বৃহস্পতিবার, ০৫ ডিসেম্বর ২০২৪, ০৮:০৭ পূর্বাহ্ন

সর্বশেষ সংবাদ :
পটুয়াখালী ও বাউফলে আগরতলায় বাংলাদেশের উপ হাইকমিশনার অফিসে হামলার প্রতিবাদে বিক্ষোভ সমাবেশ কলাপাড়ায় প্রীতি ফুটবল ম্যাচ অনুষ্ঠিত কলাপাড়ায় ডাকাত দলের ৬ সদস্য আটক মৎস্যজীবী দলের দোয়া মুনাজাত বাউফলে ক্ষুদ্র ও প্রান্তিক কৃষকদের মাঝে বিনামূল্যে সার ও বীজ বিতরণ বাউফলে আগষ্টের গনঅভ্যুত্থানে নিহত শহীদদের উদ্দেশ্যে স্মরণ সভা অনুষ্ঠিত কলাপাড়ায় তারেক রহমান’র মুক্তির খবরে আনন্দ মিছিল কলাপাড়ায় উড়ন্ত মৃদু বিষধর বিলুপ্তপ্রায় লাউডগা সাপ উদ্ধার কলাপাড়ায় যাত্রীবাহি ৩ টি বাস থেকে ২৫ মন জাটকা ইলিশ জব্দ কলাপাড়ায় শের-ই বাংলা নৌ ঘাঁটিতে নৌবাহিনীর নবীন নাবিকের শিক্ষা সমাপনী কুচকাওয়াজ অনুষ্ঠিত মামলা থেকে তারেক রহমানকে অব্যাহতি দেওয়ায় দোয়া মাহফিল শ্রমিকদলের আলোচনা সভা এবং দোয়া মুনাজাত নগরীতে নিখোঁজ কলেজ ছাত্রী মিলা বাউফলে একই রাতে দুই বাড়িতে ডাকাতি বৈষম্য বিরোধী আন্দোলনে শহীদদের স্মরণে সরকারি মোজাহার উদ্দিন বিশ্বাস কলেজের কর্মসূচি
গলাচিপায় ঘড়বাড়ি ভাংচুর ও নিরাপরাধ ব্যক্তিকে আসামী করায় আদালতে মামলা !

গলাচিপায় ঘড়বাড়ি ভাংচুর ও নিরাপরাধ ব্যক্তিকে আসামী করায় আদালতে মামলা !

Sharing is caring!

মু. জিল্লুর রহমান জুয়েল  (পটুয়াখালী): পটুয়াখালীর গলাচিপায় রিয়াজ হত্যা মামলার আসামীদের গরু, মহিষ, ছাগল, হাঁস- মুরগী লুট ও ঘর-বাড়ী ভাংচুর করা হয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে । স্থানীয় প্রতিনিধির পাঠানো তথ্যে জানা যায়,  
 পানপট্টি ইউপি চেয়ারম্যান, ইউপি সদস্য, ইউপি সদস্যা ও চৌকিদার- দফাদারদের সহযোগিতায় কিছু মালামাল উদ্ধার করা হয়। এ ছাড়া একই পরিবারের তিনজনকে রিয়াজ হত্যা মামলার আসামী করা সত্ত্বেও ওই পরিবারের কুদ্দুস মুন্সীকে নতুন করে ওই হত্যা মামলায় জড়ানোর পায়তারা চালানোর অভিযোগ উঠেছে হত্যা মামলার বাদী লিটন হাজীর বিরুদ্ধে। 
হত্যা মামলার বাদী লিটন হাজী হচ্ছেন তুলারাম এলাকার নিহত রিয়াজ হাজীর বড় ভাই। আর কুদ্দুস মুন্সী হচ্ছেন একই এলাকার আজাহার মুন্সীর ছেলে। 
এ হত্যার ঘটনার সাথে কোনভাবেই কুদ্দুস জড়িত ছিলেন না বলে কুদ্দুসের পরিবারের দাবী। কারন ঘটনা যখন ঘটে তখন কুদ্দুস মোল্লা ছিলেন গলাচিপাতে। সংঘর্ষের কথা শুনে গলাচিপা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাকে বিষয়টি অবহিত করে পুলিশ নিয়ে সেখানে হাজির হন।  কী কারনে কুদ্দুসকে নতুন করে রিয়াজ হত্যা মামলায় বাদীপক্ষ জড়াতে চায় তা কুদ্দুসের পরিবারের কেউই বলতে পারেন না।
হত্যা মামলার আসামী একই পরিবারের তিনজন হচ্ছেন কুদ্দুসের মেঝ ভাই জলিল মুন্সী, ছোট ভাই হাবিব মুন্সী ও কুদ্দুসের ছেলে হাসান মুন্সী (১৪)। ঘটনাসূত্রে জানা যায়, প্রতিদিনের ন্যায় কুদ্দুস সকাল নয়টায় গলাচিপা মৎস্য আড়তপট্টিতে তার মাছের গদিতে আসেন এবং বাড়ি ফেরেন বিকেল পাঁচটায়। ঘটনার দিন মোবাইল ফোনে খবর পেয়ে কুদ্দুস গলাচিপা থানায় এসে পুলিশের সাহায্য চেয়েছে যাহাতে বাদীপক্ষের লোকজন কুদ্দুসের পরিবারের উপরে আক্রমন করতে না পারে। কিন্তু কুদ্দুস বাড়িতে পুলিশ নিয়ে আসার আগেই বাদীপক্ষরা কুদ্দুসের বাড়িতে অনধিকার প্রবেশ করে অতর্কিতভাবে কুদ্দুসের পরিবারসহ আসামীপক্ষের উপর দেশীয় অস্ত্র রামদা, লাঠিসোঠা ও লোহার চল দিয়ে আক্রমন চালায় এবং  এতে কুদ্দুসের পরিবারসহ আসামীপক্ষের সাতজন গুরুতর আহত হয় বলে অভিযোগ উঠেছে । 
এতে করে আসামীপক্ষের হাবিবের মাথায় বাদীপক্ষের রামদার দুটি কোপ, হাতে ও পায়ে একটি করে রামদার কোপ রয়েছে। আসামীরা চিকিৎসাধীন অবস্থায় গলাচিপা হাসপাতালে ভর্তি ছিলেন। তখন তাদেরকে গ্রেফতার করে গলাচিপা থানায় নিয়ে যাওয়া হয়। পরে তাদেরকে আসামী করে পটুয়াখালী জেল হাজতে পাঠানো হয়।
আসামীদের মধ্যে গুরুতর আহত হাবিবকে জেল হাজত থেকে উন্নত চিকিৎসার জন্য বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। চিকিৎসা সেবা শেষে পুনরায় হাবিবকে জেল হাজতে পাঠানো হয়। বাড়ীতে কেহ না থাকার পরিপ্রেক্ষিতে পরে আাসামী পক্ষের ঘর ভাংচুর, গরু-মহিষ, ছাগল, হাঁস-মুরগী সহ বিভিন্ন মালামাল লুট করা হলেও প্রশাসনের সহযোগিতায় কিছু মালামাল উদ্ধার করা হয় বলে জানা যায়। অন্যদিকে বর্তমানে বাদীপক্ষরা নিরপরাধ কুদ্দুসকে নতুন করে ওই হত্যা মামলার আসামী বানানোর জন্য পায়তারা চালাচ্ছেন। সেই ভয়ে বাড়িছাড়া কুদ্দুস মানবেতর জীবন যাপন করে পালিয়ে বেড়াচ্ছেন। একদিকে নিজের ছেলে ও আপন দুই ভাই হত্যা মামলার আসামী। অপরদিকে নিজে পুলিশের ভয়ে গা ঢাকা দিয়ে পালিয়ে বেড়াচ্ছেন। কিংকর্তব্যবিমূঢ় কুদ্দুস এখন কী করবেন বুঝতে পারছেন না। এদিকে কুদ্দুসের পরিবার অসহায়ের মত প্রশাসনের দ্বারে দ্বারে ঘুরে বেড়াচ্ছেন নিরপরাধ কুদ্দুসকে ওই হত্যা মামলায় জড়ানো না হয় সেজন্য। বিপর্যস্ত ও মানসিকভাবে ভেঙ্গে পড়া কুদ্দুসের পরিবার এখন না খেয়ে মানবেতর জীবন যাপন করছেন। কুদ্দুসের পরিবারের দাবী – সঠিকভাবে তদন্ত করলে প্রকৃত আসামীরা শাস্তি ভোগ করবে। আর নিরপরাধ আসামীরা হত্যা মামলা থেকে খালাস পাবে। এ আশাই বুকে ধারন করে বসে আছেন কুদ্দুসের পরিবার। এ ব্যাপারে কুদ্দুসের স্ত্রী মর্জিনা বেগম জানান, আমার নাবালক ছেলে হাসানকে ওরা আসামী দিয়েছে। আর আমার নিরপরাধ স্বামী কুদ্দুস মুন্সীকে ওরা নতুন করে আসামী বানাতে চায়। আমি আপনাদের মাধ্যমে প্রশাসনের কাছে তদন্তপূর্বক ন্যায্য বিচার চাই। 

এ বিষয়ে গলাচিপা থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) আখতার মোর্শেদ জানান, ঘটনার সাথে জড়িত নয় এমন কাউকেই নতুন করে আসামী করা হবে না। তদন্তপূর্বক প্রকৃত আসামী সনাক্ত করা হবে। 
উল্লেখ্য, গত ২৭ জুন বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় উপজেলার পানপট্টি ইউনিয়নের তুলারাম এলাকায় জমি সংক্রান্ত জেরে দু’ পক্ষের সংঘর্ষে রিয়াজ হাজী (৩০) নামে এক যুবক বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যায়। নিহত রিয়াজ হচ্ছেন তুলারাম এলাকার আবুল কালাম হাজীর ছেলে।  ওই হত্যা মামলায় কুদ্দুসের পরিবারের তিনজনকে আসামী করা হয়। কুদ্দুসকে অন্যায়ভাবে ওই হত্যা মামলায় জড়ানোর পায়তারা চালাচ্ছেন বাদীপক্ষরা।
 এ ঘটনায় আসামীপক্ষের আব্দুল আলী মুন্সী বাদী হয়ে  গলাচিপা সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিষ্ট্রেট আদালতে বাদীপক্ষের লিটন  হাজীসহ ২৮ জনকে আসামী করে একটি লুট মামলা দায়ের করেন, যার নম্বর- সিআর ৪৮৩/২০১৯।

নিউজটি আপনার বন্ধুদের সাথে শেয়ার করুন




© All rights reserved © crimeseen24.com-2024
Design By MrHostBD