সোমবার, ০৯ ডিসেম্বর ২০২৪, ০৩:২৩ অপরাহ্ন

সর্বশেষ সংবাদ :
মহিপুরে ইয়াবাসহ গ্রেপ্তার -৩ কলাপাড়ায় ২১ বছর পর (বাশিস)’র কমিটি গঠন নামের কারণেই বগুড়া ১৬ বছর বৈষম্যের শিকার: সারজিস কলাপাড়ায় পৌর ৯ নং ওয়ার্ড বিএনপির সাংগঠনিক সমাবেশ বাউফলে ইমাম সমিতির উদ্যোগে ইসকনের বিরুদ্ধে বিক্ষোভ সমাবেশ কলাপাড়ায় ৫নং ওয়ার্ড পৌর বিএনপির সাংগঠনিক সমাবেশ অনুষ্ঠিত বাংলাদেশ হাই কমিশনে হামলার প্রতিবাদে বিক্ষোভ পটুয়াখালী ও বাউফলে আগরতলায় বাংলাদেশের উপ হাইকমিশনার অফিসে হামলার প্রতিবাদে বিক্ষোভ সমাবেশ কলাপাড়ায় প্রীতি ফুটবল ম্যাচ অনুষ্ঠিত কলাপাড়ায় ডাকাত দলের ৬ সদস্য আটক মৎস্যজীবী দলের দোয়া মুনাজাত বাউফলে ক্ষুদ্র ও প্রান্তিক কৃষকদের মাঝে বিনামূল্যে সার ও বীজ বিতরণ বাউফলে আগষ্টের গনঅভ্যুত্থানে নিহত শহীদদের উদ্দেশ্যে স্মরণ সভা অনুষ্ঠিত কলাপাড়ায় তারেক রহমান’র মুক্তির খবরে আনন্দ মিছিল কলাপাড়ায় উড়ন্ত মৃদু বিষধর বিলুপ্তপ্রায় লাউডগা সাপ উদ্ধার
কুয়াকাটায় সানভিউ প্রপার্টিজ এমডির বিরুদ্ধে ১ কোটি ৮৪ লাখ টাকা আত্মসাতের অভিযোগ

কুয়াকাটায় সানভিউ প্রপার্টিজ এমডির বিরুদ্ধে ১ কোটি ৮৪ লাখ টাকা আত্মসাতের অভিযোগ

Sharing is caring!

কলাপাড়া (পটুয়াখালী)প্রতিনিধি ঃ

পটুয়াখালীর কুয়াকাটায় সানভিউ প্রপার্টিজ লিমিটেডের এমডি মোশাররফ হোসেন এর বিরুদ্ধে কোম্পানির জমি বিক্রির ১ কোটি ৮৪ লাখ টাকা আত্মসাতের অভিযোগ উঠেছে।

বৃহস্পতিবার দুপুরে কুয়াকাটা প্রেসক্লাবে সাংবাদিক সম্মেলন করে এমন অভিযোগ করেন ওই কোম্পানির চেয়ারম্যান জহিরুল হক। সাংবাদিক সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে সানভিউ প্রপার্টিজ লিমিটেডের চেয়ারম্যান জহিরুল হক বলেন, কোম্পানির এমডি মোশাররফ তার স্বাক্ষর জাল করে ৪১ শতক জমি ১ কোটি ৮৪ লাখ টাকায় বিক্রি করে ওই টাকা কোম্পানির শেয়ার হোল্ডারদের বুজিয়ে না দিয়ে পুরো টাকা আত্মসাৎ করে।

এ নিয়ে তার বিরুদ্ধে ঢাকা ও কলাপাড়ায় কয়েকটি মামলা রয়েছে। সংবাদ সম্মেলনে তিনি দাবি করেন, ২০২০ সালে আওয়ামী লীগ সরকারের সময়ে মোশাররফ হোসেন স্থানীয় আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মনির আহমেদ ভূইয়া ও কেন্দ্রীয় যুবলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক সাইফুল আল সোহাগের নেতৃত্বে ছাত্রলীগ, যুবলীগের শতাধিক নেতাকর্মীদের নিয়ে জামায়াত ট্যাগ লাগিয়ে ভয়়ভীতি প্রদর্শন করে এবং কোম্পানি থেকে তাকে বের করে দেয়া হয়।

আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর এখন তিনি বিএনপি নেতা পরিচয়ে স্থানীয় ও কেন্দ্রীয় বিএনপির ছত্রছায়ায় কোম্পানির ভূয়া শেয়ার বিক্রি সহ নানা প্রতারণায় লিপ্ত হয়েছে।

এর প্রতিবাদ করলে আমার বিরুদ্ধে মামলা হামলা সহ নানা রকম ভয়ভীতি দেখিয়ে আসছে। লিখিত বক্তব্যে তিনি আরো বলেন, ২০১০ সালে এই কোম্পানির যাত্রা শুরু হয়। কোম্পানীটি হোটেল নির্মাণ ও ব্যবসার জন্য কুয়াকাটা পৌরসভার ৭ নং ওয়ার্ডে দুই প্লটে ৩৬.৮০ শতাংশ ও ৪১ শতাংশ জমি ক্রয় করে। সে সময় কোম্পানির চেয়ারম্যান ছিলেন ইঞ্জিনিয়ার শামসুজ্জামান এবং ব্যবস্থাপনা পরিচালক ছিলেন হাফিজুর রহমান রাহাত।

২০১২ সালে কোম্পানির চেয়ারম্যান হন হাফিজুর রহমান রাহাত এবং ব্যবস্থাপনা পরিচালকের দায়িত্ব দেয়া হয় মো: জহিরুল হককে। সে সময় ব্যবসায়িক কার্যক্রম ভালো না থাকায় কোম্পানির অন্যতম শেয়ার হোল্ডার আসলাম আহমেদ ও মোশারফ হোসেন কোম্পানি থেকে শেয়ার উত্তোলনের আবেদন করে।

কোনরূপ লাভ লোকসানের ঝুঁকি না নিয়ে মূল টাকা ফেরত দেওয়ার জন্য আমাকে বিশেষ ভাবে অনুরোধ করে। কোম্পানির ফান্ডে টাকা না থাকায় আমি ৩৬.৮০ শতাংশ জমি থেকে আসলাম আহমেদকে ৩৫ লক্ষ টাকার বিপরীতে ১০ শতাংশ এবং মোশারফকে ২০ লক্ষ টাকার বিপরীতে ৫.৭১ শতাংশ জমি লিখে দেই।

উভয়ের ৫ লক্ষ টাকা করে অবশিষ্ট থেকে যায় যা ছয় মাসের মধ্যে পরিশোধ করা হবে এবং কোম্পানির শেয়ার হোল্ডার থেকে তাদের নাম বাদ দেওয়া হবে এমন সিদ্ধান্ত নেয়া হয়। এর মধ্যে শেয়ার বিক্রি বাবদ কয়েকজন পাওনাদার তাদের পাওনা  টাকা দাবি করলে একই ভাবে তাদের পাওনা টাকার বিপরীতে ৩৬ শতাংশ সম্পত্তি লিখে দেওয়া হয়।

উক্ত চুক্তিনামা ১৪ অক্টোবর ২০১৩ সালে সম্পাদিত হয়। যেদিন থেকে আসলাম আহমেদ এবং মোশারফ হোসেন তাদের শেয়ার উত্তোলনের আবেদন করে সেদিন থেকে আর বোর্ড মিটিংয়ে তারা অংশগ্রহণ করেননি।

এমডি থাকাকালীন অবস্থায় আমি কোম্পানি থেকে ঢাকায় দুইটি ফ্ল্যাট খরিদ করি এবং ৪১ লক্ষ টাকা কোম্পানিকে প্রদান করি। কোম্পানিকে স্বল্প কালীন ঋণ হিসেবে ছয় লক্ষ টাকা প্রদান করি এবং ২০১২ থেকে ২০১৬ সাল পর্যন্ত আমার ২৫ হাজার টাকা করে মাসিক সম্মানি হিসাবে ১২ লক্ষ টাকা পাওনা হই ।

২০১৬ সালে কোম্পানির কিছু পলিসি সংক্রান্ত ব্যাপারে পুরাতন শেয়ারহোল্ডারদের সাথে আমার মতবিরোধ হয়। এক পর্যায়ে কোম্পানি ভেঙে দেওয়ার সিদ্ধান্ত চূড়ান্ত করা হয়। হিসাব নিকাশ করে আমরা শেয়ারের ভ্যালু নির্ধারণ করি। পুরাতন শেয়ার হোল্ডারগন আমার টাকা ফেরত দিতে ব্যর্থ হলে আমাকে তাদের শেয়ার কিনে নেওয়ার অনুরোধ জানায়।

আমি আমার ফ্ল্যাট বিক্রি ও অন্যান্য পাওনা সমন্বয়ে তাদেরকে পরিশোধ করার সিদ্ধান্ত নেই। ঠিক সেই মুহূর্তে আসলাম এবং মোশারফ আমার সাথে ব্যবসা করার জন্য আবারো তারা সান ভিউ প্রপার্টিজ লিমিটেডের শেয়ার থাকার জন্য অনুরোধ জানায়। আমি তাদের অনুরোধে আবারো তাদের দু’জনকে কোম্পানিতে নিয়ে নেই।

এর প্রেক্ষিতে কোম্পানির পরিচালনা পর্ষদ নতুন ভাবে সাজানো হয়। এ পরিচালনা পর্ষদে আমাকে চেয়ারম্যান, মোশাররফ হোসেন ব্যবস্থাপনা পরিচালক এবং আসলাম আহমেদকে সহকারী ব্যবস্থাপনা পরিচালক করা হয়। ২০২১ সালে কোম্পানির সহকারী ব্যবস্থাপনা পরিচালক আসলাম মারা যান। তার মারা যাবার পেছনে মোশাররফ হোসেন অনেকাংশে দায়ী।

কারন মোশাররফ হোসেন আসলামের কোটি টাকা জমি কেনার কথা বলে আত্মসাৎ করে। কোম্পানির এমডির দ্বায়িত্ব নেয়ার পর কোম্পানি আইনের প্রতি তোয়াক্কা না করে মোশাররফ হোসেন ৪১ শতাংশ জমি ১ কোটি ৮৪ লাখ টাকায় বিক্রি করে পুরো টাকা আত্মসাৎ করে।

এ নিয়ে আদালতে মামলা চলমান রয়েছে। এ জমি বেচাকেনার ক্ষেত্রে অসৎপথ অবলম্বন করা হয়েছে। বেচাকেনার অনুমতি নিতেও মিথ্যার আশ্রয় নিয়েছে। যাদের কাছে ওই জমি বিক্রি করা হয়েছে তারা এখন টাকা ফেরত চাচ্ছে।

কোম্পানীর চেয়ারম্যান জহিরুল হক দাবি করেন, মোশাররফ হোসেন একজন প্রতারক। তিনি জেলা প্রশাসনের অনুমোদনের তোয়াক্কা না করে কোম্পানির শেয়ার বিক্রির জন্য সাইন বোর্ড টানিয়ে প্রচার প্রচারণা চালাচ্ছে।

যা সম্পুর্ন বেআইনি। তার নামে চেক জালিয়াতির মামলা করেছে কয়েকজন ভুক্তভোগী শেয়ার ক্রেতা। সংবাদ সম্মেলনে তিনি তার প্রাপ্য ফিরিয়ে দেয়া সহ প্রতারক মোশাররফের বিরুদ্ধে আইনী পদক্ষেপ নেবার জন্য সংশ্লিষ্ট কতৃপক্ষের হস্তক্ষেপ কামনা করছেন।

সংবাদ সম্মেলনে এ সময় তার সাথে উপস্থিত ছিলেন কোম্পানির জমি বেচাকেনার মধ্যাস্ততাকারী মো: জাহাঙ্গীর হোসেন ও আঃ জলিল।

মোয়াজ্জেম হোসেন

কলাপাড়া পটুয়াখালী।

২৮-১১-২০২৪।

নিউজটি আপনার বন্ধুদের সাথে শেয়ার করুন




© All rights reserved © crimeseen24.com-2024
Design By MrHostBD