শুক্রবার, ২২ নভেম্বর ২০২৪, ০৮:৫৩ অপরাহ্ন
অনলাইন ডেক্স: রাঙামাটির দুর্গম পল্লী থেকে হেলিকপ্টারে নিয়ে আসা হাম ও নিউমোনিয়ায় আক্রান্ত ৫ শিশু সুস্থ হয়ে মা-বাবার কোলে ফিরেছে।
বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর চট্টগ্রাম সেনানিবাসের ২৪ পদাতিক ডিভিশনের সর্বাত্মক সহযোগিতা ও নিবিড় তত্ত্বাবধানে ১৮ দিন চট্টগ্রাম মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন থাকার পর শনিবার (১১ এপ্রিল) সকাল ১১টায় তারা ছাড়া পায়।
তারা হলো- প্রতিল ত্রিপুরা (০৫), রোকেন্দ্র ত্রিপুরা (০৬), নহেন্দ্র ত্রিপুরা (১০), রোকেদ্র ত্রিপুরা (০৮), ও দীপায়ন ত্রিপুরা (১৩)। সবাই একই পরিবারের সদস্য।
বাংলাদেশ সেনাবাহিনী সূত্রে জানা গেছে, দুই মাস ধরে রাঙামাটি জেলার বাঘাইছড়ি উপজেলার সাজেক ইউনিয়নের বিভিন্ন পাহাড়ি গ্রামে হাম ও নিউমোনিয়ার লক্ষণ নিয়ে বেশ কিছু শিশু আক্রান্ত হয়। মারা যায় ৮ জন শিশু।
সংবাদ পাওয়া মাত্রই বাংলাদেশ সেনাবাহিনী আক্রান্ত এলাকার জনসাধারণের জন্য বরাবরের মতই বাড়িয়ে দেয় তাদের সাহায্যের হাত।
এর প্রেক্ষিতে, গত ২৪ মার্চ সেনাবাহিনীর একটি চিকিৎসক দল এবং বাঘাইছড়ি উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের ২ জন ডাক্তারসহ ৮ সদস্যের এক বিশেষ চিকিৎসক দল হেলিকপ্টারযোগে উক্ত এলাকায় পৌঁছান।
তাদের লক্ষ্য ছিলো, ২ দিনে এই শতাধিক রোগীর চিকিৎসা করা। কিন্তু আক্রান্ত রোগীদের মধ্যে শিয়ালদহ পাড়ার ৫ শিশুর অবস্থা গুরুতর হওয়ায় তাদের উন্নত চিকিৎসার লক্ষ্যে চট্টগ্রাম মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালে স্থানান্তর করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।
এ সময় বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর ২৪ পদাতিক ডিভিশনের সার্বিক সহযোগিতা ও তত্ত্বাবধানে বাংলাদেশ বিমানবাহিনীর একটি বিশেষ হেলিকপ্টারযোগে তাদের প্রথমে চট্টগ্রাম সেনানিবাসে আনা হয় এবং পরবর্তীতে সেখান থেকে চট্টগ্রাম মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়।
১৮ দিন তাদের উন্নত চিকিৎসাসেবা প্রদান করা হয় এবং বর্তমানে তারা শারীরিকভাবে সম্পূর্ণ সুস্থ। আক্রান্তদের পরিবারের মাধ্যমে জানা গেছে, দুঃস্থ পরিবারের এ শিশুদের চিকিৎসাধীন সময়ে সরকারি বরাদ্দের বাইরে অন্য সব আনুষঙ্গিক খরচ সদর দপ্তর ২৪ পদাতিক ডিভিশন বহন করে।
২৪ পদাতিক ডিভিশনের জিওসি মেজর জেনারেল এসএম মতিউর রহমান বলেন, আমরা সব সময় পাহাড়িদের পাশে ছিলাম, আছি এবং ভবিষ্যতেও থাকব। এর আগেও আমরা এরকম কার্যক্রম পরিচালনা করেছি। এ ব্যাপারে কোনো প্রকার কার্পণ্য করা হবে না।
সেনাবাহিনীর এ মহানুভবতায় আক্রান্ত শিশুদের পিতা কৃতজ্ঞতা জানিয়ে বলেন, সেনাবাহিনী সাহায্যের হাত বাড়িয়ে না দিলে আমাদের পক্ষে শিশুদের জীবন বাঁচানো সম্ভব হতো না। আমরা বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর এই অবদান সারা জীবন মনে রাখবো।
‘সেই সঙ্গে কৃতজ্ঞতা ভরে স্মরণ করছি চট্টগ্রাম মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল হুমায়ুন কবির এবং চিকিৎসকদের প্রতি, যাদের অদম্য প্রচেষ্টায় আমার সন্তানেরা আজ নতুন জীবন ফিরে পেল।’