সোমবার, ২১ এপ্রিল ২০২৫, ০৯:০৯ অপরাহ্ন
অনলাইন ডেক্স: বরিশাল আদালতে পৃথক মাদক মামলায় ১২ আসামী দোষী প্রমাণিত হওয়ার পর জেলে না দিয়ে ব্যতিক্রমী সাজায় এক বছরের প্রবেশনে (পরীক্ষাকালে) মুক্তি দিয়েছিলেন বিচারকরা। তারা গত এক বছর সমাজসেবা অধিদপ্তরের প্রবেশন অফিসারের তত্ত্বাবধানে থেকে কেউ হয়েছেন জনপ্রতিনিধি, ব্যবসায়ী কেউ বা মৎস্যজীবী।
ব্যতিক্রমী এই সাজাকালীন সময়ে মাদক সেবন ও বিক্রি বন্ধ করে অংশ নিয়েছেন মাদক বিরোধী নানা কর্মকাণ্ডে। পরিবেশ রক্ষায় লাগিয়েছেন গাছ, ধর্মীয়সহ বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে দান করেছেন সাধ্যমতো।
আসামীরা প্রবেশনকালীন সময়ে আদালতের নির্দেশনা মতো জীবন পরিচালনা করেছেন। বুধবার আদালতে প্রবেশন সময়ের চূড়ান্ত প্রতিবেদন দিয়েছেন জেলা সমাজসেবা অধিদপ্তরের প্রবেশন অফিসার সাজ্জাদ পারভেজ। এর আগে জেলা প্রশাসন কার্যালয়ের তৃতীয় তলায় ১২ জনকে নিয়ে কাউন্সিলিং করেন প্রবেশন অফিসার।
বরিশাল জেলার একটি ইউনিয়নে জনপ্রতিনিধি (ইউপি সদস্য) নির্বাচিত হওয়া যুবক মোতালেব সরকার (ছদ্মনাম) জানান, মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনের মামলার দায় স্বীকারের পর আদালত আমাকে প্রবেশনে সংশোধনের জন্য পাঠায়। গত এক বছর আদালতের নির্দেশনা মেনে জীবনযাপন করে নিজ এলাকার জনপ্রতিনিধি নির্বাচিত হয়েছি।
নগরীর বাসিন্দা রফিকুল হাসান (ছদ্ম নাম) বলেন, মাদকসহ আটকের পর আদালত তাকে মাদক থেকে বিরত ও সামাজিক কার্যক্রমে অংশ নিতে বলেন। তিনি এখন মাদক সংশ্লিষ্টতা ছেড়ে উজিরপুর উপজেলায় ব্যবসা করছেন।
শরিফুল ইসলাম (ছদ্মনাম) জানান, আদালতের নির্দেশনা মেনে একটি কওমী মহিলা মাদ্রাসার নির্মাণকাজে দানসহ মাদক বিরোধী প্রচারণা চালিয়েছেন। বর্তমানে তিনি মাছচাষ করে পরিবারের প্রধান উপার্জনক্ষম ব্যক্তিতে পরিণত হয়েছেন।
প্রবেশন অফিসার সাজ্জাদ পারভেজ জানান, চূড়ান্ত প্রতিবেদন দেওয়ায় শীগগিরই তারা সাজা থেকে মুক্তি পাবেন। গত এক বছর কাজের পর্যবেক্ষণ ও পরামর্শদান ছাড়াও তাদের সরকারিভাবে সহায়তা করা হয়েছে, যা ভবিষ্যতেও চলমান থাকবে।
মাদক বিরোধী কার্যক্রমে আরও গতি আনতে তাদের জাতীয় যুব পুরস্কার প্রাপ্ত স্বেচ্ছাসেবী সামাজিক সংগঠন আবিষ্কারের উদ্যোগে মাদক বিরোধী শ্লোগান সম্বলিত টিশার্ট ও প্লেকার্ড দেওয়া হয়।