রবিবার, ২৪ নভেম্বর ২০২৪, ০৮:৪৭ পূর্বাহ্ন
অনলাইন ডেক্স: গত ১৫ দিনে কয়েক দফা বৈঠক থেকে আসা সিদ্ধান্ত শ্রমিকরা না মানায় মঙ্গলবার সিলেটের সব বাগানের পঞ্চায়েত কমিটির সঙ্গে মঙ্গলবার বেলা ১১টা থেকে বিকাল ৩টা পর্যন্ত বৈঠক হলেও দাবি মানার আগে আন্দোলন থেকে সরে আসতে রাজি হয়নি পঞ্চায়েত কমিটিগুলো। বৈঠক শেষে সুরমা ভ্যালির চা শ্রমিক ইউনিয়নের সভাপতি রাজু গোয়ালা বলেন, দীর্ঘক্ষণ আলোচনার পরও শ্রমিকরা ৩০০ টাকা মজুরির ঘোষণা আসার আগে আন্দোলন থেকে সরে না আসার পক্ষে মত দেন।
এখন আর আন্দোলন শ্রমিক ইউনিয়নের হাতে নেই; এটি পঞ্চায়েত কমিটিগুলো দেখছে। তবে শ্রমিক ইউনিয়ন নেতারা তাদের পাশে থাকবে বলে তিনি জানান। কামাইছড়া বাগানের পঞ্চায়েত সভাপতি বিমল ভর জানান, শ্রমিকরা মজুরি বৃদ্ধির সিদ্ধান্ত চূড়ান্ত না হওয়া পর্যন্ত আন্দোলন চালিয়ে যাবেন। তারা কোনো অবস্থায়ই মানছেন না। প্রধানমন্ত্রী নিজে আশ্বাস দিয়েছেন কিনা সেটি তারা বিশ্বাস করতে পারছেন না।
তারা মনে করছেন প্রধানমন্ত্রীর বরাত দিয়ে কেউ তাদের সঙ্গে প্রতারণা করছে। তাই ৩০০ টাকা মজুরি বাস্তবায়ন না হওয়া পর্যন্ত তারা আন্দোলন চালিয়ে যাবেন। সিলেটে সোমবার যারা কাজে যোগ দিয়েছিলেন মঙ্গলবার রাতেই সিদ্ধান্ত থেকে ফিরে আসেন তারা। সকালে মালনিছড়া চা বাগানে জমায়েত হয়ে ৩০০ টাকা মজুরির দাবিতে বিক্ষোভ করতে থাকেন শ্রমিকরা। মঙ্গলবার বেলা ১১টার দিকে সিলেট গলফ ক্লাবে সিলেট ভ্যালির ২৩ বাগানের পঞ্চায়েত নেতাদের সঙ্গে বৈঠকে বসেন শ্রমিক ইউনিয়ন নেতারা।
এ সময় মালনি ছড়া থেকে মিছিল নিয়ে গলফ ক্লাবের বাইরে অবস্থান নিয়ে বিক্ষোভ শুরু করেন শ্রমিকরা। বিভিন্ন বাগান থেকে বিক্ষোভ মিছিল নিয়ে শ্রমিকরা এসে জড়ো হন এখানে। এদিকে পঞ্চদশ দিনের মতো সিলেট ভ্যালির সব চা বাগানে মজুরি বৃদ্ধির দাবিতে চা শ্রমিকরা তাদের কর্মবিরতি পালন করেন। সভা শেষে শ্রমিক নেতাদের সিদ্ধান্ত শুনে ঘরে ফিরেন শ্রমিকরা।
এর আগে সোমবার সকাল থেকে সিলেট ভ্যালির ২৩টি চা বাগানের মধ্যে ৪টি বাগানে শ্রমিকরা কাজে যোগ দেন। আর ১৯ বাগানের শ্রমিকরা কর্মবিরতি ও বিক্ষোভ করেন। তবে মঙ্গলবার ফের ২৩ বাগানের শ্রমিকরা কাজে না গিয়ে কর্মবিরতি ও বিক্ষোভ শুরু করেন। প্রসঙ্গত, দৈনিক মজুরি ৩০০ টাকার দাবিতে গত ৯ আগস্ট থেকে ৪ দিন ২ ঘণ্টা করে কর্মবিরতি করেন চা শ্রমিকরা।
এরপর তারা ১৩ আগস্ট থেকে পূর্ণ দিবস কর্মবিরতি ও বিক্ষোভ করেন। এর মধ্যে কয়েক দফা বৈঠক হলেও তা সমাধান হয়নি। শেষ পর্যন্ত শনিবারের বৈঠকে তাদের মজুরি ১৪৫ টাকা নির্ধারণ করা হলে তারা আন্দোলন প্রত্যাহার করেন। পরবর্তীতে শ্রমিকরা এ মজুরি মানেন না জানিয়ে ফের আন্দোলনে নামেন। কয়েক দফা বৈঠকের পর শেষপর্যন্ত সোমবার তাদের একাংশ কাজে যোগ দিলেও মঙ্গলবার আবার তারা আন্দোলন শুরু করেন। বৃহস্পতিবার ঢাকায় শ্রম ভবনে শ্রমমন্ত্রী মুন্নজান সুফিয়ান মজুরি ইস্যুতে বৈঠক ডেকেছেন। বৈঠকে স্থানীয় প্রশাসন ও শ্রমিক নেতারা উপস্থিত থাকার কথা রয়েছে।