মঙ্গলবার, ০৩ ডিসেম্বর ২০২৪, ১১:২৯ অপরাহ্ন

সর্বশেষ সংবাদ :
কলাপাড়ায় প্রীতি ফুটবল ম্যাচ অনুষ্ঠিত কলাপাড়ায় ডাকাত দলের ৬ সদস্য আটক মৎস্যজীবী দলের দোয়া মুনাজাত বাউফলে ক্ষুদ্র ও প্রান্তিক কৃষকদের মাঝে বিনামূল্যে সার ও বীজ বিতরণ বাউফলে আগষ্টের গনঅভ্যুত্থানে নিহত শহীদদের উদ্দেশ্যে স্মরণ সভা অনুষ্ঠিত কলাপাড়ায় তারেক রহমান’র মুক্তির খবরে আনন্দ মিছিল কলাপাড়ায় উড়ন্ত মৃদু বিষধর বিলুপ্তপ্রায় লাউডগা সাপ উদ্ধার কলাপাড়ায় যাত্রীবাহি ৩ টি বাস থেকে ২৫ মন জাটকা ইলিশ জব্দ কলাপাড়ায় শের-ই বাংলা নৌ ঘাঁটিতে নৌবাহিনীর নবীন নাবিকের শিক্ষা সমাপনী কুচকাওয়াজ অনুষ্ঠিত মামলা থেকে তারেক রহমানকে অব্যাহতি দেওয়ায় দোয়া মাহফিল শ্রমিকদলের আলোচনা সভা এবং দোয়া মুনাজাত নগরীতে নিখোঁজ কলেজ ছাত্রী মিলা বাউফলে একই রাতে দুই বাড়িতে ডাকাতি বৈষম্য বিরোধী আন্দোলনে শহীদদের স্মরণে সরকারি মোজাহার উদ্দিন বিশ্বাস কলেজের কর্মসূচি কুয়াকাটায় সানভিউ প্রপার্টিজ এমডির বিরুদ্ধে ১ কোটি ৮৪ লাখ টাকা আত্মসাতের অভিযোগ
ঘূর্ণিঝড় রেমাল, কলাপাড়া উপকূলে চলছে দুর্গত মানুষের আহাজারি

ঘূর্ণিঝড় রেমাল, কলাপাড়া উপকূলে চলছে দুর্গত মানুষের আহাজারি

Sharing is caring!

কলাপাড়া(পটুয়াখালী) প্রতিনিধি  :
ঘূর্ণিঝড় রেমালের আঘাতে পটুয়াখালীর কলাপাড়া উপকূলে চলছে এখন দুর্গত মানুষের আহাজারি। ঘূর্ণিঝড় রেমাল উপকূল অতিক্রম করলেও এখনো প্রচন্ড বেগে বইছে দমকা বাতাস, থেমে থেমে হচ্ছে মাঝারি থেকে ভারী বৃষ্টিপাত। এতে ফসলের ক্ষেত, মাছের ঘের, পুকুর পানিতে তলিয়ে গেছে।
ঘর-বাড়ী বিধ্বস্ত অনেক মানুষ খোলা আকাশের নিচে পরিবার পরিজন নিয়ে অপেক্ষাকৃত উঁচু স্থানে গবাদি পশু নিয়ে অবস্থান নিয়েছেন, কেউ কেউ অবস্থান নিয়েছেন মুজিব কিল্লায়। অগনিত গাছপালা উপড়ে অভ্যন্তরীণ সড়ক যোগাযোগ বন্ধ হওয়ার উপক্রম। তাই বৃষ্টি উপেক্ষা করে ফায়ার সার্ভিস ও স্থানীয়রা সড়ক থেকে গাছপালা অপসারণের চেষ্টা চালাচ্ছেন।
বিদ্যুৎ ও মুঠোফোনের নেটওয়ার্ক বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে সমগ্র উপজেলা। কলাপাড়া পৌর শহরের নাগরিকরা পানি সেবা পাচ্ছেন না গত ৩ দিন ধরে।
এছাড়া পানি উন্নয়ন বোর্ডের বেড়িবাঁধ ভেঙে প্লাবিত হয়েছে গ্রামের পর গ্রাম। ঝুঁকিপূর্ণ এলাকার অন্ততঃ ত্রিশ হাজার মানুষ তাদের জীবন রক্ষায় আশ্রয় কেন্দ্রে অবস্থান নিলেও পরিবার পরিজন নিয়ে অনাগত ভবিষ্যতের দুঃশ্চিন্তায়  পড়েছেন তারা।
এখনও পানি বন্দি কয়েক হাজার পরিবার। উপজেলা প্রশাসন ও জনপ্রতিনিধিদের পক্ষ থেকে শুকনো ও রান্না করা খাবার দুর্গত এসব মানুষের মাঝে সরবরাহ করলেও প্রয়োজনের তুলনায় তা অপ্রতুল। তবে দুর্গত এসব মানুষের বিশ্বাস প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সরেজমিনে এসে তাদের অবস্থা দেখলে দ্রুত সব সমস্যার সমাধান হবে।
এর আগে উপজেলার কাউয়ারচর এলাকায় রবিবার দুপুরে অস্বাভাবিক জোয়ারের পানিতে ডুবে মো: শরীফ (২৪) নামের এক যুবকের  মৃত্যু হয়েছে। মৃত শরীফ অনন্তপাড়া এলাকার আবদুর রহিমের ছেলে।
উপজেলা প্রশাসন সূত্র জানায়, ঘূর্ণিঝড় রেমালের আঘাতে কলাপাড়ায় দুর্গত মানুষের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৭৫ হাজার ১৩০ জনে। সম্পূর্ণ বাড়িঘর বিধ্বস্ত হয়েছে ১৪০টি এবং আংশিক বিধ্বস্ত ৬২০টি।
উপজেলা প্রশাসন ও স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদের উদ্যোগে দুর্গত মানুষের মাঝে প্রতি বেলায় রান্না করা খাবার সরবরাহ করা হচ্ছে। এখনও দেড় হাজার পরিবার পানি বন্দি রয়েছে। ক্ষয়ক্ষতি নিরূপণের কাজ চলছে, প্রকৃত ক্ষয়ক্ষতির তালিকা তৈরিতে দুই একদিন সময় লাগবে।
কলাপাড়া পানি উন্নয়ন বোর্ডের উপ-বিভাগীয় সহকারী প্রকৌশলী মোঃ শাহ আলম জানান, পাউবো’র পূর্ব গৈয়াতলা, লেমুপাড়া, চম্পাপুর, মঞ্জুপাড়া, মুন্সী পাড়া, নিজামপুর, জালালপুর, ধূলাসার, বালিয়াতলি, দেবপুর, নাচনাপাড়া, বড় কলবাড়ি, খ্রিস্টান পাড়া, চরান্ডা, চর মোন্তাজ, চালিতবুনিয়া বড় বাইশদিয়া বেড়িবাঁধের ২২ টি স্পটে ৯.১৯ কি. মি. বেড়িবাঁধ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে, প্রাথমিকভাবে ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ প্রায় সাড়ে ১১ কোটি টাকা।
উপজেলা সিনিয়র মৎস্য কর্মকর্তা অপু সাহা জানান, রেমালের তাণ্ডবে উপজেলার ২৪৬৫ টি পুকুর এবং ৭৭৮ টি ঘেরের মাছ পানিতে ভেসে গেছে, প্রাথমিকভাবে মৎস্য খাতে ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ ১৪ কোটি টাকা।
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মোঃ আরাফাত হোসেন জানান, ঘূর্ণিঝড় রেমালের তাণ্ডবে উপজেলার বিশ হাজার হেক্টর আবাদী জমি পানিতে নিমজ্জিত হয়েছে। ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে কৃষকের করলা, ঝিঙ্গা, ঢেঁড়স, পুঁই শাক, গিমা কলমী শাক, চিচিঙ্গা, শসা, কলা ও আমের বাগান।
কলাপাড়া দুর্যোগ ও ত্রাণ কর্মকর্তা মোঃ হুমায়ুন কবির জানান, দুর্যোগে ক্ষয়ক্ষতির তালিকা নিরূপণে কাজ চলমান রয়েছে। বন বিভাগ, কৃষি, শিক্ষা, এলজিইডি, পানি উন্নয়ন বোর্ড সহ সংশ্লিষ্ট সকলকে লিখিতভাবে ক্ষয় ক্ষতির তথ্য চেয়ে পাঠানো হয়েছে। এছাড়া দুর্যোগ ও ত্রান প্রতিমন্ত্রীর সার্বক্ষণিক তদারকিতে আমরা দুর্গত মানুষকে সহায়তা করে যাচ্ছি।
কলাপাড়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মোঃ রবিউল ইসলাম বলেন, এখন পর্যন্ত আমরা দুর্গত মানুষের জন্য ১৩০ মেট্রিক টন চাল, নগদ ৬ লক্ষ টাকা ও শুকনো খাবার বরাদ্দ পেয়েছি। প্রয়োজনে চাহিদা অনুযায়ী প্রয়োজনীয় বরাদ্দ পাওয়া যাবে। এছাড়া দুর্যোগ প্রতিমন্ত্রী অধ্যক্ষ মোঃ মহিববুর রহমান সার্বক্ষণিক কলাপাড়ার দুর্গত মানুষের খোঁজ খবর রাখছেন।

নিউজটি আপনার বন্ধুদের সাথে শেয়ার করুন




© All rights reserved © crimeseen24.com-2024
Design By MrHostBD