শনিবার, ০১ নভেম্বর ২০২৫, ১১:৪৩ অপরাহ্ন

সর্বশেষ সংবাদ :
আব্দুল গাফফার তালুকদারের রূহের মাগফিরাতের জন্য দোয়া রিটানিং কর্মকর্তারা চাইলে দায়িত্বরত আসন ও প্রিজাইডিং অফিসার ভোটগ্রহণ স্থগিত করতে পারবে………..নির্বাচন কমিশনার আনোয়ারুল ইসলাম সরকার বরিশালে বিএনপি নেতার চাঁদা দাবি ও হুমকি মহিপুরে স্ত্রী’র স্বীকৃতির দাবিতে তিন মাসের অন্তঃসত্ত্বা নারীর অনশন সরকারি সুবিধা প্রদানের নামে অর্থ আত্মসাতের অভিযোগে ইউপির সদস্যের বিরুদ্ধে মানববন্ধন একসঙ্গে পাঁচ সন্তানের জন্ম দিয়ে একদিকে যেমন আনন্দ অন্যদিকে ঘোর অন্ধকার কুয়াকাটায় উৎসবমুখর পরিবেশে যুবদলের ৪৭তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী পালিত কলাপাড়ায় ৯ হাজার ৪৭০ জন কৃষককে বীজ ও রাসায়নিক সার বিতরণ অসহায় মাদ্রাসা শিক্ষার্থীদের পাশে  ‘লাভ ফর ফ্রেন্ডস’ প্রতিষ্ঠা বার্ষিকীতে সদর উপজেলা যুবদলের ফ্রী মেডিকেল ক্যাম্প বঙ্গোগসাগরে ঘূর্নিঝড় মোন্থা,পায়রা বন্দরে ০২ নম্বর হুশিয়ারী সংকেত মহিপুরে রাখাইন শিশুদের অংশগ্রহণে বাতিঘর’র বৃক্ষ রোপণ বাউফলে বিএনপি নেতা তসলিম তালুকদারের বিরুদ্ধে ভূমিহীনদের মানববন্ধন বরিশালে প্রায় দেড় কোটি টাকার নকল সিগারেট জব্দ গণ ধর্ষণের ঘটনায় ৪ জনের ফাঁসির আদেশ
কুমিল্লার সাম্রাজ্য ভেঙে বরিশালের লঞ্চে বিপিএল ট্রফি

কুমিল্লার সাম্রাজ্য ভেঙে বরিশালের লঞ্চে বিপিএল ট্রফি

Sharing is caring!

অনলাইন ডেক্স:  রঙ, উৎসব, স্লোগানে স্লোগানে আলোকিত মিরপুর। বিপিএল ফাইনালের রোমাঞ্চ ছুঁয়ে যাওয়া সকালের পর বিকেলে সাম্র্যাজ্য ভেঙে যাওয়ার বেদনা কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্সের।

আরেকদিকে ফরচুন বরিশালের তৃপ্তি অনেকদিন ধরে ‘লঞ্চে ট্রফি’ তোলার আনন্দের।

সারাদিনের উত্তাপ, আলোচনা, লড়াইয়ের আভাসের ছাপ অবশ্য মাঠে ছিল কমই। টস হেরে প্রথমে ব্যাট করতে নেমে পুরো  ২০ ওভার খেললেও ১৫৪ রানের বেশি করতে পারেনি কুমিল্লা। পরে ওই রান তাড়া করতে ৬ উইকেটে জয় পায় বরিশাল। চারবার ফাইনাল খেলে কখনো না হারা কুমিল্লাকে এবার রানার্সআপ হয়েই সন্তুষ্ট থাকতে হচ্ছে; আর বরিশাল পেয়েছে প্রথমবার ট্রফি নিয়ে পদ্মা পাড়ি দেওয়ার স্বস্তি।

প্রথমে অবশ্য বরিশালের খেলোয়াড়দের মনে ভয়ই ধরার কথা ছিল। ইনিংসের কেবল তৃতীয় বলেই সুনীল নারিনের ক্যাচ ছেড়ে দেন ওবেদ ম্যাককয়। থার্ডম্যানে দাঁড়িয়ে বলটা কোথায় পড়বে, সেটিই ঠিকঠাক বুঝতে পারেননি। এক বল পরই প্রায়শ্চিত্য করেন অবিশ্বাস্য এক ক্যাচ নিয়ে।

স্কয়ার লেগে দাঁড়িয়ে নিজের বাঁদিকে ঝাঁপিয়ে এক হাতে অবিশ্বাস্য এক ক্যাচ নেন ম্যাককয়। কাইল মেয়ার্সের করা প্রথম ওভারেই ফিরতে হয় ৪ বলে ৫ রান করা নারিনকে। ওই ক্যাচ ছাড়ার মাশুলও খুব বেশি দিতে হয়নি বরিশালকে। মোহাম্মদ সাইফউদ্দিনের করা পরের ওভারে তিন বাউন্ডারিতে উইকেট হারানোর বেদনা ভুলে যাওয়ার চেষ্টা করে কুমিল্লা।

কিন্তু তাদের উইকেট হারাতেও খুব বেশি সময় লাগেনি। পুরো টুর্নামেন্টে বেশ কয়েকবার কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্সের জন্য ত্রাতা হওয়া তাওহীদ হৃদয় এদিন বড় কিছু করতে পারেননি। ১০ বলে ১৫ রান করে থার্ডম্যানে দাঁড়ানো মাহমুদউল্লাহর হাতে ক্যাচ দেন তিনি।

পাওয়ার প্লের ভেতরেই আরও একটি উইকেট হারায় বরিশাল। ১২ বলে ১৬ রান করে জেমস ফুলারের বলে এবার ওই মাহমুদউল্লাহ রিয়াদের হাতেই ক্যাচ দেন লিটন দাস। অনেকটা হৃদয়ের ভঙ্গিতে আউট হয়ে যান তিনিও। পাওয়ার প্লের ছয় ওভারে ৪৯ রানে ৩ উইকেট ছিল না বরিশালের।

এরপরও অনেকটা নিয়মিতই উইকেট হারিয়েছে বরিশাল। বিধ্বংসী হওয়ার আগে জনাথন চার্লসকে ফিরিয়ে দেন ওবেদ ম্যাককয়, ১৭ বলে তিনি করেন ১৫ রান। মাহিদুল ইসলাম অঙ্কন লম্বা সময় উইকেটে থেকেও বড় কিছু করতে পারেননি।

১৭তম ওভারে গিয়ে আউট হওয়ার আগে ২ চার ও সমান ছক্কায় ৩৫ বলে ৩৮ রান করেন অঙ্কন। কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্সের শেষ আশা হয়ে ছিলেন আন্দ্রে রাসেল। গুরুত্বপূর্ণ ম্যাচে কুমিল্লার জন্য প্রায়ই উদ্ধারকারী হয়েছেন তিনি। ওই আশা আরও একবার দেখিয়েছিলেন ১৯তম ওভারে গিয়ে।

ফুলারের করা ওই ওভারে ২১ রান নেন তিনি। শেষ ওভারে বরিশাল আস্থা রাখে সাইফউদ্দিনের ওপর। প্রতিদানও দিয়েছেন খুব ভালোভাবে। নো করেছেন, ওয়াইড দিয়েছেন কিন্তু পথ হারাননি কখনোই। পুরো ওভারে একটি বাউন্ডারিও হাঁকানো যায়নি তাকে।

১০ বলের ওই ওভারের প্রায় সবগুলো বলই ইয়র্কার করেন সাইফউদ্দিন। এর মধ্যে জাকের আলিকে স্ট্রাইক না দিয়ে নিজে মারার চেষ্টা করেননি রাসেল। পরে স্ট্রাইক পেয়েও তেমন কিছু করতে পারেননি জাকের। ১৪ বলে তবুও ২৭ রানে অপরাজিত থাকেন রাসেল, ২৩ বল খেলে জাকেরের রান ছিল ২০।

দেড়শর কাছাকাছি রান তাড়ায় নেমে প্রথম তিন বলের দুটিতেই রিভার্স সুইপ খেলেন তামিম ইকবাল। কোনোটিই অবশ্য ব্যাটে লাগেনি। রহনাতউদ্দৌল্লা বর্ষণের করা পরের ওভারেই দুই চার ও ১ ছক্কায় ১৫ রান নেন তামিম ইকবাল ও মেহেদী হাসান মিরাজ।

প্রথম ওভারে তানভীর ইসলামকে ঠিকঠাক ‘কানেক্ট’ করতে পারছিলেন না তামিম। এই স্পিনারের পরের ওভারের শেষ দুই বলে দুই ছক্কা হাঁকান তামিম। ম্যাচের নিয়ন্ত্রণও তখনই বরিশালের কাছে চলে আসে। পাওয়ার প্লের ছয় ওভারে কোনো উইকেট না হারিয়ে তাদের রান ছিল ৫৯।

মঈন আলি কুমিল্লাকে প্রথম উইকেট এনে দেন। আগের চার বলে তাকে একটি ছক্কা ও দুটি চার হাঁকিয়েছিলেন তিনি। ওভারের শেষ বলে এগিয়ে এসে খেলতে যান, কিন্তু বলের কাছাকাছিও ছিলেন না তামিম। ৩টি চার ও ৩টি ছক্কার ইনিংসে ২৬ বলে ৩৯ রান করেন তিনি। নিজের কাজটা অবশ্য ততক্ষণে ঠিকই করে দিয়ে গেছেন তামিম।

তার উদ্বোধনী সঙ্গী মেহেদী হাসান মিরাজও তাই। ২৬ বলে ২৯ রান করা এই ব্যাটারকে ফেরান মঈন। বরিশালের লম্বা ব্যাটিং লাইন আপ, আর লক্ষ্য অল্প থাকায় জয় নিয়ে কখনোই অনিশ্চয়তা ছিল না তাদের। সেটি আরও কাছাকাছি নিয়ে আসেন পুরো আসরজুড়ে বরিশালের বড় ভরসা হওয়া মেয়ার্স।

মোস্তাফিজুর রহমানের বলে পুল করতে যান তিনি। কিন্তু ব্যাটে ঠিকঠাক না লাগায় মিড অনে দাঁড়ানো মঈন একটু পিছিয়ে গিয়ে ক্যাচ নেন তার। ওই ওভারেই মুশফিকুর রহিমকেও ফেরান মোস্তাফিজ। নিজের প্রথম বিপিএল শিরোপার উদযাপন তাই মাঠে বসে করতে পারেননি মুশফিক। ফাইনালে ১৮ বলে করেন ১৩ রান।

এক ওভারে দুই উইকেট পেলেও ততক্ষণে অনেক দেরি হয়ে গেছে। দুই দলের পথও বদলে গেছে অনেকটাই। বিপিএলকে নিজেদের সাম্রাজ্য বানিয়ে ফেলা কুমিল্লা থমকে গেছে এবার। বিপিএল শিরোপা পথ ধরেছে বরিশালের। মুশফিক না পারলেও জয় নিশ্চিত করে মাঠ ছেড়েছেন জাতীয় দলে তার দীর্ঘদিনের সতীর্থ মাহমুউল্লাহ রিয়াদ ও দক্ষিণ আফ্রিকার ডেভিড মিলার।

প্রায় পুরো বিপিএলজুড়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ‘লঞ্চে করে ট্রফি যাবে’ এমন ব্র্যান্ডিং করেছিল বরিশাল। পদ্মার গৌরব কিছুক্ষণ ভুলে থেকে পুরোনো লঞ্চে চড়েই তাই বিপিএল ট্রফি যাবে বরিশাল। তার আগে মুশফিকুর রহিম-মাহমুদউল্লাহ রিয়াদরাও ছুয়ে দেখবেন নিশ্চিত। তামিম ইকবালের নেতৃত্বে মুশফিকের ভাষায় ‘বুড়োদের দল’ এখন মোহাম্মদ সালাউদ্দিনের ‘মাস্টারমাইন্ড’কে হারিয়ে বিপিএল চ্যাম্পিয়ন।

নিউজটি আপনার বন্ধুদের সাথে শেয়ার করুন




© All rights reserved © crimeseen24.com-2024
Design By MrHostBD