রবিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৫, ০১:০৯ পূর্বাহ্ন
বরিশাল বিভাগে ১৮ দিনে ডায়রিয়ায় আক্রান্তের সংখ্যা ২৯ হাজার ১১৪। সব থেকে বেশি আক্রান্ত দ্বীপ জেলা ভোলায়। সেখানে আক্রান্তের সংখ্যা ৭ হাজার ৪২১। পটুয়াখালীতে আক্রান্ত ৬ হাজার ৭৩৭, পিরোজপুরে ৩ হাজার ৭৫০, বরগুনায় ৪ হাজার ৩৫৩ এবং ঝালকাঠিতে আক্রান্তের সংখ্যা ২ হাজার ৯৯৮। বরিশাল বিভাগে ডায়রিয়ার প্রকোপ দেখা দিয়েছে।
দিনে দিনে আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা বেড়েই চলেছে। এতে খোদ স্বাস্থ্য বিভাগ উদ্বিগ্ন। স্বাস্থ্য কর্মকর্তারা বলছেন, বরিশালে এর আগে এমন ডায়রিয়ার প্রকোপ দেখা যায়নি। পান্তা কিংবা শরবতে দূষিত পানি ব্যবহারের কারণেই এই রোগ ছড়িয়ে পড়ছে বলে তাদের মত। বরিশাল বিভাগীয় স্বাস্থ্য পরিচালক বাসুদেব কুমার দাস নিউজবাংলাকে বলেন, ‘হঠাৎ করে ডায়রিয়ায় আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা বৃদ্ধি পাওয়ায় বিষয়টি নিয়ে অনুসন্ধান করেছি আমরা। শহরের মানুষ তেমন আক্রান্ত না হলেও, বেশি আক্রান্ত হচ্ছে উপকূল ও গ্রামাঞ্চলের মানুষ।’ তিনি বলেন, মার্চ ও এপ্রিল মাসে প্রচণ্ড গরম পড়ে।
গরমে একটু আরাম পেতে গ্রাম ও উপকূলের মানুষ সাধারণত প্রচুর পান্তা খেয়ে থাকে। ফুটানো কিংবা চাপকলের বিশুদ্ধ পানি দিয়ে পান্তা তৈরি করলে কোনো সমস্যা হতো না। কিন্তু গ্রামের গৃহবধূরা পান্তা তৈরিতে সুপেয় পানি ব্যবহার করেন না। তারা পুকুর বা ডোবার দূষিত পানি ঢেলে দেন ভাতে। এই দূষিত পানিই ডায়রিয়ার প্রধান কারণ হিসেবে শনাক্ত করা গেছে। স্বাস্থ্য পরিচালক আরও বলেন, ‘ডায়রিয়ার প্রাদুর্ভাবের আরেকটি কারণ আমরা লক্ষ করেছি। সেটা হলো, গরমের হাত থেকে স্বস্তি লাভ করতে অনেকে রাস্তার পাশে শরবত কিংবা বরফ দেয়া আখের রস পান করেন। শরবত বা বরফ তৈরিতে ব্যবহার করা হচ্ছে নদী বা খালের দূষিত পানি। মূলত যে বরফ মাছ সংরক্ষণের জন্য তৈরি করা হয়, সেই বরফই রাস্তার পাশের ওই শরবতে ব্যবহার করা হয়। তা পান করে অনেকে ডায়রিয়ায় আক্রান্ত হচ্ছে।
বাসুদেব কুমার দাস জানান, বরিশাল বিভাগে ১৮ দিনে ডায়রিয়ায় আক্রান্তের সংখ্যা ২৯ হাজার ১১৪। সব থেকে বেশি আক্রান্ত দ্বীপ জেলা ভোলায়। সেখানে আক্রান্তের সংখ্যা ৭ হাজার ৪২১। পটুয়াখালীতে আক্রান্ত ৬ হাজার ৭৩৭, পিরোজপুরে ৩ হাজার ৭৫০, বরগুনায় ৪ হাজার ৩৫৩ এবং ঝালকাঠিতে আক্রান্ত ২ হাজার ৯৯৮ জন।
আক্রান্তদের যথাযথ চিকিৎসা দেয়া হচ্ছে বলেও জানান স্বাস্থ্য বিভাগের বরিশালের এই কর্মকর্তা। তিনি বলেন, মানুষ একটু সচেতন হলেই পানিবাহিত এই রোগ প্রতিরোধ সম্ভব। পান্তা খেতে মানা নেই। তবে তা তৈরি করতে হবে বিশুদ্ধ পানি দিয়ে। আর কেউ ডায়রিয়ায় আক্রান্ত হলে তাকে স্যালাইন খেতে হবে। পাশাপাশি স্বাভাবিক খাবারও খেতে হবে। পরিস্থিতি খারাপের দিকে গেলে রোগীকে অবশ্যই হাসপাতালে নিতে হবে।