বৃহস্পতিবার, ২১ নভেম্বর ২০২৪, ০৯:১৯ অপরাহ্ন
জিয়াউল করিম মিনার: প্রাচ্যের ড্যান্ডি নামে পরিচিত নারায়ণগঞ্জ। বাংলাদেশের মধ্যাঞ্চলের ঢাকা বিভাগের একটি জেলা। অত্যন্ত প্রাচীন এবং প্রসিদ্ধ সোনারগাঁও এ জেলার অন্তর্গত। শীতলক্ষ্যা নদীর পাড়ে অবস্থিত নারায়ণগঞ্জ। ৬৮৩.১৪ বর্গকিলোমিটার আয়তনের এ জেলাটি বাংলাদেশের সবচেয়ে ছোট জেলা। রাজধানী ঢাকার সাথে ও রয়েছে এ জেলার সীমানা।
সারাবিশ্বেই যখন চলছে (কোভিড-১৯) করোনা ভাইরাসের মহামারি। বিশ্বের বড় বড় দেশগুলো এ ভাইরাসের ভয়াল থাবাকে সামাল দিতে হিমশিম অবস্থায় পড়েছে। বাংলাদেশেও চলছে এই মহামারি, যার টক অব দ্যা বাংলাদেশ হিসেবে চিহ্নিত হয়েছে নারায়ণগঞ্জ।
এখন পর্যন্ত করোনা ভাইরাসে জেলায় মোট আক্রান্তের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৭৭ জনে। এদের মধ্যে সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরেছেন ৩ জন ও মারা গেছেন ৯ জন। গত ২৪ ঘণ্টায় মোট আক্রান্ত ১৬ জন ও ২ জন মারা গেছেন। গণনায় প্রতিদিনই বৃদ্ধি পাচ্ছে এ জেলায় করোনায় সংক্রমণের হার। হিসাব অনুযায়ী আক্রান্ত প্রতি ৮ জনের একজন মারা যাচ্ছেন।
এ অঞ্চলটি ব্যবসায়িক অঞ্চল নামে পরিচিত। অঞ্চলের ব্যবসায়ের চাকা সচল থাকলে জেলায় বিভিন্ন এলাকায় জড়িত কয়েক লাখ শ্রমিককেরা ভালো থাকে, ভালো থাকে তাদের পরিবার। আর এ অঞ্চল অচল থাকলে ভালো থাকে না এখানকার ব্যবসায়ীরা, চাকরিজীবীরা ও শ্রমিকরা।
শহরের পাইকারি বাজার নিতাইগঞ্জ, শিল্প এলাকা ফতুল্লার বিসিক, শিবু মার্কেট, আদমজী ইপিজেড, কাঁচপুর শিল্পাঞ্চলসহ বিভিন্ন স্থানে নেই ব্যবসায়িক আনাগোনা ও ব্যস্ততা। সদা প্রাণচঞ্চল এ নারায়ণগঞ্জ যেন করোনার ভয়াল থাবায় একেবারেই থমকে গেছে।
কেমন আছে নারায়ণগঞ্জ সেটি জানতে জেলার বিভিন্ন এলাকা ঘুড়ে দেখা গেলো, শহরের প্রধান প্রধান সড়কগুলো একেবারেই ফাঁকা। শহরে বাজার, সুপারশপ ও বিভিন্ন স্থানে ওষুধের দোকানগুলো খোলা রয়েছে। বিশেষ প্রয়োজন ছাড়া শহরের প্রধান প্রধান সড়কগুলোতে তেমন মানুষের জটলা দেখা যায় না। এমনকি সুরক্ষার অংশ হিসেবে স্থানীয়রা সচেতন হয়ে সংক্রমনের বিস্তার রোধে প্রায় এলাকায় বাঁশ দিয়ে প্রবেশপথ বন্ধ করে দিয়েছে। কিন্তু শহড়ের ভিতরের পাড়া মহল্লার চিত্রটা একেবারেই ভিন্ন। চায়ের দোকান গুলো অল্প পরিসরে খুলে বিক্রি করছে হরদম চা আর এতেই দোকানের সামনে জটলা হয় সাধারন মানুষের। আবার যখন টহল পুলিশ আসে তখন দ্রুত দোকান বন্ধ করে সটকে পড়ে দোকানীরা। এ যেনো এক চোর পুলিশ খেলা।
সচেতন মহল মনে করেন, চীনের উহান যেমন সবার আগে আক্রান্ত হয়ে আবার সবার আগে সুস্থ স্বাভাবিক হয়ে উঠেছে ঠিক তেমনি আমাদের নারায়ণগঞ্জ আগে আক্রান্ত হয়েছে আবার আগেই স্বাভাবিক পরিস্থিতিতে ফিরে আসবে। আবারও সেই কর্মচাঞ্চল্যতা ফিরে পাবে চিরচেনা সেই নারারায়ণগঞ্জ।
এদিকে করোনা প্রতিরোধ ব্যবস্থায় নিরলস কাজ করে যাচ্ছেন স্থানীয় প্রশাসন। সরকারি সার্বিক নির্দেশনা কার্যকর করতে নিয়মিত টহল ব্যবস্থা জোড়দার, নজরদারি সহ জনসচেতনতা মূলক প্রচারনা অব্যহত রেখেছেন। করোনা ভাইরাসের শুরু থেকেই মানুষকে ঘরে থাকতে আহ্বান করে যাচ্ছেন তারা।
আতঙ্ক না হয়ে সচেতন হউন নিজে বাঁচুন, অন্যকে বাঁচতে দিন। ভালো থাকুন আপনি, ভালো থাকুক বাংলাদেশ এমনটাই প্রত্যাশা।