বৃহস্পতিবার, ৩১ অক্টোবর ২০২৪, ১১:৩১ পূর্বাহ্ন
বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্রলীগ পরিচয়ে বেপরোয়া হয়ে উঠেছে বেশকিছু শিক্ষার্থী। তাদের কর্মকাণ্ডে অতিষ্ঠ হয়ে সাধারণ শিক্ষার্থীরা। কিন্তু সাংগঠনিক ক্ষমতার প্রভাবে প্রতিবাদ করার সাহস পান না অনেকেই। গত দুই সপ্তাহে শিক্ষার্থী নির্যাতনের চারটি ঘটনা ঘটলেও কর্তৃপক্ষের কাছে লিখিত অভিযোগ পড়েছে মাত্র দুটি। নির্যাতনের মুখে ইওকমধ্যে ক্যাম্পাস ছেড়েছেন ৩ শিক্ষার্থী।
এদিকে এসব নির্যাতনের ঘটনা প্রচার-প্রকাশ করায় মানববন্ধন করে গণমাধ্যমের বিরুদ্ধে হুঙ্কার দিয়েছে ছাত্রলীগ পরিচয়ধারীরা। সোমবার (৯ মার্চ) বিশ্ববিদ্যালয়ের অ্যাকাউন্টিং অ্যান্ড ইনফরমেশন বিভাগের ছাত্র মো. রাফসান জানী একটি লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন। অভিযোগে তিনি গত ৫ মার্চ ছাত্রলীগ নামধারী হাফিজুল ইসলাম, আবদুল হাকিম সুমন ও হাসিব শেখ সাইমুনের বিরুদ্ধে তাকে নির্যাতনের অভিযোগ আনেন। অভিযুক্তরা ছাত্রলীগের মহিউদ্দিন আহমেদ শিফাতের অনুসারী।
গত ২৬ ফেব্রুয়ারি ফিন্যান্স আন্ড ব্যাংকিং বিভাগের ছাত্র মো. শাহাজালাল বিশ্ববিদ্যালয়ের শেরেবাংলা হলের প্রভোস্ট বরাবর আবেদনে তাকে হত্যার হুমকি ও শারীরিক নির্যাতনের অভিযোগ আনেন। অভিযোগে তিনি বলেন, গত ২৫ ফেব্রুয়ারি ডেকে নিয়ে কোনো কারণ ছাড়াই শান্ত, নওয়াব, রাদ ও সাঈফসহ কয়েকজন তাকে নির্মমভাবে নির্যাতন করেন। এই ঘটনায় তাদের কয়েকজনকে সাময়িক বহিষ্কার করে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। একই দিন বিকালে ক্যাম্পাসে আধিপত্য বিস্তারের জের ধরে চার শিক্ষার্থীকে কুপিয়ে আহত করা হয়। এই হামলায়ও ছাত্রলীগ পরিচয়ধারীরা জড়িত বলে অভিযোগ রয়েছে।
এদিকে, ১ মার্চ বিকালে বর্বর নির্যাতনের শিকার হন গণিত বিভাগের এক ছাত্রী। তিনি দাবি করেন, মুখোশাধারীরা তাকে লাঠিসোঁটা দিয়ে মারধর এবং পদদলিত করেন। শুধু তাই নয়, তারা জ্যামিতি বক্সের সুচালো কাঁটা দিয়ে খুঁচিয়ে খুঁচিয়ে নির্যাতন করেছে। এছাড়া ক্রিকেট স্ট্যাম্প দিয়ে তার যৌনাঙ্গে আঘাত করার অভিযোগ করেন ওই ছাত্রী।
অপরদিকে, ক্যাম্পাসে গতকাল সকালে ছাত্রলীগ নামধারী মহিউদ্দিন আহমেদ শিফাত, আলীম সালেহী, আবুল খায়ের আরাফাত, সিহাব, জিহাদ, জারিন তসনিম ডায়না ও আবির হাসান মানববন্ধন করে। এ সময় সম্প্রতি শিক্ষার্থী নির্যাতনের কোনো ঘটনার বিচার দাবি না করে সেগুলো গণমাধ্যমে প্রকাশ করাকে অপপ্রচার উল্লেখ করে ক্ষোভ প্রকাশ করে তারা।
বরিশাল সচেতন নাগরিক কমিটি-সনাকের সভাপতি অধ্যাপক শাহ সাজেদা বলেন, এখনই এর বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা না নিলে শিক্ষার্থী নির্যাতনের ঘটনা বাড়তেই থাকবে।
বরিশাল প্রেস ক্লাবের সভাপতি অ্যাডভোকেট মানবেন্দ্র বটব্যাল বলেন, গণমাধ্যমের বিরুদ্ধে কাল্পনিক অভিযোগ তুলে মানববন্ধন নৈতিকতা বিবর্জিত কাজ।
সূত্র: সময় টিভি ও দৈনিক শিক্ষা।