শুক্রবার, ০৩ অক্টোবর ২০২৫, ০৪:২৫ পূর্বাহ্ন
কলাপাড়া(পটুয়াখালী)প্রতিনিধিঃ
পটুয়াখালীর কলাপাড়ায় দুর্নীতি, অনিয়ম রোধে সাব-রেজিষ্ট্রারের কার্যালয়ে অভিযোগ বক্স স্থাপন করা হয়েছে।সেবা গ্রহীতাদের ভোগান্তি লাঘবে রেজিষ্ট্রী কার্যক্রম আধুনিক ও সহজীকরন করা হয়েছে।
অসুস্থ্য, শারিরীক প্রতিবন্ধি ও বয়োজ্যেষ্ঠ নাগরিকদের ব্যবহারে হুইল চেয়ার দেয়া হয়েছে। এছাড়া সেবা গ্রহীতাদের বসার স্থানে বৈদুতিক পাখা স্থাপন করা সহ পয়:নিস্কাশন ব্যবস্থা নিশ্চিত করা হয়েছে। উপজেলা সাব-রেজিষ্ট্রারের এমন উদ্দোগে সেবা গ্রহীতাদের মাঝে স্বস্তি ফিরে এসেছে।
বন্ধ হয়েছে জাল জালিয়াতি, ভুয়া দাগ খতিয়ানে সৃজনকৃত কাগজ পত্রে জমি বিক্রী প্রবনতা। এতে নাগরিক বান্ধব হয়ে উঠেছে সাব-রেজিষ্ট্রারের কার্যালয়টি, এমন দাবী একাধিক নাগরিক সূত্রের।
সূত্র জানায়, কলাপাড়া উপজেলা সাব-রেজিষ্ট্রারের কার্যালয়টি একসময় ছিল সহকারী কমিশনার (ভূমি) অফিসের পরিত্যক্ত, জরাজীর্ন টিনশেড ঘরে। যেখানে সামান্য বৃষ্টি হলেই ভাঙ্গা টিনের চালের অসংখ্য ছিদ্র দিয়ে পানি পড়ে মূল্যবান দলিল নষ্ট হতো।
বিষয়টি নিয়ে তখন গনমাধ্যমে সংবাদ প্রকাশের পর নতুন সাব-রেজিষ্ট্রারের অফিস ভবন নির্মানে উদ্দোগ নেয় সরকার। এরপর অর্থ বরাদ্দ, ট্রেন্ডার প্রক্রিয়া সম্পন্নের পর ঠিকাদার নিযুক্ত করা হয়। এবং এখনও শেষ হয়নি নতুন ভবনের নির্মান কাজ।
কিন্তু জরাজীর্ন টিনের ঘরটিতে অফিস করা অসম্ভব হয়ে পড়ায় দায়িত্বপ্রাপ্ত সাব-রেজিষ্ট্রার কাজী নজরুল ইসলাম উপজেলা পরিষদের অব্যবহৃত টিন শেড ওয়াল কোয়ার্টারটি ব্যক্তিগত উদ্দোগে সংস্কার, মেরামত ও আংশিক নতুন নির্মানে এটি ব্যবহার উপযোগী হয়ে ওঠে।
এবং জরাজীর্ন টিনের ঘর থেকে অফিসটি স্থানান্তর করা হয়। এভাবে ক্রমশ: দলিল লেখক ও সেবা গ্রহীতাদের আস্থার মানুষ হয়ে ওঠেন কলাপাড়া সাব-রেজিষ্ট্রার কাজী নজরুল ইসলাম।
সম্প্রতি দেশের ‘১৯০ জন সাব-রেজিষ্ট্রারের ভুয়া কাগজপত্রে নিয়োগ ও অঢেল সম্পদ অর্জন’ সংক্রান্ত একটি অনুসন্ধানী প্রতিবেদন প্রকাশ করে বেসরকারী টেলিভেশন ৭১ টিভি। প্রতিবেদনটি প্রকাশের পর এটি ছড়িয়ে পড়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে।
কেউ কেউ এটির লিংক নতুন করে আপলোড দেয় ফেসবুকে। এতে আলোচনায় উঠে আসেন সাব-রেজিষ্ট্রার কাজী নজরুল ইসলাম।
শুরু হয় নতুন করে আলোচনা। অনেকে তাকে ভালো মানুষ বলে কমেন্টস করলেও কেউ কেউ বিষোদাগার করেছেন তার বিপুল অর্থ-সম্পদের মালিকানা নিয়ে।
তবে প্রতিবেদনটি সঠিক নয় বলে দাবী তার কর্মস্থল কলাপাড়া, বাউফল সাব-রেজিষ্ট্রী কার্যালয়ের কর্মকর্তা-কর্মচারী, নকল নবিশ ও দলিল লেখকদের।
এদিকে বরিশাল জেলার অগৈলঝারা থেকে বাপ্পি নামের একজন সেবা গ্রহীতা ফেসবুক কমেন্টস করেন, ‘কলাপাড়ার সাব রেজিষ্ট্রার কাজী নজরুল ইসলাম একজন সাদা মনের, সাংস্কৃতি মনা মানুষ। একজন সত্যিকারের মানবিক মানুষের মধ্যে যতগুলো গুণাবলী থাকা প্রয়োজন তার সবগুলোই তার মধ্যে আছে। অসংখ্য মানুষ তার দ্বারা উপকৃত হয়েছে এবং প্রতিনিয়ত হচ্ছে।
তার কাছে কেউ কোনো সহযোগিতার জন্য গেলে তাকে তিনি খালি হাতে ফিরিয়ে দেন না। তাই কুচক্রি মহল কে বলছি, একজন ভালো মানুষের পিছনে অহেতুক না লেগে তাকে সহযোগিতা করুন।’
রিফাত হোসেন নামের অপর একজন সেবা গ্রহীতা বলেন, ‘আগে একটি দলিল রেজিস্ট্রেশনে অনেক সময় লেগে যেত। এখন খুব দ্রুত ও ঝামেলাহীনভাবে কাজ শেষ হচ্ছে।
কর্মকর্তা নিজে আমাদের সাথে কথা বলেন এবং সমস্যার সমাধান করে দেন।’ একজন প্রবীণ নাগরিক ফুয়াদ হাসান জানান, ‘আমার যে সেবা পাওয়ার কথা, তা এখন সহজে পাচ্ছি। সাব-রেজিস্ট্রার সাহেব অত্যন্ত ভদ্র ও আন্তরিক।’
উপজেলা সাব-রেজিষ্ট্রার কাজী নজরুল ইসলাম বলেন, ‘আমি এখানে যোগদানের পর থেকে মানুষের সেবা দেয়ার জন্য কাজ করছি। আমি কতটুকু সেবা দিতে পেরেছি, আপনারা ভালো বলতে পারবেন।’
৭১টিভিতে প্রচারিত প্রতিবেদনের বিষয়ে তিনি বলেন, ‘আমার চাকুরীতে যোগদান, বাড়ী-ঘর ও পারিবারিক ব্যবসা নিয়ে যে তথ্য উপস্থাপন করা হয়েছে তা সঠিক নয়।
উচ্চ আদালতে মীমাংসিত বিষয় নিয়ে প্রতিবেদন করা হয়েছে।’ তিনি আরও বলেন,’আমার চাকুরীতে নিয়োগ ও যোগদানের বিষয়ে যথাযথ কর্তৃপক্ষ ভালো জানেন। ‘
মোয়াজ্জেম হোসেন
কলাপাড়া