বৃহস্পতিবার, ২১ নভেম্বর ২০২৪, ০৬:২৪ অপরাহ্ন
অনলাইন ডেক্স: পিরোজপুরের নেছারাবাদে (স্বরূপকাঠী) খালাতো ভাইকে হত্যার দায়ে মো. তরিকুল ইসলাম (২৮) নামে এক যুবকের যাবজ্জীবন কারাদণ্ড এবং ২০ হাজার টাকা জরিমানা অনাদায়ে আরও তিন মাসের বিনাশ্রম কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত।
একইসঙ্গে মরদেহ গুম করার অপরাধে আরও সাত বছরের কারাদণ্ড ও পাঁচ হাজার টাকা জরিমানা, অনাদায়ে এক মাসের বিনাশ্রম কারাদণ্ড দেন আদালত।
মঙ্গলবার (২৯ নভেম্বর) দুপুরে পিরোজপুর জেলা ও দায়রা জজ আদালতের বিচারক মুহা. মুহিদুজ্জামান আসামির উপস্থিতিতে এ রায় ঘোষণা করেন।
দণ্ডপ্রাপ্ত তরিকুল ইসলাম জেলার নেছারাবাদ উপজেলার উত্তর করফা গ্রামের মো. বাদশা মিয়ার ছেলে।
বিষয়টি নিশ্চিত করে রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী পাবলিক প্রসিকিউটর (পিপি) খান মো. আলাউদ্দিন বলেন, মামলায় ১৯ জন সাক্ষীর সাক্ষ্য গ্রহণ শেষে আদালত এ রায় ঘোষণা করেন। এ মামলায় মো. তরিকুল ইসলামকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড ও ২০ হাজার টাকা জরিমানা, অনাদায়ে আরও তিন মাসের বিনাশ্রম কারাদণ্ড এবং মরদেহ গোপন করার অপরাধে আরও সাত বছরের কারাদণ্ড ও পাঁচ হাজার টাকা জরিমানা অনাদায়ে এক মাসের বিনাশ্রম কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত।
এদিকে, আসামি পক্ষের আইনজীবী মো. শাহজাহান সরদার বলেন, আমরা আদালতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তবে এ রায়ের বিরুদ্ধে আমরা উচ্চ আদালতে আপিল করবো।
মামলা সূত্রে জানা যায়, ২০১৬ সালের ২৩ মে সন্ধ্যার দিকে আসামি তরিকুল তার বোনকে পড়ানোর কথা বলে তার খালাতো ভাই আবু জাফরকে ঘর থেকে ডেকে নিয়ে যান। অনেক রাত হলেও বাড়ি না ফেরায় জাফরের বাবা মো. আব্দুল জব্বার খোঁজাখুঁজি শুরু করেন। এসময় তরিকুলের বাবা মো. বাদশা মিয়া জানান তরিকুল ও আবু জাফর দু’জনে অনেক আগেই বাসা থেকে বেরিয়েছে।
এ ঘটনায় আবু জাফরের বাবা মো. আব্দুল জব্বার ২৪ মে নেছারাবাদ থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেন। তবে পুলিশসহ অনেক খোঁজাখুঁজি করেও তাদের খুঁজে পাওয়া যায়নি।
এ ঘটনার প্রায় সাত মাস পর ২০১৬ সালের ২৩ ডিসেম্বর আবু জাফরের বাড়ির পাশের মালেক বেপারীর বাগানের পরিত্যক্ত পুকুরে সেচ দিয়ে মাছ ধরার সময় মো. জামাল নামে এক ব্যক্তি মানুষের শরীরের হাড় খুঁজে পায়। খবর পেয়ে নেছারাবাদ থানার পুলিশ কঙ্কাল উদ্ধার করে। এরপর মো. আব্দুল জব্বারের সঙ্গে কঙ্কালের ডিএনএ পরীক্ষা করা হয়।
২০১৭ সালের ৬ মার্চ ডিএনএ পরীক্ষার রিপোর্ট আসলে তাতে মিল পাওয়া যায়।
এ ঘটনায় আবু জাফরের বাবা মো. আব্দুল জব্বার ২০১৭ সালের ২ মে মো. তরিকুল ইসলাম ও তার বাবা মো. বাদশা মিয়াকে আসামি করে নেছারাবাদ থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন।
মামলার তদন্ত শেষে ২০১৮ সালের ৩ ফেব্রুয়ারি নেছারাবাদ থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) মো. আলমগীর হোসেন ১ নম্বর আসামি মো. তরিকুল ইসলামের নামে আদালতে অভিযোগপত্র জমা দেন।