বৃহস্পতিবার, ৩০ জানুয়ারী ২০২৫, ১২:০৮ অপরাহ্ন

সর্বশেষ সংবাদ :
শিক্ষকদের অবরুদ্ধ করে শিক্ষার্থীদের মানববন্ধন ও বিক্ষোভ মিছিল কলাপাড়ায় ১৯ নারী উদ্যোক্তা পেল ইনকিউবেটরসহ সৌর বিদ্যুৎ চালিত উপকরণ ছাত্রশিবির বরিশাল জেলা শাখার দিনব্যাপী থানা দায়িত্বশীল কর্মশালা ২০২৫ অনুষ্ঠিত আরাফাত রহমান কোকোর রূহের মাগফিরাতের জন্য মুনাজাত অনুষ্ঠিত বরিশাল শিক্ষা বোর্ডের সদ্য নিয়োগ পাওয়া সচিব অধ্যাপক ড. ফাতেমা হেরেনকে যোগদান করতে দেননি শিক্ষার্থীরা বরগুনায় আট কেজি ১০০ গ্রাম গাঁজাসহ রিপন সিকদার (২৮) নামে এক যুবককে গ্রেপ্তার নগরের কাশিপুর এলাকায় একটি দীঘি ও একটি পুকুর থেকে মানুষের শরীরের বিভিন্ন অংশ উদ্ধার করেছে পুলিশ বরিশাল সিটি করপোরেশনের (বিসিসি) ১৬০ জন পরিচ্ছন্নতাকর্মীকে ছাঁটাই করার প্রতিবাদসহ তিন দফা দাবিতে নগর ভবনের মূল গেট বন্ধ করে বিক্ষোভ করেছেন শ্রমিকরা সমাজতান্ত্রিক ছাত্র ফ্রন্টের ৪ দশক পূর্তিতে বরিশালে ছাত্র সমাবেশ ও লাল পতাকার মিছিল অনুষ্ঠিত হয়েছে অসহায় মেয়ে বরিশালের বিচার ও প্রশাসন বিভাগের কাছে চায় ন্যায্য বিচার ষড়যন্ত্র পূর্বক দায়েরকৃত মামলায় জেলহাজতে থাকা বাবার মুক্তির দাবীতে মেয়ের সংবাদ সম্মেলন দীর্ঘদিনের দখলকৃত ওয়ারিশের সম্পত্তিতে কাজ করতে গেলে পূর্ব পরিকল্পনা অনুযায়ী ভাড়াটে সন্ত্রাসী দিয়ে হামলা ও লুট পাটের ঘটনায় নারীসহ কমপক্ষে ১৫ জন আহত শেরে বাংলা স্মৃতি পদক পেলেন কলাপাড়ার গাজী ফারুক কলাপাড়ায় কমিউনিষ্ট পার্টির “গনতন্ত্র অভিযাত্রা” যৌতুক মামলায় গ্রেপ্তার আমেরিকান প্রবাসি জাহাঙ্গীর কবির পটুয়াখালী গলাচিপায় তিনটি মোটরসাইকেল সহ চোর আটক
জামায়াত আমির “আগে গণহত্যার বিচার, পরে আ.লীগের রাজনীতির অধিকারের প্রশ্ন

জামায়াত আমির “আগে গণহত্যার বিচার, পরে আ.লীগের রাজনীতির অধিকারের প্রশ্ন

Sharing is caring!

আওয়ামী লীগ রাজনৈতিক দল নয়, বরং গণহত্যাকারী একটি সিন্ডিকেট বলে মন্তব্য করেছেন বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামের আমির  ডা. শফিকুর রহমান।

তিনি বলেছেন, আগে গণহত্যার বিচার হোক, এরপর ক্ষতিগ্রস্তরাই রায় দেবেন ওনারা (আওয়ামী লীগ) এদেশে রাজনীতি করার অধিকার রাখে কি না।

(২১ জানুয়ারি) বিকেলে বরিশাল নগরের হেমায়েত উদ্দিন কেন্দ্রীয় ইদগাহ ময়দানে জামায়াতে ইসলামী বরিশাল মহানগর ও জেলা শাখার কর্মী সম্মেলনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে ডা. শফিকুর এসব কথা বলেন।

জামায়াত আমির বলেন, মুসলিম, হিন্দু, খ্রিস্টান, বৌদ্ধসহ সব ধর্মের মানুষ মিলেমিশে বাংলাদেশে আমরা যুগ যুগ ধরে বসবাস করছি। আমাদের মাঝে ধর্মীয় ও সামাজিক সম্প্রীতি আছে। কিন্তু একটা গোষ্ঠী বাংলাদেশকে সাড়ে ২৩ বছর শাসন করেছে বিভিন্ন পর্বে। তারা এই বাংলাদেশকে এক থাকতে দেয়নি, জনগণকে টুকরা টুকরা করে বিভক্ত করেছে। মুক্তিযুদ্ধের পক্ষ-বিপক্ষ, মেজরিটি-মাইনরিটি বিভিন্ন ভাগে বিভক্ত করেছে।

তিনি আরও বলেন, আমরা আমাদের সন্তানদের সঙ্গে কণ্ঠ মিলিয়ে রাস্তায় নেমেছিলাম ফ্যাসিজমকে বিদায় করার জন্য। সাড়ে ১৫ বছর আমরা দফায় দফায় আন্দোলন সংগ্রাম করেছি, ফ্যাসিজম বিদায়ে আমরা হয়তো ভিত রচনা করেছি; কিন্তু রাজনৈতিক আন্দোলনের মাধ্যমে আমরা বিদায় করতে পারিনি। শেষ আন্দোলনটা রাজনৈতিক ছিল না, ছাত্র-যুবসমাজের একটা অধিকারের আন্দোলন ছিল।

তারা কোটা সংস্কারের দাবি করেছিল। আর সরকার তাদের দমন করার জন্য হাতুড়ি বাহিনী পাঠিয়েছে। ওরা আমাদের ছেলেদের পিটিয়েছে, কলিজার টুকরা মেয়েদেরও পিটিয়েছে। এ অবস্থা দেখে একটি ছেলে বিদ্রোহী হয়ে উঠেছিল এবং বলেছিল—বুকের ভেতর অনেক ঝড়, বুক পেতেছি গুলি কর। দুনিয়ায় মানুষের অধিকার আদায়ের জন্য অনেকেই মারা যায়, কিন্তু ডানা মেলে বুকে গুলিকে আলিঙ্গন করেছেন একমাত্র ব্যক্তি আবু সাঈদ। আমরা এ সন্তানের জন্য গর্বিত।

জামায়াত আমির বলেন, এত এত ঘটনা কেন ঘটলো? একটা দল ও একজন ব্যক্তির রাক্ষুসে মানসিকতার কারণে এমনটা হয়েছে। তারা ক্ষমতার রাক্ষস, তারা অর্থের রাক্ষস; তারা দাম্ভিক ছিলেন, বড় অহংকারী ছিলেন; মানুষকে এবং বিভিন্ন দলকে তুচ্ছতাচ্ছিল্য করেছেন। তারা মানুষ বলে কাউকে সম্মান করেননি। দুনিয়ার পাওনা তারা কিছুটা পেয়েছেন, কিছুটা বাকি আছে। যেহেতু তারা গণহত্যাকারী ব্যক্তি ও দল, সেই কারণে আমরা চাই গণহত্যাকারী ব্যক্তি ও দলের প্রত্যেকের ন্যায় বিচার হোক।

গণহত্যার অভিযোগ মাথায় নিয়ে পালানো আসামিদের উদ্দেশে ডা. শফিকুর রহমান বলেন, বিদেশে যারা আছেন তাদের বলছি- সত্যি যদি দেশটাকে ভালোবাসেন তাহলে চলে আসেন। কী হয়েছে, অসুবিধা নেই। আপনাদের আমলে আমরা দফায় দফায় জেলে গিয়েছি, আমাদের কেমন রেখেছিলেন; এখন এলে আপনারা না হয় সেটি দেখার সুযোগ পাবেন।

আপনারা মিথ্যা মামলায় সাজানো সাক্ষী দিয়ে পাতানো আদালত দিয়ে আমাদের নেতাদের ফাঁসি দিয়েছেন, খুন করেছেন। কিন্তু আপনারা তো প্রকাশ্য দিবালোকের খুনি, বিশ্ববাসীর সামনে খুন করেছেন। তখন কোথায় ছিল আপনাদের মানবিক সত্তাটুকু, কীভাবে পারলেন গণহত্যা চালাতে। ইন্টারনেট বন্ধ করে লাশগুলো গুম করতে কীভাবে পারলেন। আজও অনেকে স্বজনের লাশ পাননি বলে কান্নায় ভেঙে পড়েন।

তিনি বলেন, আগে গণহত্যার বিচার হোক, ক্ষতিগ্রস্ত লোকেরা আগে তাদের ইনসাফ পাক। এরপর তারাই রায় দেবেন ওনারা এদেশে রাজনীতি করার অধিকার রাখেন কি না। রাজনীতির নাম যদি গণহত্যা হয়, তাহলে এমন দল বাংলাদেশের জনগণ বরদাশত করবে না। তবে রাজনীতির নাম যদি জনকল্যাণ হয়, তাহলে জনগণ যাকে পছন্দ করবে তাকে বরণ করবে। আওয়ামী লীগ প্রমাণ করেছে তারা রাজনৈতিক দল নয়, বরং গণহত্যাকারী একটি সিন্ডিকেট।

আমরা যা বললাম, আদালতে গিয়ে আওয়ামী লীগ প্রমাণ করুক এটা সত্য না মিথ্যা।

দক্ষিণাঞ্চলের বিষয়ে জামায়াত আমির বলেন, ভোলা থেকে গ্যাস সারা বাংলাদেশে যাক, কিন্তু আগে বরিশালে আসুক। যেমন আমি এটা চাই, তেমনি বরিশাল থেকে একটি সেতু ভোলাতে যাক সেটাও আমি চাই। ভোলাবাসী কেন বিচ্ছিন্ন হয়ে থাকবে, তাদের তো এদেশের উন্নয়নে ভূমিকা রয়েছে, তারা তো এদেশের নাগরিক। সব দাবির সঙ্গে আমার আরেকটা দাবি, মূল ভূখণ্ডের সঙ্গে ভোলাকে ব্রিজ দিয়ে সংযুক্ত করতে হবে। সরকারের কাছে দাবি জানাই, বরিশালের অনেক সমস্যার সমাধান হয়েছে, কিন্তু যে বিষয়গুলোর সমাধান হয়নি; সেগুলো অগ্রাধিকার ভিত্তিতে উদ্যোগ নিতে হবে।

তারা উদ্যোগ নিয়ে শেষ না করতে পারলে পরবর্তী সরকার এসে শেষ করবে। কিন্তু আমরা চাই উদ্যোগটা তাদের হাতে হোক। আমরা ভোলাকে একটি উন্নত জেলা হিসেবে দেখতে চাই, গোটা বরিশাল বিভাগকে আমরা একটি উন্নত বিভাগ হিসেবে দেখতে চাই। ধান-নদী-খাল এই তিনে বরিশাল, আমরা চাই এর সঙ্গে সোনার থালা যোগ করতে।

তিনি বলেন, উন্নয়নের জন্য যেখানে পানি সম্পদের উন্নয়ন দরকার সেটা হোক, যেখানে ভূমির উন্নয়ন দরকার সেটা হোক, যেখানে যোগাযোগের উন্নয়ন দরকার সেটা হোক এবং উন্নয়নটা বৈষম্যহীনভাবে সমান্তরালভাবে এগিয়ে যাক।

আল্লাহ রাব্বুল আলামিন যদি আমাদের এই জমিনের মানুষের খেদমত করার সুযোগ দেন, তাহলে আপনারা যে দাবিগুলো করলেন, আমরা ইনসাফ এবং অগ্রাধিকারের ভিত্তিতে আমাদের সর্বোচ্চ সামর্থ্য ও গুরুত্ব দিয়ে তা করবো।

জনগণের ভালোবাসা একটু কম পেয়ে অপজিশন গ্যালারিতে বসলেও এ দাবিগুলো আদায়ের জন্য আপনাদের যে আওয়াজ উঠবে, তার সঙ্গে আমাদের গলাও মিলে যাবে ইনশা আল্লাহ। দাবি আদায়ে আপনাদের হাত উঠলে আমাদের হাতও উঠবে। অতীতের সমস্ত দুঃশাসন এবং দুর্নীতিকে কবর দিয়ে সামনে এগিয়ে আমরা দল মত জাতিভেদে নির্বিশেষে ইনসাফের বাংলাদেশ গড়ে তুলি।

তিনি বলেন, ফ্যাসিবাদ বিদায় হয়েছে, এই দেশে ফ্যাসিবাদী হয়ে আর কেউ মাথা তুলতে পারবে না। চাঁদাবাজ, লুণ্ঠনকারী, দখলবাজ- তোমাদের বাংলাদেশ আর কখনো কবুল করবে না। জাতিকে ঐক্যবদ্ধ হয়ে সামনে এগোতে হবে।

ঐক্যবদ্ধ জাতির মাধ্যমে নতুন কাঙ্ক্ষিত বাংলাদেশ, সাম্যের বাংলাদেশ, মানবিক বাংলাদেশ আল্লাহ আমাদের দান করুন।

এ কর্মী সম্মেলনে জামায়াতের কেন্দ্রীয় ও স্থানীয় বক্তারা বক্তব্য রাখেন।

নিউজটি আপনার বন্ধুদের সাথে শেয়ার করুন




© All rights reserved © crimeseen24.com-2024
Design By MrHostBD