বৃহস্পতিবার, ২১ নভেম্বর ২০২৪, ০৬:২৪ অপরাহ্ন

সর্বশেষ সংবাদ :
কলাপাড়ায় পৌর বিএনপির সাংগঠনিক সমাবেশ কলাপাড়ায় নানা আয়োজনে বিশ্ব শিশু দিবস পালিত পটুয়াখালীতে (অবঃ) পুলিশ কর্মকর্তার বিরুদ্ধে থানায় জমি দখলেরঅভিযোগ জিয়া মঞ্চ বাবুগঞ্জ উপজেলার কর্মী সভা অনুষ্ঠিত গলাচিপায় খাদিজা হত্যার পলাতক আসামি গ্রেফতার কলাপাড়ায় মামলার আসামি হয়ে পালিয়ে বেড়াচ্ছেন বিএনপি’র কোষাধ্যক্ষ বাউফলে ইউএনও’র” অপসারণের দাবিতে বিক্ষোভ বরিশালের বাবুগঞ্জে ধর্ষণ ও হত্যার মামলায় দুই আসামিকে মৃত্যুদণ্ড যত দ্রুত সম্ভব বর্তমান সরকার একটি নির্বাচন দিয়ে জনগণের আশা-আকাঙ্ক্ষার বাস্তবায়ন করবে-” মেজর (অব.) হাফিজ পটুয়াখালীতে সরকারি প্রসিকিউটর (জিপি) হলেন এ্যাড,আব্দুল্লাহ ইউসুফ কলাপাড়ায় কৃষক সমিতির মানববন্ধন ও সমাবেশ বাউফলে ইউএনও’র বিচারের দাবীতে মানববন্ধন কুয়াকাটা সৈকতের পাবলিক টয়লেট থেকে এক ব্যক্তির লাশ উদ্ধার শ্রমিক ট্রান্সপোর্টের উদ্যোগে মুনাজাত অনুষ্ঠিত শোক সংবাদ। কলাপাড়ায় সাবেক চেয়ারম্যান আলহাজ্ব আবদুল মালেক শিকদার আর নেই
উদাসিনতা বাদ দিয়ে এবার দেশের মানুষের দিকে তাকান

উদাসিনতা বাদ দিয়ে এবার দেশের মানুষের দিকে তাকান

Sharing is caring!

ফারুক আহমেদ রুবেল:

বাংলাদেশে আরও ৯ জনের দেহে করোনা ভাইরাস শনাক্ত হয়েছে। ফলে দেশে মোট করোনা আক্রান্তের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৭০ জনে। এদের মধ্যে মারা গেছেন ৮জন। প্রায় প্রতিদিনই আক্রান্ত লোকের সংখ্যা বেড়ে চলেছে তার সাথে পাল্লা দিয়ে বাড়ছে শঙ্কা। কারণ উন্নত দেশগুলো এটি মোকাবেলায় হিমশিম খাচ্ছে সে তুলনায় আমরা চিকিৎসা, শিক্ষা, সংস্কৃতি ও জনসংখ্যা প্রায় সবকিছুতে পিছিয়ে থেকে এটি মোকাবেলার চিন্তা করতেই সব কিছু এলোমেলো হতে শুরু করে।

বর্তমানে দেশে যে পরিমান সমন্বয়হীনতা চলছে অন্য সময় হলে এর প্রতিবাদ নিশ্চিত রাজপথেই হতো।
করোনা ভাইরাসটি নিয়ে বাংলাদেশের সরকার শুরু থেকেই উদাসীনতার পরিচয় দিয়েছে আর প্রস্তুতি আছে, মজুত আছে, পর্যাপ্ত আছে এ জাতীয় মিথ্যাচার করেছে। আজ বাংলাদেশে করোনার ভাইরাস সংক্রামিত হয়েছে শুধুমাত্র সরকারের ব্যর্থতা ও উদাসীনতার জন্যই। চীনসহ বিশ্বের ক্ষমতাধর রাষ্ট্রগুলো যখন করোনা ভয়াবহতা উপলব্ধি করে এটি মোকাবিলার প্রস্তুতি নিচ্ছিলো বা প্রতিরোধ করছিল ঠিক সে সময়ে আমাদের দেশের সরকার ব্যস্ত ছিল বঙ্গবন্ধুর জন্মশত বার্ষিকী উৎযাপন নিয়ে। দেশের প্রায় সকল মন্ত্রণালয়, সরকারি প্রতিষ্ঠান, শিক্ষা প্রতিষ্ঠানসহ পাড়া মহল্লা গুলো ব্যস্ত হয়ে পড়েছিল। সড়কের ধারে ক্ষণ গননার জন্য শত শত ডিজিটাল ঘড়ি বসানো হলো, ২০০টাকার নতুন নোট ছাপানো, ক্যালেন্ডার ছাপানো থেকে শুরু যা যা সম্ভব প্রায় সব কিছুর উদ্যোগ নেয়া হলো হাজার কোটি টাকার বাজেটও হলো। শেষের করোনার কারণে
মোদীসহ বিশ্বনেতারা উপস্থিত হতে পারছিলেন না তখন কর্মসূচী ছোট করা হলো। সে প্রস্তুতির ১০ ভাগও যদি করোনা ভাইরাস মোকাবিলায় নেয়া হতো আজ বাংলাদেশে এ চিত্র দেখতে হতো না।

সরকারের পক্ষ থেকে নিজেদের ব্যর্থতা আড়াল করার জন্য মিথ্যার আশ্রয় নেয়া শুরু হলো। বিমানবন্দরে থার্মাল স্ক্যানার না থাকা, প্রবাসীদের কোয়ারেন্টাইনের বিষয়ে অবহেলা, চিকিৎসকদের প্রশিক্ষণ না থাকা, পর্যাপ্ত কীট না থাকাসহ সরকারের ব্যর্থতা একের পর এক বের হতে শুরু করে। অবস্থা এখন পর্যন্ত একটু স্বাভাবিক মনে হলেও যে কোন সময় তা পাল্টে যেতে পারে।

শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ। শপিংমল, পর্যটনকেন্দ্র, সরকারি অফিস, সকল প্রকারের হোটেল সব বন্ধ। গণপরিবহন, দোকানপাট, সভা-সমাবেশ, এমনকি প্রয়োজন ছাড়া বাইরে বের হওয়া বন্ধ। কোন যুক্তিতে?

যুক্তি হলো ভাইরাস যাতে ছড়াতে না পারে সে জন্য সকল প্রকারের জন সমাগম বন্ধ রাখা। তা-ই যদি হবে
তাহলে সারাদেশের গার্মেন্টস, রি-রোলিং মিল এসব খোলা কেন? কারখানাগুলো কি করোনা ভাইরাসের আওতা মুক্ত? নিশ্চয় না।

আপনি অর্থনীতির চাকা সচল রাখতে চান আবার করোনা ভাইরাসও প্রতিরোধ করতে চান। একদিকে মানুষকে ঘরে থাকার পরামর্শ দিচ্ছেন, স্বাস্থ্যবিধি মানতে বলছেন অন্য দিকে কারখানা খুলে দিয়ে লক্ষ লক্ষ শ্রমিককে মৃত্যুর ঝুঁকিতে ছেড়ে দিলেন। একই দেশের নাগরিকদের সাথে কেন এমন দ্বিচারিতা? যদি কারখানাই খোলা রাখবেন তাহলে কার স্বার্থে হাজার কোটি টাকার প্রণোদনা? উঁচু তলার মানুষরাই যখন স্বাস্থ্যবিধি মানছেন না, সামাজিক দূরত্ব- শারিরীক দূরত্ব কোন কিছুরই তোয়াক্কা করছেন না সেইখানে আপনি কিভাবে এই শ্রমিকদের কাছ থেকে এসব আশা করছেন? নাকি শ্রমিকদের মানুষ ভাবতে ভুলে গেছেন?
গার্মেন্টস শ্রমিকদের নিয়ে যখন সরকার ও মালিকদের এমন আচরণ সে সময় আমরা দেখতে পাই এক অদৃশ্য কারণে বাংলাদেশের প্রায় সকল ধর্মীয় উপসনালয়গুলো স্বাভাবিক নিয়মেই চলছে। দেশের তথাকথিত ধর্মগুরুরা! নানা রকমের অপপ্রচারে সাধারণ মানুষকে বিভ্রান্ত করছেন।

পৃথিবীর দেশে দেশে করোনা ভাইরাসটি সনাক্ত হওয়ার পরে ধর্মীয় উপসনালয়সহ সকল প্রকারের জন সমাগম নিষিদ্ধ করেছে কিন্তু আমাদের দেশে এর চিত্র ভিন্ন। অথচ ঢাকার মিরপুরে যে লোক করোনায় মারা গেলেন তিনি আক্রান্ত হয়েছেন মসজিদ থেকেই। পৃথিবীর সকল দেশে দেশের জনগণকে নিরাপদ রাখতে মসজিদ, মন্দির, প্যাগোডা, গির্জা সব লক ডাউন করা হয়েছে সেইখানে বাংলাদেশে উপাসনালয়গুলো খোলা রেখেছেন কারস্বার্থে? নাকি সরকারও মনে করে করোনা আল্লাহর গজব মুসলিমদের কিছু হবে না, দেশের প্রধানমন্ত্রী তাহাজ্জুদের নামাজ পড়েন তাই দেশে করোনা ছড়াবে না।

বিভিন্ন মহলকে খুশি রেখে জনগণের জীবন নিয়ে এ খেলা বন্ধ করুন। মানুষের নিরাপত্তা নিশ্চিত করুন। তা না হলে সব প্রতিকুলতা কাটিয়ে দেশ নিশ্চয় যেদিন স্বাভাবিক হবে সে স্বাভাবিক দেশে আপনাদের টিকে থাকা অস্বাভাবিক হয়ে যাবে।

লেখক: সভাপতি, বাংলাদেশ ছাত্র মৈত্রী।

(ফেইসবুক ওয়াল থেকে সংগৃহীত) 

নিউজটি আপনার বন্ধুদের সাথে শেয়ার করুন




© All rights reserved © crimeseen24.com-2024
Design By MrHostBD