মঙ্গলবার, ২২ এপ্রিল ২০২৫, ০৪:৪৬ অপরাহ্ন
মোঃহাফিজুল ইসলাম শান্ত : স্বরূপকাঠির আলকিরহাট বাজারের সরকারি জমিতে ঘর নির্মাণ করায় কালাম নামের এক ব্যক্তির কাঠের ঘর উচ্ছেদ করা হলেও সরকারি কর্মচারীর দ্বিতল ভবন বহাল তবিয়াতে রয়েছে।
কোন প্রকার বৈধতা ব্যাতিত দ্বিতল ভবন নির্মাণ করে সেখানে পারিবারিক ভাবে আলকিরহাট ক্ষুদ্র ব্যবসায়ি সমবায় সমিতির নামে সুদের ব্যবসা পরিচালনা করছেন দক্ষিণ জগন্নাথকাঠী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারি শিক্ষক মোঃ মিজানুর রহমান ও তার ছোট ভাই ১১৯ নং পশ্চিম সারেংকাঠি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রাইমারি শিক্ষক আল আমিন এবং বড় ভাই ব্যবসায়ি হাবিবুল্লাহ্ শাহীন।
উপজেলার পশ্চিম সোহাগদল মৌজার ওই সরকারি জমিতে দ্বিতল ভবন আর সেই ভবনের গলারকাটা চারটি মেহেগনী গাছ। বন বিভাগ কর্তৃক সৃজিত গাছগুলো কাঁটার জন্য পার্শ্বের দোকানিদের নিয়ে দরখাস্ত করেও কোন ফলাফল না পাওয়ায় রাতের আঁধারে গাছে ছিদ্র করে বিষ প্রয়োগের বিষয়ে জেলা প্রশাসকের কাছে অভিযোগ করেছেন এলাকাবাসী।
জেলা প্রশাসক বরাবর এলাকাবাসির দেওয়া অভিযোগপত্রে জানাগেছে এসব তথ্য। এঘটনায় ৭ আগষ্ট ৭৬০ নং স্মারকে ইউএনও নেছারাবাদকে প্রতিবেদন দেওয়ার জন্য নির্দেশ দিয়েছেন জেলা প্রশাসক পিরোজপুর। এ ব্যাপারে চা দোকানদার কালাম জানান, এই একই জমিতে আমি একটি কাঠের ঘর তৈরী করেছিলাম যা আমার অনুপস্থিতিতেই এসিল্যান্ড উচ্ছেদ করে নিলামে বিক্রি করে দিয়েছে। এ বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোঃ মোশারেফ হোসেন বলেন, গাছ ছিদ্রের ব্যপারে বন বিভাগকে চিঠি দিয়েছি ভবনের বিষয়ে তদন্ত করে দেখবো।
এ ব্যাপারে সোহাগদল ইউনিয়ন সহকারি ভূমি কর্মকর্তা মোঃ রিয়াজ হোসেন জানান, মিজান মাস্টারের ভবনটি সরকারি খাস জমিতে করা হয়েছে যা অবৈধ। ডিসিআরের জমিতে দ্বিতল ভবন করার সুযোগ নেই জেলা প্রশাসক স্যারের অনুমতি ছাড়া।
এব্যাপারে ওই জমির ডিসিআর গ্রহীতা আলম বলেন, আমার ডিসিআরের জমিতে একটি কাঠের ঘর ছিল যা আমি মিজানের কাছে বিক্রি করে ঢাকা চলে যাই। দীর্ঘ দিন পরে এসে দেখি ওরা ঘরের জামিতে দোতলা বিল্ডিং করছে যদিও ডিসিআর এখন পর্যন্ত আমার নামে। গাছ ছিদ্র করে বিষ দেওয়ার ব্যাপারে সামাজিক বন বিভাগের পিরোজপুর রেঞ্জ কর্মকর্তা মিজানুর রহমান বলেন, আমরা নিজেরা দেখিনি কে বা কারা গাছগুলো ছিদ্র করেছে। লোকাল স্বাক্ষী অনেক সময় কোর্টে অস্বীকার করে তাই আমরা ভাবছি এ বিষয়ে কি করবো।
বিষ প্রয়োগ করা হয়েছে কি না সেটা ল্যাব টেস্ট ছাড়া বলতে পারবো না। এ বিষয়টি টেস্টের জন্য ল্যাবে পাঠানো হয়নি আমাদের ল্যাব নাই। সরেজমিনে গিয়েছিলাম তিন সুতা পরিমান ছিদ্র করা হয়েছে চারটি গাছে যা তার ঢুকিয়ে নিশ্চিত হয়েছি।
এবিষয়ে উপজেলে সমবায় কার্যালয় থেকে ২০২১-২২ সালের অডিট রিপোর্টে জানা গেছে, সমিতিটির পরিচালনা কমিটির সভাপতি মিজান, সহ সভাপতি তার বড় ভাই শাহীন, সাধারণ সম্পাদক ছোট ভাই শিক্ষক আল আমিন। সমিতির সদস্য সংখ্যা মাত্র ৪০ জন উল্লেখ করা হলেও বাস্তবে ৫ শতাধিক বলে জানিয়েছেন মাঠকর্মীরা।
সরকারি কর্মচারী আচারণ বিধি ১৯৭৯ এর ১৭ ধারা অনুযায়ী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক এ ব্যবসায় জড়ানোর বিষয়ে জেলা শিক্ষা কর্মকর্তা মোঃ জেছের আলী বলেন, শিক্ষকরা এধরণের ব্যবসার সাথে জড়াতে পারবেন না। এটা সরকারি কর্মচারী আচারণ বিধি লঙ্ঘন। লিখিত অভিযোগ পেলে আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।