সোমবার, ২১ এপ্রিল ২০২৫, ০২:৪৮ অপরাহ্ন
অনলাইন ডেক্স :বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠার সংগ্রামের প্রতিটি ধাপে বঙ্গবন্ধুর সহধর্মিণী হিসেবে নয়, একজন নীরব দক্ষ সংগঠক হিসেবে যিনি নিজেকে বিলিয়ে দিয়ে বাঙালির মুক্তির সংগ্রামে ভূমিকা রেখেছেন এবং বঙ্গবন্ধুকে হিমালয় সম আসনে অধিষ্ঠিত করেছেন, তিনি বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিব।
শনিবার (৮ আগস্ট) ফজিলাতুন্নেছা মুজিবের জন্মদিন উপলক্ষে রাতে আওয়ামী লীগের ভার্চ্যুয়াল আলোচনায় বক্তারা এসব কথা বলেন।
‘গৃহকোণ থেকে জনগণের হৃদয়ে’ শীর্ষক বিশেষ ওয়েবিনারে সাবেক ছাত্রনেতা ও কলামিস্ট সুভাষ সিংহ রায়ের সঞ্চালনায় আলোচক হিসেবে উপস্থিত ছিলেন আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা মণ্ডলীর সদস্য আমীর হোসেন আমু, নারী বিষয়ক সম্পাদক মেহের আফরোজ চুমকি, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপ-উপাচার্য অধ্যাপক ড. নাসরীন আহমদ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য ও কবি অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ সামাদ ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সামাজিক বিজ্ঞান অনুষদের ডিন অধ্যাপক ড. সাদেকা হালিম। অনুষ্ঠানে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন সিনিয়র সাংবাদিক অজয় দাশগুপ্ত।
আলোচনায় আমির হোসেন আমু বলেন, ‘বঙ্গবন্ধুর কোনো পিছুটান ছিল না বলেই তিনি দেশ ও জাতির কল্যাণে কাজ করে যেতে পেরেছিলেন। আর বঙ্গবন্ধুর চলার এ পথকে মসৃণ করেছিলেন তার স্ত্রী বঙ্গমাতা ফজিলাতুন্নেছা মুজিব। তার মধ্যে কিছু ঐশ্বরিক ক্ষমতা হয়তো ছিল। তা না হলে যে বয়সে ছেলেমেয়েদের বাবা-মার কাছে আবদার থাকে, সে বয়সেও তিনি বায়না না করে বঙ্গবন্ধুর হাতে তার জমানো টাকা তুলে দিতেন যাতে বঙ্গবন্ধুর কলকাতাতে কষ্ট না হয়। তার এ ত্যাগের বিনিময়েই বঙ্গবন্ধুর বঙ্গবন্ধু হয়ে ওঠা। বঙ্গবন্ধুর জীবনে সবচেয়ে বড় আশীর্বাদ হিসেবে ফজিলাতুন্নেছা মুজিব এসেছিলেন। বঙ্গবন্ধু তাকে যেভাবে স্বীকার করে নিয়েছেন, মূল্যায়ন করেছেন, তা তার লেখনির মাধ্যমে প্রমাণিত হয়েছে। ’
তিনি বলেন, ‘আমরা যারা ছাত্র রাজনীতি করতাম, আমরা সবচেয়ে বেশি তার সান্নিধ্য পেয়েছি। বঙ্গবন্ধু কারাগারে থাকা অবস্থায় তিনি আমাদের সাহস যুগিয়েছেন, পরামর্শ দিয়েছেন, আর্থিক সহায়তা দিয়েছেন। এমনকি ঈদ করার টাকাও আমাদের দিয়েছিলেন ছাত্র আন্দোলন ও সংগ্রাম চালিয়ে যাওয়ার জন্য। ’
মেহের আফরোজ চুমকি বলেন, ‘আমার সৌভাগ্য হয়েছিল বঙ্গমাতাকে দেখার। বাবার সঙ্গে ৩২ নম্বর বাড়িতে গিয়েছিলাম একবার। তাকে দেখে আমি অবাক হয়েছিলাম, এত বড় একজন মানুষের স্ত্রী এত সাধারণ হবে আমার ধারণাই ছিল না। পরে রাজনীতিতে জড়িয়ে পড়লে শেখ হাসিনার কাছ থেকে বঙ্গমাতাকে নিয়ে আমার জানার আরও সুযোগ হয়। তার মধ্যে আদর্শ, মানবতা ও দেশপ্রেম ছিল বলেই বঙ্গবন্ধুর চলার পথে কখনো বাধা হননি তিনি। বরং হয়েছেন চলার পথের শক্তি এবং অনুপ্রেরণা। ’
অজয় দাস গুপ্ত মূল প্রবন্ধ উপস্থাপনের সময় বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন্নেসা সম্পর্কে জানা-অজানা নানা তথ্য তুলে ধরেন।
অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ সামাদ বলেন, ‘পৃথিবীতে কয়েকজন অসাধারণ নারী আছেন, যারা একজন মহামানব তৈরি করতে সাহায্য করেছিলেন। আমাদের বঙ্গমাতা ফজিলাতুন্নেছা মুজিব তাদের মধ্যে একজন। বঙ্গবন্ধুর যে তিন খণ্ড আত্মজীবনী বের হয়েছে, সেগুলো লিখতে অনুপ্রেরণা দিয়েছিলেন তিনি। ছয় দফা, গণঅভ্যুত্থান, ৭০ এর নির্বাচন, ৭১ এর মুক্তিযুদ্ধে বঙ্গবন্ধুর অনুপ্রেরণা হয়ে কাজ করেছেন তিনি। ’