শুক্রবার, ০১ নভেম্বর ২০২৪, ১০:৩১ পূর্বাহ্ন
মানিকগঞ্জের সাতটি উপজেলার পাইকারি বাজারে হুট করে চালের দাম প্রতি কেজিতে বেড়েছে তিন থেকে চার টাকা। কিন্তু খুচরা বাজারে বেড়ে গেছে তার চেয়েও বেশি। প্রতি কেজি চাল আরও ছয় থেকে সাত টাকা বেশি দিয়ে কিনতে হচ্ছে সাধারণ ক্রেতাদের। এতে করে বিপাকে পড়েছে নিম্নবিত্ত ও নিম্ন-মধ্যবিত্তরা।
মঙ্গলবার (১৯ নভেম্বর) মানিকগঞ্জের কয়েকটি পাইকারি চালের আড়ৎ, অটো রাইস মিল ও বাজার ঘুরে এমন চিত্র দেখা গেছে। সেখানে প্রতি ৫০ কেজি চালের বস্তায় দুই থেকে আড়াইশ’ টাকা বাড়লেও খুচরা বাজারে বেড়ে তা দাঁড়াচ্ছে তিনশ’ টাকার মতো।
সরেজমিনে দেখা যায়, মানিকগঞ্জের দুধবাজার এলাকার মেসার্স মজিবর ট্রেডাস, মেসার্স ফরহাদ ট্রেডার্স ও খালপাড় মোড়ের মেসার্স তনু রন্ত রাইস এজেন্সিতে ৫০ কেজি বস্তা মিনিকেট ২২শ’ টাকা, মিনিকেট (কুষ্টিয়া) ২ হাজার ৩৫০ টাকা, ২৯ চাল ১৭শ’ টাকা, হাফ সেদ্ধ ২৯ চাল ১৭৫০ টাকা, ঘি-ভুগ ২৮শ’, নাজির ২৫শ’, আমন ১৬শ’, বাসমতি ২৫শ’ টাকা পাইকারি দরে বিক্রি হচ্ছে। অথচ পাইকারদের কাছ থেকে খুচরা ব্যবসায়ীরা যে টাকায় চাল কিনছেন, বিক্রি করছেন তার চেয়েও চড়া দামে। ধানের দাম হঠাৎ বেড়ে যাওয়ায় চালের দাম বেড়েছে বলে মনে করছেন স্থানীয় ব্যবসায়ীরা।
দুধবাজারে চালের ক্রেতা সাইফুল বলেন, দুই দিন আগে যে চাল ৩০ টাকা প্রতি কেজি কিনেছি, সেই চাল এখন ৩৬ টাকায় কিনছি। এভাবে চালের দাম বাড়লে আমাদের মতো পরিবারের তিন বেলা না খেয়ে দুই বেলা খেতে হবে। যত বিপদ হয়েছে আমাদের মতো নিন্ম-মধ্যবিত্ত লোকজনের।
মেসার্স মজিবর ট্রেডার্সের মহাজন মজিবর রহমান বলেন, হঠাৎ দুইদিনে চালের বস্তায় কিছু টাকা বেড়ে গেছে। অথচ আমাদের কাছ থেকে দামে খুচরা ব্যবসায়ীরা কিনছে, তার চেয়ে প্রতি কেজি চালে তারা ছয় থেকে সাত টাকা বেশি দামে বিক্রি করছে।
খুচরা ব্যবসায়ীরা দাম বেশি রাখছেন বলে অভিযোগ উঠেছে।
মানিকগঞ্জ চাল ব্যবসায়ী সমিতির সভাপতি হাজী ফরহাদ আলী বলেন, আমরা বেড়া পাবনা, কুষ্টিয়া, রাজশাহী থেকে চাল কিনে মানিকগঞ্জের খুচরা ব্যবসায়ীদের কাছে বিক্রি করি। ৫০ কেজি চালের বস্তায় দুই থেকে আড়াইশ’ টাকা মোকামেই বাড়ছে। সে অনুয়ায়ী আমরা খুচরা ব্যবসায়ীদের কাছে বিক্রি করছি। কিন্তু, শুনেছি খুচরা ব্যবসায়ীরা বাজারে ক্রেতাদের কাছে প্রতি কেজিতে আরও ছয় থেকে সাত টাকা করে বেশিতে বিক্রি করছে।
বিবি অটো রাইস অ্যান্ড ফুড লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক শহিদুর রহমান বলেন, শুধু মানিকগঞ্জ নয়, সারা দেশেই ধানের দাম বেড়ে যাওয়ায় চালের দাম কিছুটা বেড়েছে। এখন প্রতি মণ ধান সাড়ে আটশ’ টাকা করে কিনেছি, যার কারণে ৫০ কেজি চালের বস্তায় কিছুটা দাম বেড়েছে। তবে, নতুন ধান বাজারে এলেই চালের দাম কমে যাবে বলে মনে করেন এই মিল মালিক।
জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর মানিকগঞ্জ জেলা কার্যালয়ের সহকারী পরিচালক আসাদুজ্জামান রুমেল বলেন, পাইকারি বাজারে চালের আড়তে দুই-এক টাকা প্রতি কেজিতে দাম বাড়লেও খুচরা বাজারে দাম কিছুটা বেশি। তবে আমাদের কাছে অভিযোগ করলে সেসব ব্যবসায়ীদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে। এছাড়া, আমরা প্রতিনিয়ত বাজার মনিটরিং করছি যাতে কোনো ব্যবসায়ী অতিরিক্ত দামে চাল বিক্রি করতে না পারেন।