বৃহস্পতিবার, ২৮ অগাস্ট ২০২৫, ১২:৫৪ পূর্বাহ্ন
অনলাইন ডেক্সঃ
শেরই বাংলা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালসহ সারাদেশে স্বাস্থ্যখাত সংস্কারের দাবিতে আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়কারী ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী মহিউদ্দিন রনি বলেছেন, হাসিনার ডিসি, পুলিশ কমিশনারদের বরিশালে পাঠানো হয়েছে।
বুধবার (২৭ আগস্ট) বিকেলে বরিশাল নগরের অশ্বিনী কুমার হল প্রাঙ্গণে সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ কথা বলেন।
আন্দোলনরতদের হামলার প্রসঙ্গে রনি বলেন, পুলিশ আমাদের অভিযোগ কোনোভাবেই এফআইআর করেনি।
আমরা চেয়েছিলাম জনতার পুলিশ সুষ্ঠু তদন্ত করে জনতার মামলাটি নেবে। কিন্তু আমরা বুঝতে পেরেছি এই কমিশনার, ডিসি এবং প্রশাসনের লোক যাদের দেখছেন তারাও চরম মাত্রার অথর্ব।
আমাদের কাছে মনে হচ্ছে বিভিন্ন জায়গা থেকে প্রত্যাহার করে হাসিনার ডিসিকে পাঠানো হয়েছে বরিশালে, হাসিনার কমিশনারকে পাঠানো হয়েছে বরিশালে।
তারা যদি প্রমাণ করতে পারে তারা হাসিনার পুলিশ না, হাসিনার ডিসি না, তাহলে তাদের অ্যাকশনে যেতে হবে, ডেভিলদের আইনের আওতায় আনতে হবে এবং বিচারের কাঠগড়ায় দাঁড় করাতে হবে।
তাহলে মেনে নেব এরা জনগণের পুলিশ, জনগণের ডিসি। আর তা না হলে হাসিনার পুলিশ, ডিসি এবং স্বৈরাচারের দোসর আখ্যা, গ্লানি ও দায় নিয়ে বরিশাল ছাড়তে হবে।
শেরই বাংলা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালসহ সারাদেশে স্বাস্থ্যখাত সংস্কারের দাবিতে বরিশালবাসী আন্দোলন করছে জানিয়ে তিনি বলেন, এক মাস ধরে চলা এই আন্দোলনে আমরা দাবি মানার লিখিত আশ্বাস ও সংস্কারের রূপরেখা চাচ্ছি।
এ আন্দোলনের প্রেক্ষিতে এরই মধ্যে বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ বেশ কিছু সমস্যার সমাধান করেছে এবং করবে বলে আমাদের জানিয়েছে। সেইসঙ্গে হাসপাতাল পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল এ কে এম মশিউল মুনীনের স্বাক্ষরিত একটি রূপরেখাও আমাদের দেওয়া হয়েছে।
যা বরিশালবাসীর দীর্ঘদিনের আন্দোলনের সফলতা।
রনি বলেন, আমরা চেয়েছিলাম সারাদেশের স্বাস্থ্যখাত সংস্কার নিয়ে উপদেষ্টা তাদের মন্ত্রণালয়ের প্যাডে লিখিত আশ্বাস এবং রূপরেখা যেন আমাদের দেয়।
কিন্তু আমরা যখন বুঝেছি এই উপদেষ্টা অথর্ব, তাকে আসলে বরিশালবাসীর প্রয়োজন নেই। তখন তাকে আমরা ডিনাই করেছি, এখন আমরা বরিশালবাসী তার সঙ্গে বসতে চাই না।
তিনি বলেন, আমরা মনে করি বরিশালবাসীর সমস্যার সমাধান হওয়া প্রয়োজন এবং হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের দেওয়া রূপরেখা বাস্তবায়নে এক মাস সময় চাওয়া হলেও আমরা আগামী ৫০ দিন সময় বেঁধে দিলাম। এই ৫০ দিনে আমরা প্রতিটি শ্রেণি-পেশার মানুষের কাছে জনসংযোগে যাবো এবং এর মধ্য দিয়ে এখন হাসপাতালের যেসব সমস্যার সমাধান হবে সেগুলো পর্যালোচনা, ফলোআপ এবং মনিটরিংয়ে সাধারণ ছাত্র-জনতা যাবো।
কিন্তু কোনোভাবে আমরা কোনো ডাক্তার, নার্স বা স্টাফকে প্রেসারাইজড করবো না। কারণ তাদের নিরাপদ কর্মস্থল নিশ্চিত হোক সেটা আমরা চাই।
‘৫০ দিনের মধ্যে যদি আশ্বাস অনুযায়ী সমাধান না করে, তাহলে ৫০ দিনের মাথায় গোটা বরিশালের মানুষ আবারও আমরা স্বাস্থ্যখাত সংস্কারের দাবিতে রাস্তায় নামবো।
ইন্টেরিম সরকার আমাদের যতটুকু কঠোর হতে দেখেছে, এর থেকে কঠোরভাবেই আন্দোলনের হুঁশিয়ারি দিয়ে আমরা জনসংযোগে যাচ্ছি। ’
আন্দোলন প্রত্যাহার করছেন না জানিয়ে রনি বলেন, আন্দোলন চলমান আছে, আন্দোলন চলছে এবং চলবে।
কোনো থামাথামি নেই, যতদিন পর্যন্ত মন্ত্রণালয় থেকে সারা বাংলাদেশের স্বাস্থ্যখাতের অব্যবস্থাপনা দূর করার আমাদের যে চার দফা দাবি মেনে না নেবে, লিখিত আশ্বাস না দেবে এবং অ্যাকশনে না যাবে ততদিন ধাপে ধাপে কৌশলে আন্দোলন চলবে।
রনি বলেন, হাসপাতাল পরিচালক তাদের মামলাটি দ্রুত তুলে নেওয়ার জন্য আশ্বস্ত করেছেন। এছাড়া অনশনরত শিক্ষার্থীদের ওপর হামলাসহ যতগুলো হামলার ঘটনা ঘটেছে তার প্রমাণও আমরা দিয়েছি, তাদের তদন্ত কমিটি আগামী তিনদিনের মধ্যে অ্যাকশনে যাবে বলে আমাদের জানিয়েছে। আমরা তাদের ওপর ভরসা রাখতে চাই।
আর তারা যদি সমস্যার সমাধান না করে তাহলে তাদের মনে রাখতে হবে আমরা উপদেষ্টাকে গুনছি না, তাহলে তাদের ক্যামনে গুনব। বাংলাদেশের মানুষ এই উপদেষ্টার থেকে অনেক শক্তিশালী, বরিশালের মানুষ অথর্ব উপদেষ্টার থেকে অনেক বেশি শক্তিশালী।