শুক্রবার, ২২ নভেম্বর ২০২৪, ০৭:২২ অপরাহ্ন
অনলাইন ডেস্ক :
দেশের বাজারে পেঁয়াজ সংকট দূর করতে ভারতের বিকল্প হিসেবে মিসর, তুরস্ক ও মিয়ানমার থেকে আমদানির সিদ্ধান্ত নিয়েছিল সরকার। ইতোমধ্যে মিসর ও মিয়ানমারের পেঁয়াজ বাজারেও চলে এসেছে। তবে মিসরের পেঁয়াজের মান নিয়ে কোনো প্রশ্ন না উঠলেও উঠেছে মিয়ানমারের গুলোর ওপরে। পাইকারি ব্যবসায়ীদের অভিযোগ- দুইদিন হলো বাজারে আসা দেশটির অনেক পেঁয়াজ পচা। এমনকি বেশির ভাগ পেঁয়াজে গাছও উঠে গেছে।
আড়তদারদের অনেকেই দোকানের এক পাশে মিয়ানমারের পচা পেঁয়াজের বস্তা ফেলে রেখেছেন। তারা বলছেন, বস্তা খুলে এসব পেঁয়াজের কিছু ফেলে দিতে হবে। আর বাকিগুলোর অধিকাংশই অর্ধেক দামে বিক্রি করা হবে।
এদিকে, পেঁয়াজ সংকট কাটাতে আমদানি করে পর্যাপ্ত সরবরাহ নিশ্চিত করা হলেও দাম কমেনি এখনও। মিসর-মিয়ানমারের পেঁয়াজ বাজারে এসেও কোনো প্রভাব ফেলতে পারেনি ব্যবসীদের মজুত কূটকৌশলের কারণে।
মিয়ানমারের গাছ বের হওয়া পেঁয়াজের বস্তা, রাজধানীল শ্যাম বাজারে পেঁয়াজের আড়ৎগুলো ঘুরে এমন চিত্র চোখে পড়ে। জানা যায়, এখানের আড়ৎগুলোতে দুইদিন আগে (০১ অক্টোবর রাতে) মিয়ানমার ও মিসরের আমাদানি করা পেঁয়াজ আসে। কিন্তু আড়তে মাল খালাস করার পরপরই বিক্রেতাদের চোখে পড়ে পচা ও গাছ বের হওয়া পেঁয়াজ অনেক। এর পরপরই তারা অর্ধেক দামে পেঁয়াজ বিক্রি শুরু করেন বলে জানান। এছাড়া অনেক পেঁয়াজ ফেলে দেওয়ার জন্য আড়ৎ থেকে বাইরে রেখেছেন।
এখানে পাইকারি ৩০ থেকে ৬০ টাকা কেজি দরে বিক্রি করা হচ্ছে মিয়ানমারের পেঁয়াজ। আর মিসর থেকে আসা পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে ৬০ টাকা কেজি। অন্যদিকে, দেশি পেঁয়াজ, যেটা ফরিদপুরের বলেই সবাই কিনছেন, এটা বিক্রি হচ্ছে ৬০ থেকে ৭০ টাকা কেজি। আর ভারতীয় মোটা পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে ৬০ থেকে ৬৮ টাকার মধ্যে।
পচা পেঁয়াজের বস্তা,বাজারে পাইকারি দেশি রসুন (আকারভেদে) বিক্রি হচ্ছে ৮০ থেকে ১২৫ টাকা কেজি দরে। চায়না রসুন ১০০ থেকে ১২০ টাকা। আর আদা বিক্রি হচ্ছে ১১৩ থেকে ১১৫ টাকার মধ্যে।
সূত্র বলছে, মিয়ানমার থেকে আমদানি করা পেঁয়াজ পচাসহ নিম্ন মানের হলেও অনেক ব্যবসায়ীই নীরব রয়েছেন। আবার অনেকে বলছেন, মানহীন পেঁয়াজ হওয়া সত্ত্বেও সরকারের চাপের কারণে এসব আমদানি করা হয়েছে। যদিও অনেক ব্যবসায়ী এতে ৫০ শতাংশ পর্যন্ত লোকসানে পড়বে।
এ বিষয়ে এখানকার পবিত্র ভাণ্ডারের ম্যানেজার বাপল সাহা বলেন, অনেক আমদানিকারককে সরকার চাপ দিয়েছে পেঁয়াজ আমদানি করতে। এর ফলে তারা কোনো বাছ-বিচার ছাড়াই আমদানি করেছেন এসব পেঁয়াজ। বাজারে পেঁয়াজের সংকট কাটাতে দ্রুত সময়ের মধ্যে এসব পেঁয়াজ আমদানি করা হয়। পর্যাপ্ত কোনো সময় ছিল না ভালো করে দেখার।
মিয়ানমারের গাছ বের হওয়া পেঁয়াজ: মিয়ানমার থেকে আমদানি করা পেঁয়াজের প্রায় সবগুলো থেকেই গাছ বা চারা বের হয়ে গেছে। এছাড়া মোট পেঁয়াজের প্রায় ২৫ শতাংশ এসেছে পচা। এজন্য আমাদের অনেক পেঁয়াজ ফেলে দিতে হয়েছে। অনেকেই আবার অর্ধেক দামে বিক্রি করছেন। এই পেঁয়াজে শতভাগ লোকসান হবে বলে ব্যবসায়ীরা দাবি করছেন।
তার মতো একই কথা জানালেন আলী ট্রেডার্সের ম্যানেজার শামসুর রহমান। তিনি বলেন, মিসর থেকে ফ্রেশ পেঁয়াজ এলেও মিয়ানমারের গুলোর মান খুবই খারাপ। এসব পেঁয়াজে গাছ বের হওয়ার পাশাপাশি পচার মিশ্রণও রয়েছে। ফলে লোকসানেই পেঁয়াজ ছাড়তে হচ্ছে।
বাংলাদেশ সময়: ০৫:২০ মি:, অক্টোবর ০৩, ২০১৯