মঙ্গলবার, ০৮ অক্টোবর ২০২৪, ০৬:৪৭ পূর্বাহ্ন
ক্রাইমসিন২৪ ডেস্ক: আসন্ন একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে খালেদা জিয়ার প্রার্থিতা ফিরে পেতে আপিল আবেদন টেকেনি। এক্ষেত্রে মাহবুব তালুকদার তার প্রার্থিতা ফিরিয়ে দেওয়ার পক্ষে থাকলেও অন্য কমিশনাররা অবৈধ ঘোষণার পক্ষে সিদ্ধান্ত দেন।
শনিবার (০৮ ডিসেম্বর) দুপুরের শুনানির পর ইসি সচিব জানিয়েছিলেন বিকেল পাঁচটায় রায় দেওয়া হবে। বিকেল সাড়ে পাঁচটার দিকে এজলাসে বসে জ্যেষ্ঠ নির্বাচন কমিশনার মাহবুব তালুকদার বলেন, আমার রায়- ‘আইনগত বিবেচনায় খালেদা জিয়ার আপিল মঞ্জুর করার পক্ষে রায় প্রদান করলাম।’
এ সময় একদল লোক উল্লাস প্রকাশ করেন। হাততালি দেয়। তখন সচিব লাউল স্পিকারে বলতে থাকেন- ‘এটি ফুল কোর্টে রায় নয়।’
এরপরপরই নির্বাচন কমিশনার রফিকুল ইসলাম বলেন, ‘যে কোনো দণ্ডপ্রাপ্ত লোককে বিবেচনা করতে পারি না। আমার রায় হলো- এ আপিল মঞ্জুর করা যায় না। না মঞ্জুর করা হলো।’
এবার আরেক দল লোক উল্লাস প্রকাশ করেন। হাততালি দেন।
তখন নির্বাচন কমিশনার ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) শাহাদাৎ হোসেন চৌধুরী বলেন, ‘সংবিধানের ৬৬ ধারা অনুযায়ী, এ রায় নামঞ্জুর করা হলো।’
তারপর নির্বাচন কমিশনার কবিতা খানম বলেন, ‘এখন পর্যন্ত দণ্ড বহাল আছে, রিটার্নিং কর্মকর্তার অর্ডারের যে বক্তব্য এবং স্পিরিট দেখছি, দণ্ডপ্রাপ্ত হিসেবে আখ্যায়িত করা হয়েছে। গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশে (আরপিও) যে কথাটি এসেছে সেটা মেয়ার ওমিশন। দণ্ডপ্রাপ্ত হিসেবে নামঞ্জুর।’
কমিশনারদের নিজের রায় উপস্থাপন করার পর প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কেএম নূরুল হুদা বলেন, ‘নির্বাচন কমিশনার শাহাদাত, নির্বাচন কমিশনার কবিতা এবং নির্বাচন কমিশনার রফিকুল ইসলাম দণ্ড বহাল আছে বলে যে বক্তব্য দিয়েছেন, সে পরিপ্রেক্ষিতে আমি নামঞ্জুর করলাম।’
ইসি সচিব হেলালুদ্দীন আহমদ এরপর ঘোষণা করেন, পাঁচজন নির্বাচন কমিশনারের মধ্যে চারজন খালেদা জিয়ার আপিল আবেদন নামঞ্জুর করেছেন। একজন মঞ্জুর করেছেন বিধায় চার-এক ভোটে আপিল আবেদন নামঞ্জুর ঘোষণা করা হলো।
বিএনপি চেয়ারপারসন ও তিনবারের সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়া ফেনী-১, বগুড়া-৬ ও ৭ আসন থেকে একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে প্রার্থী হওয়ার জন্য মনোনয়নপত্র দাখিল করেছিলেন।
জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলায় সাজাপ্রাপ্ত হওয়ায় গত ২ ডিসেম্বর খালেদা জিয়ার মনোনয়নপত্র বাতিল করেন রিটার্নিং কর্মকর্তারা। তাদের সিদ্ধান্তের পরিপ্রেক্ষিতে তিনি পরবর্তীতে নির্বাচন কমিশনে প্রার্থিতা ফিরে পেতে আপিল করেন। কিন্তু সেই আপিলেও তিনি টিকলেন না। ফলে বিএনপি প্রধানের নির্বাচন অংশ নেওয়ার একমাত্র ভরসার জায়গা উচ্চ আদালত।