সোমবার, ০৯ ডিসেম্বর ২০২৪, ০৩:২১ অপরাহ্ন
ক্রাইমসিন২৪ ডেস্ক: বান্দরবান সংলগ্ন বাংলাদেশ-মিয়ানমার সীমান্তের ওপারে মায়ানমারের সরকার বিরোধী গেরিলা বাহিনী ‘আরাকান আর্মি’র (এএ) মধ্যে আরো কয়েকটি সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে।
কয়েক সপ্তাহ আগে এমন কিছু সংঘর্ষের পর বুধবার ২৩ জানুয়ারি সকাল থেকে উভয় পক্ষের মধ্যে কয়েক দফায় গোলাগুলির ঘটনা ঘটেছে। সীমান্তের ৪১-৪২ নম্বর পিলারের এপারে বসবাসকারীরা জানিয়েছেন, সীমান্তের ওপারে রাখাইন প্রদেশের কিয়াকাতা এলাকায় থেমে থেমে তারা ভারি অস্ত্রশস্ত্র থেকে নিক্ষিপ্ত গোলাগুলির শব্দ শুনতে পাচ্ছেন।
বাংলাদেশ সীমান্ত রক্ষী বাহিনী বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি)-এর পক্ষ থেকে এ বিষয়ে কোন মন্তব্য করা হচ্ছেনা। তবে স্থানীয়রা বলেছেন, ওপারে গোলাগুলির ঘটনার পর থেকে সীমান্তের এপারে বিজিবি জওয়ানদের সতর্কাবস্থায় রাখা হয়েছে।
এদিকে বৃহষ্পতিবার সন্ধ্যায় বান্দরবান জেলার নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলার দোছড়ি ইউনিয়নের লেবুছড়ি সীমান্তের এপারে মায়ানমার সীমান্তরক্ষী বাহিনী বিজিপি’র পোশাক পরা সেনাবাহিনীর এক জওয়ানকে আটক করেছে স্থানীয় জনতা।
ধারণা করা হচ্ছে, সরকার বিরোধী গেরিলা বাহিনীর সাথে গোলাগুলির সময় দিকবিদিক হারিয়ে ওই সৈনিক সীমান্ত অতিক্রম করে বাংলাদেশে ঢুকে পড়ে।
বৃহস্পতিবার ২৪ জানুয়ারি সন্ধ্যা পৌনে ৬টার দিকে ৪৯ নম্বর সীমান্ত পিলার সংলগ্ন বাংলাদেশের ভূ-খণ্ডের পাহাড়ি এলাকায় সন্দেহজনক ঘোরাফেরার সময় স্থানীয় জনতা তাকে আটক করে সন্ধ্যে ৭টার দিকে ভাল্লুক খাইয়া বিজিবি ক্যাম্পে তাকে হস্তান্তর করা হয়। সেখান থেকে তাকে নাইক্ষ্যংছড়ির বিজিবির ১১নং ব্যাটালিয়ন সদর দফতরে নিয়ে এসে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়।
একটি নির্ভরযোগ্য সুত্র জানায়, প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে আটককৃত ওই সেনা সদস্য জানান, তার নাম অং বো থিন এবং তার বাড়ি মিয়ানমারের ইয়াংগুনে।
জিজ্ঞাসাবাদে তিনি আরো জানান, তিনি মায়ানমার সেনাবাহিনীর ২৮৭ নং ব্যাটালিয়নের একজন নিয়মিত সদস্য। উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের নির্দেশে তাকে প্রেষণে লেবুছড়ি সীমান্তের ওপারে মায়ানমারের বেন্ডুলা ক্যাম্পে সংযুক্ত রাখা হয়। সেখানে তার ভালো না লাগায় মঙ্গলবার ক্যাম্প থেকে পালিয়ে তিনি বাংলাদেশে অনুপ্রবেশ করেন।
বিজিবি’র কক্সবাজার সেক্টরের সেক্টর কমান্ডার কর্নেল বায়েজিদ খান নাইক্ষ্যংছড়ির দোছড়ি সীমান্ত থেকে অনুপ্রবেশকারী মায়ানমার সেনাবাহিনীর একজন সৈনিক আটকের কথা স্বীকার করে সাংবাদিকদের জানান, আটক সেনা সদস্যের স্বীকারোক্তির মধ্য দিয়ে প্রমানিত হলো মায়ানমার কর্তৃপক্ষ সীমান্ত এলাকাগুলোতে সেনা সদস্যদের বর্ডার গার্ড পুলিশ (বিজিপি)-এর পোষাক পরিয়ে সীমান্ত রক্ষী বাহিনী হিসেবে মোতায়েন করে আসছে।
তিনি বলেন, ‘আমরা এতদিন জানতাম বাংলাদেশ-মিয়ানমার সীমান্তের ওপারে বিজিপি সদস্যরা দায়িত্ব পালন করছে। কিন্তু এখন তা মিথ্যে প্রমাণ হয়েছে। সেক্টর কমান্ডার বলেন, মায়ানমার বরাবরই দাবি করে আসছে- সেনাবাহিনীর অবস্থান বর্ডার গার্ড পুলিশের পেছনে। কিন্তু উক্ত সেনা সদস্য ধরা পড়ার পর আসল ঘটনা বেরিয়ে এসেছে।’