বৃহস্পতিবার, ১৮ এপ্রিল ২০২৪, ০১:৫৬ পূর্বাহ্ন
কঠোর লকডাউন কার্যকরের লক্ষ্যে বরিশালে আজ শনিবার থেকেই খাবার হোটেল ও রেস্তোরা বন্ধের সিদ্ধান্ত নেয় স্থানীয় প্রশাসন। এতে করে বেশ ভোগান্তির মধ্যে পরে বরিশাল শের ই বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের রোগীর স্বজনরা। রোগীদের খাবার হাসপাতাল থেকে সরবরাহ করা হলেও ভোগান্তির শেষ ছিলো না স্বজনদের।
খাবার না পেয়ে মহাসংকটে পরা এসব মানুষদের পাশে মানবিক দিক বিবেচনা করে পাশে দাড়িয়েছে হাসপাতালের সামনের হোটেল মালিকরা। খিচুড়ি রান্না করে তা বিনামূল্যে বিতরণ করা হয়েছে রোগীর স্বজনদের মাঝে। শনিবার (৩রা জুলাই) সকালে হাসপাতালের মূল গেট সংলগ্ন হোটেলগুলোর সামনে বিনামূল্যে এই খিচুড়ি বিতরণ করায় খুশি হয় সংকটে পরা মানুষগুলো। হাসপাতাল সূত্র জানিয়েছে, এ হাসপাতালটিতে প্রতিদিন গড়ে দেড়সহস্রাধিক রোগী ভর্তি থাকে।
প্রতি রোগীর সঙ্গে গড়ে ৩ জন থাকেন স্বজন। সে হিসাবে প্রতিদিন শেবাচিম হাসপাতালে রোগী ও স্বজন থাকেন ৫ সহস্রাধিক। হাসপাতাল থেকে শুধুমাত্র রোগীদের খাবার দেয়া হলেও তা মানসম্পন্ন না হওয়ায় বেশীরভাগ রোগী সেটা গ্রহন করেন না। প্রত্যন্ত এলাকা থেকে আসা রোগী ও স্বজনরা হাসপাতালের সামনের এলাকার হোটেল থেকে ৩ বেলা খাবার কিনে খান।
প্রশাসন হোটেলগুলো বন্ধ করে দেয়ায় শনিবার সকালে ঘুম থেকে উঠেই খাবার সংকটে পড়েন রোগী ও স্বজনরা। শেবাচিম হাসপাতাল সংলগ্ন বান্দ রোডে ‘নন্দীনি’ হোটেলের মালিক পবিত্র দেবনাথ বলেন, শেবাচিম হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রোগী ও তাদের স্বজনদের বেশীরভাগই তিনবেলা খাবারের চাহিদা মেটান হাসপাতাল সংলগ্ন বাঁধ রোডে অবস্থিত ৯টি খাবার হোটেল থেকে।
শুক্রবার রাতে পুলিশ সদস্যরা পরবর্তী নির্দেশ না দেয়া পর্যন্ত হোটেলগুলো বন্ধ রাখার নির্দেশ দেন। ফলে শনিবার থেকে হাসপাতাল এলাকার সবগুলো খাবার হোটেল বন্ধ রয়েছে। পবিত্র দেবনাথ বলেন, শনিবার সকালে হোটেল বন্ধ দেখে খাবার নিতে রোগীর স্বজনদের মধ্যে হায়-হুতাশ শুরু হয়।
গোটা নগরীর হোটেল বন্ধ থাকায় তারা বিপাকে পড়েন। খাবারের জন্য হৈ-চৈ শুরু করে দেন। ঝুপরি চায়ের দোকানের রুটি-কলা মুহুর্তের মধ্যে শেষ হয়ে যায়। এসব মানুষদের দূর্দশা দেখে ৯ হোটেল মালিক একত্রিত হয়ে ৬ মন চাল-ডাল দিয়ে ৮টি ড্যাগে খিচুরী রান্না করে বিনামূল্যে বিতরণ করেন।
রোগীদের স্বজনরা দীর্ঘ লাইনে দাড়িয়ে সকালের খিচুরী সংগ্রহ করেন। সংখ্যা কয়েকশত হবে। দুপুর থেকে পরবর্তী বেলার খাবারের অনিশ্চয়তা রোগী ও স্বজনদের রয়েই গেছে। নগরীর সকল হোটেল রেস্তোরা বন্ধ থাকায় একই দূর্ভোগে আছেন মেস বাসিন্দা, নিন্ম আয়ের মানুষ এবং বেসরকারি ক্লিনিকে চিকিৎসাধীন রোগী ও স্বজনরা।