শুক্রবার, ২২ নভেম্বর ২০২৪, ০১:২২ পূর্বাহ্ন
উজিরপুর প্রতিনিধি : করোনার প্রভাব পড়েছে বরিশালের উজিরপুর কামারশালা গুলোতে। কয়দিন পরেই মুসলিম উম্মাহের সবচেয়ে বড় ধর্মীয় উৎসব “ঈদুল আযহা” আর এ উৎসব কে সামনে রেখে দা,বটি,ছুরি-চাকু তৈরিতে এসময়টাতে কামারশালার কামারিরা ব্যস্ত সময় পার করার কথা।
এবার আর সেই চিরচেনা দৃশ্যটি চোখে পড়ছে না তেমনটি । করোনা মহামারির কারণে কঠোর লকডাউন হওয়ায় দা,বটি, ছুরি-চাকুর চাহিদা এবার আগের মতো তেমনটি নেই।করোনা পরিস্থিতিতে কোরবানীর পশু কেনা নিয়েই এবার কোন সাড়া নেই লোকজনের মাঝে। তাই কামারপাড়ায় দা-ছুরি তৈরি করানোর বাড়তি উচ্ছাসও চোখে পড়ছে না। এক রকম বেকারত্ব সময় পাড় করছেন কামারীরা। তাই তাদের চোখে-মুখে হতাশার ছাপ ফুটে উঠেছে। শোলক ইউনিয়ন সেনেহাট বাজারে গিয়ে কামার গৌতম কর্মকার এর সাথে আলাপকালে তিনি জানান,এই পেশা আমার বাপ দাদার কাছ থেকে পেয়েছি।
প্রতি কোরবানির ঈদের এক মাস পূর্ব থেকে ছুরি-চাকু বিক্রি হওয়ার কথা। কিন্তু তৈরি করে রাখা ছুরি-চাকু বিক্রি হচ্ছে না তেমন একটা। তারপরও এখনও আশায় বসে আছি। বসে থাকলে তো আর চলবে না। নতুন কামার উত্তম কর্মকার বলেন,পুরো বছরের মূল রোজগার হয় এই কোরবানি ঈদে। কিন্তু গত ঈদ থেকে ছুরি-চাকু বিক্রি নেই বললেই চলে। তবু বিক্রির আশায় ঘুম নষ্ট করে জিনিসপত্র তৈরি করে রাখছি। তিনি বলেন,বর্তমানে ভালমানের লোহা পাওয়া কঠিন। লোহার দরও বেড়েছে। সেই তুলনায় জিনিস বিক্রি করা কঠিন হচ্ছে। যাই হোক,আশা ছাড়ছি না। ঈদের এক সপ্তাহ পূর্ব থেকে বিক্রি শুরু হতে পারে। কামারী রামের কাঠি গ্রামের জীবন কর্মকার জানান,ঈদের মৌসুমে বেচাকেনার পরিমাণ বেড়ে যায়। আর এই আয় থেকে সারা বছরের সংসারের খোরাক হয়,পোশাক ও ছেলে মেয়ের লেখাপড়ার খরচ চলে যায়।
করোনায় মানুষের হাতে টাকা পয়সা না থাকায় এবার বেচাকেনা ও অস্ত্র তৈরি অর্ডার নেই। তাই বিপাকে পড়েছে কারিগরা। অনেকে আবার লোকসানের ভয়ে বন্ধ করে রেখেছেন দোকান ঘর। এসব নিয়ে এক ব্যবসায়ী বলেন,গত বছর থেকে ঈদে আর আনন্দ নেই মানুষের মনে,বেড়েছে অর্থনৈতিক সংকট। করোনার লকডাউনে ঈদ বিষাদে পরিণত হয়েছে। এমন কথাই বললেন আরো কয়েকজন। করোনা পরিস্থিতির দিকে তারা তাকিয়ে আছেন।