বৃহস্পতিবার, ২১ নভেম্বর ২০২৪, ০৭:৩৭ অপরাহ্ন
অনলাইন ডেক্স: যাত্রী সংকটের কারণে ক্রমাগত লোকসানের মুখে বরগুনা-ঢাকা নৌপথে লঞ্চ চলাচল বন্ধ ঘোষণা করেছে মালিকপক্ষ। এতদিন চলাচল করা একমাত্র লঞ্চ এমকে শিপিং লাইনস তাদের সেবা বন্ধ করে দিয়েছে।
মঙ্গলবার (২২ আগস্ট) থেকে ঢাকা-বরগুনা রুটে লঞ্চ চলাচল বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে।
এদিকে অনির্দিষ্টকালের জন্য লঞ্চ চলাচল বন্ধ ঘোষণা করায় এ রুটে চলাচলরত যাত্রীদের দুর্ভোগ বাড়বে বলে জানান স্থানীয়রা। এই রুটে লঞ্চ চলাচল বন্ধ হয়ে যাওয়ায় বদলে গেছে এই ঘাটের চিত্র। নীরব নিস্তব্ধ হয়ে গেছে ঘাট এলাকা। তাছাড়া ব্যবসায়ীদের পণ্য পরিবহনে খরচ বাড়ায় স্থানীয় বাজারে পণ্যের দাম বাড়ার আশঙ্কা করা হচ্ছে।
ঘাটে আসা আব্দুল মোমেন মিয়া নামে এক যাত্রী বলেন, হঠাৎ করেই লঞ্চ কর্তৃপক্ষ এমন সিদ্ধান্ত নেওয়ায় আমরা দুর্ভোগে পড়েছি। অসুস্থ মাকে চিকিৎসার জন্য ঢাকায় নিতে ভোগান্তিতে পড়েছি। লঞ্চে করে নিয়ে যেতে চেয়েছিলাম। এখন সড়কপথে যেতে আমার খুবই কষ্ট হবে।
এমকে শিপিং লাইনসের বরগুনা নৌ বন্দরের ব্যবস্থাপক মো. এনায়েত হোসেন বলেন, যাত্রী সংকটের কারণে আজ মঙ্গলবার (২২ আগস্ট) থেকে অনির্দিষ্টকালের জন্য ঢাকা-বরগুনা নৌপথে লঞ্চ চলাচল বন্ধ ঘোষণা করেছে মালিকপক্ষ।
এনায়েত হোসেন বলেন, প্রথমে ঢাকা-বরগুনা নৌপথে প্রতিদিন দুটি লঞ্চ চলাচল করত। যাত্রী সংকটের কারণে আমরা একটি লঞ্চ চালানোর সিদ্ধান্ত নিই। কিন্তু এখন আর সেটিও চালানো সম্ভব হচ্ছে না। কারণ কোম্পানি কতদিন লোকসান গুনবে। পরিস্থিতি স্বাভাবিক হওয়ার আশায় দিনের পর দিন আমরা লোকসান গুনেছি। কিন্তু এখন আমাদের পিঠ দেয়ালে ঠেকে গেছে। তাই নিরুপায় হয়ে লাগাতার লোকসান এড়ানোর জন্যই কর্তৃপক্ষ এই সিদ্ধান্ত নিয়েছে।
এ বিষয়ে বরগুনা বাজারের গার্মেন্টস ব্যবসায়ী মাহাতাব, এয়াকুব আলী ও রিপন বলেন, লঞ্চ বন্ধ হয়ে যাওয়ায় আমাদের বিকল্প পদ্ধতিতে পণ্য পরিবহন করতে হবে। এতে পরিবহন ব্যয় বেড়ে যাবে। তাই পণ্যের দাম বাড়ার আশঙ্কা রয়েছে।
ইলেকট্রিক ব্যবসায়ী হাওলাদার ট্রেডার্সের মালিক মিজানুর বলেন, শতাধিক ব্যবসায়ী প্রতিদিন ঢাকা থেকে এই রুটে মালামাল আনেন। তারাও বিপাকে পড়েছেন।
বরগুনা পৌর এলাকার বাসিন্দা বেসরকারি চাকরিজীবী মালেক মুন্সী বলেন, বরগুনা থেকে উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকা যেতে হয়। বাসে যাতায়াত করতে পারি না বমি হয়। আমি সব সময় লঞ্চে ঢাকা-বরগুনা যাতায়াত করতাম। এখন ভোগান্তিতে পড়েছি।
এমকে শিপিং লাইনসের মালিক মাসুম খান বলেন, ‘পদ্মা সেতু চালু হওয়ার পর আমাদের এ নৌপথ চ্যালেঞ্জে পড়ে যায়। টিকে থাকার অনেক চেষ্টা করেছি। কিন্তু লোকসান এত বেশি, সেবা বন্ধ করা ছাড়া আর কোনো পথ নেই। তবে যাত্রী হলে আমরা আবার লঞ্চ চালু করব। ‘
এ বিষয়ে বরগুনা জেলা যাত্রী কল্যাণ সমিতির সভাপতি সাংবাদিক সঞ্জীব দাস বলেন, লঞ্চ বন্ধ হয়ে যাওয়ার ঘোষণায় আমাদের অনেক খারাপ লেগেছে। বিষয়টি নিয়ে আমরা লঞ্চ কর্তৃপক্ষের সঙ্গে আলোচনায় বসব।