শনিবার, ২৩ নভেম্বর ২০২৪, ০৭:৪০ পূর্বাহ্ন
ক্রাইমসিন২৪ ডেস্ক: জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের ইশতেহারে যুদ্ধাপরাধীদের বিচার প্রসঙ্গ এলেও বিএনপির নির্বাচনী প্রতিশ্রুতিতে তা নেই। বিএনপির ইশতেহারে স্থান পায়নি জামায়াত প্রসঙ্গও। ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের নির্বাচনী ইশতেহারে যুদ্ধাপরাধের বিচারের বিষয়টি এসেছে। তবে বিএনপির মতোই ঠাঁই পায়নি জামায়াতের প্রসঙ্গ। স্বাধীনতাবিরোধী এই রাজনৈতিক দলটির ব্যাপারে তারাও নীরব রয়েছে। জামায়াতের রাজনীতি নিষিদ্ধ বা অন্য কোনো পদক্ষেপ নেওয়া হবে কি না, সে বিষয়ে কিছু বলা হয়নি শাসক দলের দেওয়া ২১টি বিশেষ অঙ্গীকারের মধ্যে। কর্মসংস্থান সৃষ্টি ও প্রবৃদ্ধির হার বৃদ্ধির ক্ষেত্রে দুই প্রধান দল তাদের নির্বাচনী ইশতেহারে বিশেষ গুরুত্ব দিলেও অন্য সব প্রতিশ্রুতির বিষয়ে তাদের তেমন মিল নেই। আওয়ামী লীগ ও বিএনপি ঘোষিত নির্বাচনী ইশতেহার বিশ্লেষণ করে জানা গেছে এই তথ্য।
বিএনপি ঘোষণা দিয়েছে, তারা ক্ষমতায় গেলে রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রীর ক্ষমতার ভারসাম্য আনা হবে, পর পর দুই মেয়াদের বেশি প্রধানমন্ত্রী পদে না থাকার বিধান করা হবে। এ ছাড়া গণভোট পদ্ধতি পুনঃপ্রবর্তন, জাতীয় কমিশন গঠন, উচ্চকক্ষ সংসদ প্রতিষ্ঠা, বিরোধী দল থেকে ডেপুটি স্পিকার নিয়োগ ও ন্যায়পাল নিয়োগের প্রতিশ্রুতি দেওয়া হয়েছে। আওয়ামী লীগের ইশতেহারে বলা হয়েছে, গণতন্ত্র ও কার্যকর সংসদ প্রতিষ্ঠার কথা। এর বাইরে জেলাভিত্তিক বাজেট প্রণয়ন এবং দক্ষ, সেবামুখী ও জবাবদিহিমূলক প্রশাসন গড়ে তোলার অঙ্গীকার করা হয়েছে।
বিএনপি ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন, অফিশিয়াল সিক্রেট অ্যাক্ট ও বিশেষ ক্ষমতা আইন-১৯৭৪ বাতিল এবং র্যাবের বর্তমান কাঠামো পরিবর্তনের প্রতিশ্রুতি দিয়েছে। বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ড বন্ধ, ধর্মীয় সংখ্যালঘু মন্ত্রণালয় গঠন, ব্যাংকিং ডিভিশন বিলুপ্ত করে রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংকগুলো কেন্দ্রীয় ব্যাংকের ওপর এবং নিম্ন আদালত সুপ্রিম কোর্টের ওপর ন্যস্ত করার প্রতিশ্রুতির পাশাপাশি দেশ রক্ষা, বেকার ভাতা চালু; পুলিশ ও আনসার বাহিনী ছাড়া সরকারি চাকরিতে প্রবেশের বয়সসীমা তুলে দেওয়ার ঘোষণা দিয়েছে তারা। এ ক্ষেত্রে আওয়ামী লীগ জনবান্ধব আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী গড়ে তোলা এবং তরুণ-যুবসমাজকে দক্ষ জনশক্তিতে রূপান্তর ও কর্মসংস্থানের নিশ্চয়তা এবং আইনের শাসন ও মানবাধিকার সুরক্ষার প্রতিশ্রুতি দিয়েছে।
আওয়ামী লীগ দুর্নীতির বিরুদ্ধে জিরো টলারেন্স নীতি গ্রহণের প্রতিশ্রুতি দিয়ে বলেছে, ‘আমরা মনে করি, দুর্নীতি দমনে প্রয়োজন সরকার ও জনগণের সমন্বিত পদক্ষেপ। দুর্নীতি দমন কমিশনকে কর্মপরিবেশ ও দক্ষতার দিক থেকে যুগোপযোগী ও আধুনিকায়ন করা হবে। এর বাইরে সন্ত্রাস, জঙ্গিবাদ, সাম্প্রদায়িকতা ও মাদক নির্মূল এবং অবকাঠামো উন্নয়নে বৃহৎ প্রকল্প দ্রুত বাস্তবায়নের অঙ্গীকার করেছে শাসক দল আওয়ামী লীগ। তাঁরা ইশতেহারে প্রতিটি গ্রামকে শহরে উন্নীত করার প্রতিশ্রুতি দিয়ে বলেছে, উন্নত রাস্তাঘাট, যোগাযোগ, সুপেয় পানি, আধুনিক স্বাস্থ্যসেবা ও সুচিকিৎসা, মানসম্পন্ন শিক্ষা, উন্নত পয়োনিষ্কাশন ও বর্জ্য ব্যবস্থাপনা, বিদ্যুৎ ও জ্বালানি সরবরাহ বৃদ্ধি, কম্পিউটার ও দ্রুতগতিসম্পন্ন ইন্টারনেট সুবিধা, বৈদ্যুতিক সরঞ্জামসহ মানসম্পন্ন ভোগ্যপণ্যের বাজার সম্প্রসারণের মাধ্যমে প্রতিটি গ্রামকে আধুনিক শহরের সব ব্যবস্থা দেওয়ার ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
দুর্নীতি প্রতিরোধ ও শহরকে আধুনিক গ্রামে রূপান্তরের ক্ষেত্রে বিএনপি কোনো সুনির্দিষ্ট পরিকল্পনা প্রকাশ করেনি। তবে তারা রেন্টাল পাওয়ার প্রজেক্টের উচ্চ ব্যয়ের কারণ তদন্তের জন্য টাস্কফোর্স গঠন, বিডিআর হত্যাকাণ্ড ও কেন্দ্রীয় ব্যাংকের রিজার্ভ চুরির প্রতিবেদন প্রকাশ ও তদন্তের প্রতিশ্রুতি দিয়েছে।
বিএনপির নির্বাচনী ইশতেহার নিয়ে আইন কমিশনের চেয়ারম্যান, সাবেক প্রধান বিচারপতি এ বি এম খায়রুল হক বলেন, একটি রাজনৈতিক দল একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন সামনে রেখে যে ইশতেহার ঘোষণা করেছে, তা তেমনটা বাস্তবসম্মত নয়। তারা বলেছে, ক্ষমতায় গেলে রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রীর ক্ষমতায় ভারসাম্য আনা হবে। এ রকম করতে হলে হলে প্রথমত সংবিধান সংশোধন করতে হবে। দ্বিতীয়ত, এর জন্য সংবিধান সংশোধন করলে, সংবিধানের ‘বেসিক স্ট্রাকচার’ নষ্ট হবে। সংবিধানের ‘বেসিক স্ট্রাকচার’ নষ্ট হওয়া কোনোভাবেই কাম্য নয়।
মঙ্গলবার ইশতেহার উপস্থাপনের সময় যুদ্ধাপরাধীদের বিচার প্রসঙ্গে কিছু বলেননি বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। তাঁকে বিষয়টির প্রতি দৃষ্টি আকর্ষণ করা হলে তিনি বলেন, ‘আমরা যা যা বলেছি এখানে তার বাকিটা বিস্তারিতের মধ্য পাবেন। পুরো ইশতেহার আমাদের ওয়েবসাইটে দেওয়া হবে।’
মুক্তিযোদ্ধাদের বিশিষ্ট নাগরিকের মর্যাদা দেওয়ার বিএনপির প্রতিশ্রুতি নিয়ে লোক প্রশাসনের অধ্যাপক ড. আখতার হোসেন বলেন, জামায়াতকে সঙ্গে রেখে মুক্তিযোদ্ধাদের কতটুকু সম্মান জানানো হবে, তা নিয়ে সন্দেহ রয়েছে। আর ক্ষমতার ভারসাম্যের প্রতিশ্রুতিকে অবাস্তব মন্তব্য করে তিনি বলেন, সংসদীয় পদ্ধতিতে বিশ্বের কোথাও প্রধানমন্ত্রীর নির্বাচনের ক্ষেত্রে এ নিয়ম নেই। তবে প্রেসিডেন্টের ক্ষেত্রে আছে। আর প্রধানমন্ত্রীশাসিত সরকারের যে রীতি, তাতে রাষ্ট্রপতির ক্ষমতা বাড়ানো হলে সরকারব্যবস্থা অকার্যকর হয়ে পড়ার আশঙ্কা থাকে। কোনো ব্যক্তিবিশেষকে ক্ষমতার বাইরে রাখার চেষ্টা হিসেবে এ প্রস্তাব করা হয়ে থাকতে পারে।
সরকারি চাকরির বয়সসীমা তুলে ধরার প্রস্তাবের সমালোচনা করে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের এ অধ্যাপক বলেন, এতে মেধার গুরুত্ব কমে গিয়ে দলীয় পছন্দের লোকদের সরকারি পদে ঢোকার রাস্তা প্রশস্ত হওয়ার আশঙ্কা আছে।
শিক্ষা : প্রশ্ন ফাঁস, সমন্বিত ভর্তি পরীক্ষা, শিক্ষাব্যবস্থার জাতীয়করণ—এসব বিষয়ে বিভিন্ন মহলের পৃথক দাবি রয়েছে। তবে দুই দলের ইশতেহারে এসব দাবি পূরণের বাস্তবসম্মত অঙ্গীকার নেই।
আওয়ামী লীগের ইশতেহারে সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষকদের বেতন গ্রেডসহ শিক্ষা খাতের কিছু ক্ষেত্রের বৈষম্য ন্যায্যতার ভিত্তিতে নিরসনের উদ্যোগ গ্রহণের কথা বলা হয়েছে। আরো বলা হয়েছে, শিক্ষা খাতে সর্বোচ্চ বরাদ্দ ও এর কার্যকর ব্যবহার নিশ্চিত করা হবে। শিক্ষক, কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের নিয়োগের একমাত্র মানদণ্ড হবে মেধা, যোগ্যতা ও অভিজ্ঞতা। প্রশ্নপত্র ফাঁস ও নকল পুরোপুরি বন্ধ করার জন্য গৃহীত ব্যবস্থা জোরদার করা হবে। সব জেলায় অন্তত একটি প্রাইভেট বা পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপন করা হবে। মাদরাসা শিক্ষায় ধর্মীয় শিক্ষার সঙ্গে কর্মজীবনের প্রয়োজনীয় শিক্ষা প্রদানের জন্য কারিকুলাম যুগোপযোগী করা হবে। ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠী ও প্রতিবন্ধীদের জন্য সব স্তরের বিনা মূল্যের বই ছাপানোর উদ্যোগ গ্রহণ করা হবে।
বিএনপি বলেছে, পিইসি ও জেএসসি পরীক্ষা ব্যবস্থা বিলোপ করা হবে। স্বল্প আয়ের পরিবারের ছাত্র-ছাত্রীদের জন্য স্বল্প সুদে শিক্ষা ঋণ চালু করা হবে। এ ছাড়া শিক্ষার ওপর থেকে সব ধরনের ভ্যাট বাতিল করার ঘোষণা দিয়েছে বিএনপি। ভ্যাটবিরোধী, কোটা সংস্কার এবং নিরাপদ সড়কের আন্দোলনে ক্ষতিগ্রস্ত শিক্ষার্থীদের সব মামলা প্রত্যাহার এবং ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারকে ক্ষতিপূরণ দেওয়ারও আশ্বাস দেওয়া হয়েছে। মাদরাসা শিক্ষার কারিকুলামে পেশাভিত্তিক ও বৃত্তিমূলক বিভিন্ন বিষয়কে অন্তর্ভুক্ত করা হবে। প্রশ্ন ফাঁস রোধে আইনি, প্রতিকারমূলক এবং প্রাতিষ্ঠানিক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। সরকারি ও বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে গরিব মেধাবী ছাত্র-ছাত্রীদের জন্য আসন সংরক্ষণ করা হবে।
অর্থনীতি : আওয়ামী লীগ ও বিএনপির ইশতেহারে দেশের অর্থনীতি ও পুঁজিবাজার বেশি গুরুত্ব পেয়েছে। দুই দলই অর্থনৈতিক উন্নয়নকে গুরুত্ব দিয়ে এজেন্ডা নির্ধারণ করেছে। আওয়ামী লীগ ‘উন্নত অর্থনীতি’ গড়তে যুগোপযোগী কৌশল দাঁড় করিয়েছে আর বিএনপি অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি বৃদ্ধি ও রপ্তানি প্রবৃদ্ধি বাড়ানোর পরিকল্পনা দেখিয়েছে।
আওয়ামী লীগ বলেছে, স্বাধীনতার সুবর্ণ জয়ন্তী ২০২১ পালনকালে হবে মধ্যম আয়ের দেশ, ২০৩০ সালে উচ্চ-মধ্যম আয়ের দেশ এবং ২০৪১ সালে উন্নত দেশ হিসেবে বিশ্বের বুকে মাথা তুলে দাঁড়াবে। ২০৩০ সালে বাংলাদেশের মাথাপিছু আয় হবে পাঁচ হাজার ৪৭৯ ডলারেরও বেশি এবং ২০৪১ সালের মধ্যে বাংলাদেশের সার্বিক দারিদ্র্যের হার শূন্য শতাংশে নামিয়ে আনার লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করেছে দলটি।
বিএনপি বলছে, জাতীয় অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির হার ১১ শতাংশে উন্নীত করা হবে। রপ্তানি প্রবৃদ্ধির হার তিন গুণ বাড়াবে এবং রপ্তানি পণ্য বহুমুখী করা হবে। অর্থ মন্ত্রণালয়ের ব্যাংকিং ডিভিশন বিলুপ্ত করে রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংকগুলো পরিচালনা ও তদারকির ভার কেন্দ্রীয় ব্যাংকের হাতে ন্যস্ত করা হবে। চলমান কোনো উন্নয়ন প্রকল্প বন্ধ না করার আশ্বাস দিয়ে বলেছে, মেগা প্রকল্পে ব্যয়ের আড়ালে সংগঠিত দুর্নীতি নিরীক্ষা করা হবে এবং দোষীদের আইনের আওতায় আনা হবে।
তবে পণ্যের ন্যায্য দাম নিশ্চিত করা নিয়ে কোনো দলেরই ঘোষণা নেই। এ বিষয়ে ভোক্তা অধিকার সংগঠন ক্যাবের সভাপতি গোলাম রহমান কালের কণ্ঠকে বলেন, ‘দেশের যত মানুষ সবাই ভোক্তা। বড় দলগুলোর ভোক্তাদের নিয়ে চিন্তা করা উচিত। ইশতেহারে এমন কোনো ঘোষণা না থাকাটা হতাশাজনক।’
স্বাস্থ্য খাত : আওয়ামী লীগ বলেছে, এক বছরের নিচে ও ৬৫ বছরের ওপরে সবাইকে বিনা মূল্যে স্বাস্থ্যসেবা দেওয়া হবে। সব বিভাগীয় শহরে মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপন করা হবে। প্রতিটি বিভাগীয় শহরে অন্তত ১০০ শয্যার স্বয়ংসম্পূর্ণ ক্যান্সার ও কিডনি চিকিৎসা ব্যবস্থা চালু করা হবে। বিএনপি আশ্বাস দিয়েছে, জিডিপির ৫ শতাংশ অর্থ স্বাস্থ্য খাতে ব্যয় করা হবে। সরকারি উদ্যোগে পর্যাপ্ত ডায়াগনস্টিক বুথ স্থাপন করা হবে। ওষুধের মূল্য যুক্তিসংগত হারে হ্রাস করা হবে।
যোগাযোগব্যবস্থা : দুই দল নিরাপদ সড়কে গুরুত্ব দিয়েছে। বলেছে সড়ক পরিবহন আইন সংশোধনের প্রয়োজনীয়তার কথা। এ প্রসঙ্গে বুদ্ধিজীবী ও লেখক সৈয়দ আবুল মকসুদ কালের কণ্ঠকে বলেন, ‘নিরাপদ সড়কের জন্য আমাদের সবার যে দাবি তার সঙ্গে বড় দুই দলের যে গুরুত্ব আরোপ, তা প্রশংসনীয়। নির্বাচিত হলে অঙ্গীকার কিভাবে বাস্তবায়ন করা হবে, তা আরো স্পষ্ট করা হলে ভালো হতো।’
আওয়ামী লীগের ইশতেহারে বলা হয়েছে, মালয়েশিয়া ও বাংলাদেশ সরকারের যৌথ উদ্যোগে ১৬ হাজার ৩৮৯ কোটি টাকা ব্যয়ে ৩৯.২৪ কিলোমিটার ঢাকা পূর্ব-পশ্চিম এলিভেটেড হাইওয়ে নির্মাণ করা হবে। ঢাকাকে ঘিরে একটি এলিভেটেড রিংরোড এবং ইস্টার্ন বাইপাস নির্মাণেরও পরিকল্পনা বাস্তবায়ন করা হবে। ঢাকা-চট্টগ্রাম এক্সপ্রেসওয়ে ও এক্সপ্রেস রেলওয়ে নির্মাণের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। এক ঘণ্টার মধ্যে যাতে চট্টগ্রামে পৌঁছানো যায় সে জন্য বুলেট ট্রেন (দ্রুতগামী ট্রেন) চালু করা হবে। ক্রমে বুলেট ট্রেন সিলেট, রাজশাহী, দিনাজপুর, পটুয়াখালী, খুলনা এবং কলকাতা পর্যন্ত সম্প্রসারণ করা হবে। রাজধানীর জনপরিবহন সমস্যার সমাধান ও যানজটমুক্ত করার লক্ষ্যে পাতাল রেল, মেট্রো রেল অথবা সার্কুলার রেলপথ এবং রাজধানীতে নাব্য ও প্রশস্ত নৌপথ নির্মাণ করা হবে।
বিএনপির ইশতেহারে বলা হয়েছে, সড়কপথে চলাচলে বিরাজমান বিশৃঙ্খলার অবসান ঘটানো হবে এবং সড়ক দুর্ঘটনা হ্রাসে যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়া হবে। নিরাপদ সড়কের আন্দোলনে ক্ষতিগ্রস্ত ছাত্র-ছাত্রীদের বিরুদ্ধে আনীত সব মামলা প্রত্যাহার এবং এসব আন্দোলনে ক্ষতিগ্রস্তদের ক্ষতিপূরণ দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছে দলটি। এ ছাড়া জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের দেওয়া ইশতেহারে নিরাপদ সড়কের দাবিতে নামা শিক্ষার্থীদের ৯ দফার আলোকে সড়ক আইন সংশোধনের প্রতিশ্রুতি রয়েছে।
তারুণ্য : তরুণ ভোটারদের আকৃষ্ট করতে ইশতেহারে ব্যাপক গুরুত্ব দিয়েছে আওয়ামী লীগ, কী কী করবে আর বিগত সময়ে কী কী করেছে সে বিষয়েও বিস্তর বর্ণনা দিয়েছে। তবে তরুণদের নিয়ে কী করবে বা কী কাজে লাগাবে সে বিষয়ে বিস্তারিত বলেনি বিএনপি। তবে আগামী পাঁচ বছরে এক কোটি কর্মসংস্থান এবং মেধা ও যোগ্যতার ভিত্তিতে প্রথম তিন বছর দুর্নীতিমুক্তভাবে সরকারি চাকরিতে নিয়োগ দেবে—এমন প্রতিশ্রুতি দেওয়া হয়েছে।
প্রতিবেদনটি তৈরি করেছেন কালের কণ্ঠ’র বিশেষ প্রতিনিধি আবদুল্লাহ আল মামুন, জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক তৌফিক মারুফ ও পার্থ সারথি দাস এবং নিজস্ব প্রতিবেদক শরীফুল আলম সুমন, রফিকুল ইসলাম ও শওকত আলী।