মঙ্গলবার, ০৪ ফেব্রুয়ারী ২০২৫, ০১:০০ পূর্বাহ্ন
ব্রাহ্মণবাড়িয়ার কসবায় চট্টগ্রাম থেকে ঢাকা অভিমুখী ‘তূর্ণা নিশীথা’র সঙ্গে সিলেট থেকে চট্টগ্রাম অভিমুখী ‘উদয়ন এক্সপ্রেস’ ট্রেনের সংঘর্ষ হয়েছে। এ ঘটনায় এখন পর্যন্ত নিহতের সংখ্যা বেড়ে ১৬ জনে দাঁড়িয়েছে। অরক্ষিত লেভেলক্রসিং ও পথচারীদের অসচেতনতার কারণে প্রায়ই দেশের বিভিন্ন জায়গায় ট্রেন দুর্ঘটনা ঘটছে।
অনাকাঙ্ক্ষিত বিভিন্ন দুর্ঘটনা এড়াতে ২০১৫ সালের জুলাই মাসে ঝুঁকিপূর্ণ রেলপথ সংস্কারে পূর্বাঞ্চলে রেলক্রসিং পুনর্বাসন ও গেটকিপার নিয়োগে প্রকল্প হাতে নেয় রেল মন্ত্রণালয়। প্রকল্পের মোট ব্যয় ছিল ৮০ কোটি ৫৯ লাখ টাকা। কিন্তু ধীরগতির কারণে নির্ধারিত সময়ের মধ্যেও শেষ হয়নি সে কাজ।
বাংলাদেশ রেলওয়ে সূত্র জানায়, চার বছর আগে এ প্রকল্পের আওতায় ৩২৮টি গুরুত্বপূর্ণ লেভেলক্রসিংয়ের পুনর্বাসন ও মানোন্নয়ন কাজ শুরু হয়। প্রকল্পটি ২০১৯ সালের জুন মাসে শেষ হওয়ার কথা ছিল। অথচ নির্ধারিত সময়ের পর আরও পাঁচ মাস পেরিয়ে গেলেও কাজের অগ্রগতি হয়েছে মাত্র ৬৯ শতাংশ। প্রকল্পের আওতায় এখনও ৩২৮টি রেলক্রসিং নির্মাণের কাজ সম্পন্ন হয়নি। এর বাইরেও অননুমোদিত ও অরক্ষিত আছে এ অঞ্চলের ৮১১টি রেলক্রসিং।
লেভেলক্রসিং গেইটের পুনর্বাসন ও মান উন্নয়ন প্রকল্প প্রসঙ্গে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক বাংলাদেশ রেলওয়ের এক কর্মকর্তা বলেন, প্রকল্পের মেয়াদ শেষ হয়ে গেছে। মোট অগ্রগতি ৬৯ শতাংশ। এ প্রকল্পের আওতায় এখন পর্যন্ত অস্থায়ীভাবে ১৯০ জন গেইট কিপার নিয়োগ দেয়া হয়েছে।
এ কর্মকর্তা আরও বলেন, এসবের বাইরেও পূর্বাঞ্চলে আরও ৮১১টি অননুমোদিত, অর্থাৎ অবৈধ রেলক্রসিং রয়েছে। সেগুলোরও দ্রুত পুনর্বাসন জরুরি।
বাংলাদেশ রেলওয়ে সূত্র জানায়, এ অঞ্চলের অধিকাংশ লেভেল ক্রসিংয়েই গেটকিপার নেই। সওজ, এলজিইডি, সিটি করপোরেশন, পৌরসভা, ইউনিয়ন, জেলা পরিষদ ও অন্যান্য স্থানীয় কর্তৃপক্ষ সড়ক নির্মাণের সময়ই মূলত অধিকাংশ অনুমোদিত লেভেলক্রসিং নির্মিত হয়।
সূত্র আরও জানায়, রেলওয়ে অ্যাক্ট ১৮৯০ ও রেলওয়ে ম্যানুয়্যাল অনুসারে রেলপথ অতিক্রমকারী সড়কগুলোর ক্ষেত্রে লেভেলক্রসিং সংশ্লিষ্ট বিভাগের কাছ থেকে অর্থবরাদ্দ নিয়ে ক্রসিং নির্মাণ ও রক্ষণাবেক্ষণের কাজ করবে সংশ্লিষ্ট অন্য বিভাগগুলো। কিন্তু আজও সে ব্যবস্থা বাস্তবায়ন করা সম্ভব হয়নি। রেলের পশ্চিমাঞ্চলেও একই অবস্থা। লেভেলক্রসিং যথাযথভাবে রক্ষণাবেক্ষণ করতে না পারায় ও প্রয়োজনীয় গেটকিপার না থাকায় প্রায়ই দুর্ঘটনা ঘটছে।
বাংলাদেশ রেলওয়ের প্রধান পরিকল্পনা কর্মকর্তা হাবিবুল্লাহ বাহার বলেন, পূর্বাঞ্চলে ৩২৮টি রেলক্রসিং পুনর্বাসনের কাজ শেষ পর্যায়ে। আরো ৮১১টি অবৈধ রেলক্রসিং রয়েছে। আমরা বিভিন্ন প্রকল্পের আওতায় এগুলো পুনর্বাসনে কাজ করছি। নতুন কোনো প্রকল্প নেওয়া হলে তাতেই রেলক্রসিং পুনর্বাসনের কাজ অন্তর্ভুক্ত হচ্ছে।
আরও পড়তে ক্লিক করুন: কসবায় দুই ট্রেনের সংঘর্ষে নিহত বেড়ে ১৬