শুক্রবার, ২২ নভেম্বর ২০২৪, ১২:৩৮ পূর্বাহ্ন
বরিশাল নগরীজুড়ে মশার উপদ্রব হঠাৎ করে বেরে যাওয়া অতিষ্ঠ হয়ে উঠেছে নগরবাসী। মশক নিধন ওষুধ না প্রয়োগ করায় এই সমস্যা বৃদ্ধি পাচ্ছে বলে মনে করছেন তারা। তাছাড়া করোনা ভাইরাসের আতংকের পাশাপাশি এখন চিকুনগুনিয়া ও ডেঙ্গু রোগের ভয় ঢুকেছে নগরবাসীর মনে। এদিকে বরিশাল সিটি কর্পোরেশনের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা বলছে তাদের পর্যাপ্ত মশক নিধণ ওষুধ রয়েছে এবং এর কার্যক্রমও চলমান রয়েছে।
অভিযোগ রয়েছে, ৫৮ বর্গ কিলোমিটারের বরিশাল নগরীর ৩০টি ওয়ার্ডের ড্রেন ও ঝোপ ঝাড় সঠিক সময় পরিষ্কার না করায় মশার উপদ্রব বেশী বৃদ্ধি পেয়েছে। এখন মশার উপদ্রব বরিশালে এতই বেড়ে গেছে যাতে সাধারণ মানুষ অতিষ্ঠ হয়ে উঠেছে।
নগরীর কালিজিরা এলাকার বাসিন্দা সালেকুল ইসলাম জানান, মশা এতো বৃদ্ধি পেয়েছে যে সন্ধ্যার পর কোথাও দাড়ানোই মুশকিল হয়ে দাড়িয়েছে। তার উপর গতবছর চিকুনগুনিয়া ও ডেঙ্গু যে আতংক ছড়িয়েছে তাতে এই বছর আমরা বেশ আতংকের মধ্যে রয়েছি।
সাগরদি পুল এলাকার বাসিন্দা শাহিন রহমান বলেন, এমনিতেই দেশব্যাপী করোনার আতংক ছড়িয়েছে ব্যাপক হারে। করোনার প্রতিরোধে কোনো ভ্যাকসিন না থাকায় এই সমস্যা আরো বৃদ্ধি পাওয়ার আশংকা আমাদের। এরপরে আবার ডেঙ্গুর ভয়। ড্রেনগুলো অপরিষ্কার অবস্থায় রয়েছে। মশার লার্ভাগুলো যে সময় ধ্বংস করা দরকার ছিলো সেসময় কার্যত কোনো পদক্ষেপ গ্রহণ করেনি বরিশাল সিটি কর্পোরেশন। শুধু তাই নয় মশার উপদ্রব বেশ বেরে যাওয়া সত্বেও এখনো সিটি কর্পোরেশনের পক্ষ থেকে কোনো জোড়দার উদ্যেগ নেওয়া হচ্ছে না। মনে হচ্ছে এ বছরেও মশা আমাদের ভোগাবে ব্যাপক হারে।
বিএম কলেজের ছাত্র ফরিদুল মাঝি জানান, পরীক্ষা এবং ক্লাস দুটোই চলছে কলেজে। বতর্মানে করোনার সতর্কতার জন্য বন্ধ তবে কলেজের কক্ষগুলোতেও মশার উপদ্রব। শুধু তাই নয় ছাত্রাবাসগুলোতেও এই সমস্যা আরো। রুমে থাকলেই কয়েল ব্যবহার করতে হয়। তাতেও যেন কাজ হয় না। আর যাদের শ্বাসকষ্ট তারা তো আরো বড় সমস্যায় রয়েছে। বাসা বাড়িতে কোথাও ঠিকভাবে বসা যায় না। মশার এত উপদ্রব সত্যিই বিরক্তকর। সিটি কর্পোরেশনের উচিৎ ছিলো আরো আগে থেকে ব্যবস্থা নেওয়া। কিন্তু তারা এখন পর্যন্ত কার্যত কোনো ব্যবস্থা গ্রহণ করছে না। যেটা হতাশাজনক বলে মনে করছি।
দক্ষিণ আলেকান্দা এলাকার সোনালী বেগম জানান, সন্ধ্যার আগে থেকেই ফ্লাটের দরজা জানালা সব বন্ধ করে বসে থাকতে হয়। দম বন্ধকর অবস্থায় থাকতে হয় মশার উপদ্রবের কারণে। সিটি কর্পোরেশনের দ্রুত জোড়দার হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন এই নারী।
এসকল বিষয়ে বরিশাল সিটি কর্পোরেশনের পরিচ্ছন্ন কর্মকর্তা ডা: রবিউল ইসলাম জানান, মশক নিধন কার্যক্রম চলমান রয়েছে। প্রতিদিন দুইটা টিমে ১৫জন করে মোট ৩০জন ঝটিকা অভিযান পরিচালনা করছে। মশার পরিমান ও উপদ্রব বেরে যাওয়ায় এই ঝটিকা অভিযান পরিচালনা পরিচালনা করা হচ্ছে। এই ৩০জন যেসব এলাকায় মশার উপদ্রব বেশি সেসব এলাকায় মশক নিধন করে থাকে। অবশ্য স্বাভাবিক ভাবেও ৩০টি ওয়ার্ডে ১ জন করে ৩০জন মশক নিধন ওষুধ প্রয়োগ করে থাকে। ৮ মার্চ থেকে আমাদের পক্ষ থেকে মশক নিধন কার্যক্রম শুরু করা হয়। তাছাড়া পর্যাপ্ত ওষুধেরও মজুদ রয়েছে। নগরীর মধ্যে থাকা ড্রেন ও ঝোপঝাড়গুলো পরিষ্কার করছি যাতে মশার পরিমান বাড়তে না পারে। তিনি বলেন, ডেঙ্গু ও চিকুনগুনিয়ার কথা চিন্তা করে এটা আমাদের এ্যাডভান্স কাজ।
সূত্র যুগান্তর