ সৃষ্টি করতে বলেন তিনি। এসময় সেনা কর্মকর্তারা পুলিশ সুপারকে প্রত্যাহারের দাবি জানান।