শনিবার, ২৩ অগাস্ট ২০২৫, ১১:০৯ অপরাহ্ন

সর্বশেষ সংবাদ :
শ্রমিক দলের প্রধান সমন্নয়ক শিমুল বিশ্বাসের সুস্থতা কামনায় পটুয়াখালী শ্রমিক দলের দোয়া ও মিলাদ মাহফিল কলাপাড়ায় যৌতুক, বাল্যবিবাহ ও আত্মহত্যা  প্রতিরোধে সচেতনতামুলক সভা অনুষ্ঠিত শিমুল বিশ্বাসের সুস্থতার জন্য দোয়া অনুষ্ঠান কলােপাড়ায় মৌসুমী বায়ুর প্রভাবে বৃষ্টিপাত, জনজীবনে স্থবিরতা কুয়াকাটা সৈকতে আবারও ভেসে এসেছে ৩ ফুট দৈর্ঘ্যের মৃত ডলফিন সাগরে ৫ দিন ভেসে থেকে জীবিত উদ্ধার জেলে মোরশেদ ভ‚মিদস্যু, মামলাবাজ ও প্রতারক চক্রের হয়রানী থেকে প্রতিকার পেতে সাংবাদিক সম্মেলন কলাপাড়ায় বর্নাঢ্য আয়োজনে স্বেচ্ছাসেবক দলের প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উদযাপিত কলাপাড়ায় ভাগনি জামাতাকে কুপিয়ে হত্যা চেষ্টার অভিযোগ কুয়াকাটা সৈকতে ভেসে এলো মৃত ইরাবতী ডলফিন অধিকাংশ চালকই চলন্ত বাসে ধূমপান করে থাকে, আপনি তা জানেন না।” ….চালক, ঢাকাগামী ইউনিক পরিবহন বঙ্গোপসাগরে নিম্নচাপ, পায়রা বন্দরে ০৩ নম্বর সতর্কতা সংকেত বরিশাল রিপোর্টার্স ইউনিটি কার্যালয়ের পেছনে বৃক্ষরোপণ করা হয় বরগুনার পাথরঘাটায় লজিক প্রকল্পের যুব সমন্বয় সভা অনুষ্ঠিত কলাপাড়ায় গ্রীষ্মকালীল জাতীয় ক্রীড়া প্রতিযোগিতার প্রস্তুতি সভা
শীতকালের অজু ও গোসলে বিশেষ সতর্কতা

শীতকালের অজু ও গোসলে বিশেষ সতর্কতা

Sharing is caring!

পবিত্রতা অর্জনের জন্য নারী-পুরুষ উভয়কেই অজু ও গোসল করতে হয়। কিন্তু আমরা অনেকেই জানি না যে কোন ভুলগুলো হলে অজু ও গোসল হবে না।

অজুর ক্ষেত্রে অজুর অঙ্গগুলো এবং ফরজ গোসলের ক্ষেত্রে পুরো শরীর পরিপূর্ণভাবে পানি দ্বারা ভেজানো আবশ্যক। অন্যথায় পবিত্রতা অর্জিত হবে না।বিশেষ করে অজুর কোনো অঙ্গ সামান্যও শুকনা থেকে গেলে তার জন্য হাদিসে জাহান্নামের শাস্তির কথা বর্ণিত হয়েছে। আবদুল্লাহ ইবনে আমর (রা.) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, কোনো এক সফরে আল্লাহর রাসুল (সা.) আমাদের পেছনে পড়ে গেলেন। পরে তিনি আমাদের কাছে পৌঁছলেন। এদিকে আমরা (আসরের) নামাজ আদায় করতে বিলম্ব করে ফেলেছিলাম। তাই (তা আদায় করার জন্য) আমরা অজু করা শুরু করলাম। এ সময় আমরা আমাদের পা কোনোমতে পানি দ্বারা ভিজিয়ে নিচ্ছিলাম। তখন তিনি উচ্চৈঃস্বরে বলেন, ‘সর্বনাশ! গোড়ালির নিম্নাংশগুলোর জন্য জাহান্নামের আগুন রয়েছে।’ তিনি দুই বা তিনবার এ কথা বললেন। (বুখারি, হাদিস : ৯৬, মুসলিম, হাদিস : ২৪১)

অনেক সময় তাড়াহুড়া করে অজু করার কারণে মানুষের পায়ের গোড়ালি শুকনা থেকে যায়। বিশেষ করে শীতকালে এ ধরনের কাজ বেশি হয়ে যায়। তাই আমাদের উচিত অজু করার ক্ষেত্রে বিশেষভাবে লক্ষ রাখা, যাতে কোনো অঙ্গ শুকনা না থেকে যায়। পবিত্রতা অর্জনে এমন উদাসীনতা কোনোভাবেই কাম্য নয়। কারণ ফরজ গোসল ও অজুর সময় কোনো অঙ্গের সামান্য থেকে সামান্য পরিমাণ শুকনা থাকলে পবিত্রতা অর্জন হবে না।

এ বিষয়ে আল্লামা মুহাম্মদ বিন সালেহ আল উসাইমিন (রহ.) বলেন, ‘মানুষ যদি পবিত্রতা অর্জনের অঙ্গে তৈলাক্ত বস্তু (তেল, ক্রিম) ব্যবহার করে, তাহলে দেখতে হবে যদি উক্ত তৈলাক্ত বস্তুটি জমাট বাঁধা ও আবরণবিশিষ্ট হয়, তাহলে পবিত্রতা অর্জনের পূর্বে অবশ্যই তা দূর করতে হবে। যদি তৈলাক্ত বস্তু সেভাবেই জমাট বাঁধা অবস্থায় থেকে যায়, তাহলে তা চামড়া পর্যন্ত পানি পৌঁছতে বাধা দেবে। এতে করে তখন পবিত্রতা শুদ্ধ হবে না।কিন্তু যদি তৈলাক্ত বস্তুটির কোনো আবরণ না থাকে কিন্তু পবিত্রতার অঙ্গগুলোর ওপর সেগুলোর চিহ্ন অবশিষ্ট থেকে যায়, তাহলে তাতে কোনো ক্ষতি নেই। কিন্তু এ অবস্থায় ওই অঙ্গের ওপর হাত ফিরিয়ে দেওয়া গুরুত্বপূর্ণ। কেননা সাধারণত তৈলাক্ত বস্তু থেকে পানি আলাদা থাকে। সুতরাং হতে পারে, পবিত্রতার ক্ষেত্রে পুরো অঙ্গে পানি পৌঁছবে না।’ (ফাতাওয়াত তাহারাহ, পৃষ্ঠা : ১৭৪)

যেসব জিনিস অজু ও গোসলের সময় শরীরে পানি পৌঁছতে বাধা প্রদান করে না সেগুলো হলো—শরীরে সরিষা, তিল, কালোজিরা ইত্যাদির তেল, অলিভ ওয়েল, বডি লোশন, ক্রিম, লিকুইড ভ্যাসলিন, গ্লিসারিন ইত্যাদি। কারণ এগুলো দ্বারা চামড়ার ওপর প্রলেপ পড়ে না বা আবরণ তৈরি হয় না। তবে এ অবস্থায় অজু বা গোসলের সময় যথাসম্ভব হাত দিয়ে অজুর স্থানগুলো ও শরীরের বিভিন্ন স্থান ভালো করে ঘষে দেওয়া উচিত। যেন যথাস্থানে পানি পৌঁছতে সন্দেহ না থাকে। যেমন—ঠাণ্ডার সময় অজু বা গোসল করলে অজুর অঙ্গ-প্রত্যঙ্গগুলো এবং শরীরের বিভিন্ন অংশ ভালোভাবে ঘষে নিতে হয়।

অনুরূপ নারীদের মেহেদির রং, সাধারণ পাউডার, চোখের সুরমা, আতর, সেন্ট ইত্যাদি চামড়ায় পানি পৌঁছাতে কোনো বাধা প্রদান করে না। তবে বর্তমানে বাজারে কিছু কেমিক্যালযুক্ত কৃত্রিম টিউব মেহেদি পাওয়া যায়, যেগুলো চামড়ায় পাতলা আবরণ সৃষ্টি করে। তা ছাড়া নেইলপলিশ, কিছু লিপস্টিক ব্যবহার করলেও চামড়ার ওপর প্রলেপ পড়ে যায়। যার কারণে চামড়া পর্যন্ত পানি পৌঁছতে বাধাগ্রস্ত হয়। এ ধরনের ক্ষেত্রে অজু ও গোসলের পূর্বে এগুলোকে ভালোভাবে তুলে নিতে হবে।

দেয়ালে লাগানোর রং, মবিল, আঠা জাতীয় বস্তু ইত্যাদি শরীরে লাগলে তা জমাটবদ্ধ হয়ে শরীরে আবরণ সৃষ্টি করে। সুতরাং অজু ও গোসলের আগে এগুলো তুলে ফেলতে হবে।

যেসব—ক্রিম, চর্বিজাতীয় ও তৈলাক্ত বস্তু শরীরে লাগানোর ফলে চামড়ার ওপর প্রলেপ বা আবরণ পড়ে সেগুলো ব্যবহার করলে অবশ্যই অজু-গোসলের সময় সেই আবরণ ভালোভাবে ধুয়ে ফেলতে হবে। মোটকথা, অজু শুদ্ধ হওয়ার জন্য অজুর অঙ্গ-প্রত্যঙ্গগুলো এবং গোসল শুদ্ধ হওয়ার জন্য শরীরের সর্বস্থানে পানি পৌঁছানো আবশ্যক। অন্যথায় পবিত্রতা অর্জিত হবে না। আর পবিত্রতা অর্জন ছাড়া নামাজ এবং যেসব ইবাদতের জন্য পবিত্রতা পূর্বশর্ত সেগুলো আল্লাহর কাছে গৃহীত হবে না।

তাই আমাদের উচিত, সতর্কতার সঙ্গে অজু ও গোসল করা।

লেখক: মাওলানা সাখাওয়াত উল্লাহ

নিউজটি আপনার বন্ধুদের সাথে শেয়ার করুন




© All rights reserved © crimeseen24.com-2024
Design By MrHostBD