কলাপাড়া (পটুয়াখালী)প্রতিনিধি:
পটুয়াখালীর কুয়াকাটায় রোজ ভ্যালী হোটেল এন্ড রিসোর্ট ভাংচুর,লুটপাট ও দখল চেষ্টার অভিযোগ এনে কুয়াকাটা প্রেসক্লাবে সাংবাদিক সম্মেলন করেছেন ব্যবসায়ী এম এ খায়ের মোল্লা।
১৬ অক্টোবর (বুধবার) বিকেলে কুয়াকাটা প্রেসক্লাবে ভার্চ্যুয়ালি এ সংবাদ সম্মেলনে অংশ নিয়ে এমন অভিযোগ করেন তিনি। সংবাদ সম্মেলন করে নিজের নিরাপত্তা এবং হামলার হুমকির বিচার দাবি করেছেন ভুক্তভোগী এম এ খায়ের মোল্লা।
ভুক্তভোগী জানান, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র-জনতার আন্দোলনের মুখে আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের গত ৫ আগস্ট কুয়াকাটা পৌরসভার নবীনপুরে অবস্থিত ‘রোজ ভ্যালী মোটেল এন্ড রিসোর্ট’ দখলের চেষ্টায় হামলা ও ভাংচুর করে পটুয়াখালী সদর থানার লোহালিয়া এলাকার মো. জসিম শিকদার রানা ও তার ভাই কবির শিকদার।
এক পর্যায়ে তারা মোটা অঙ্কের চাঁদা দাবি করে। অন্যথায় হোটেলের ম্যানেজার রেজাউল করিম, তাজুল বেপারি ও অন্যান্য কর্মকর্তা-কর্মচারীদের হুমকি দেয়৷
তারা দলবল নিয়ে হোটেলে ব্যাপক ভাঙচুর করে এবং মালিক খায়ের মোল্লাসহ অন্যান্যদের মেরে সাগরে ভাসিয়ে দেবে মর্মে হুমকি দেয়। এতে তার প্রায় কোটি টাকার ক্ষয ক্ষতি হয়েছে বলে জানান এই ব্যবসায়ী।
এ ঘটনায় গত ১৯ সেপ্টেম্বর পটুয়াখালী জেলা জজ আদালতে মামলা করতে যাই। কিন্তু আদালত চত্ত্বর থেকে জসিম শিকদার রানা, কবির শিকদার, সাঈদুর রহমান, মো. রনিসহ ৩০-৪০ জনের একটি দল আমাকে অপহরণ করে নিয়ে যায়।
জসিম শিকদারের নিজের ব্যবহৃত গাড়ীতে (ঢাকা মেট্রো-গ-২৩-৩০৩৮) করে লোহালিয়া ব্রিজ পার হয়ে কিছু দূরে বিলের মাঝে নির্জন এলাকায় নিয়ে বেধরক মারধর করে।
রাতভার তাকে নির্যাতন করে। অস্ত্রের মুখে জিম্মি করে একশ টাকা মূল্যের ১২টি ননজুডিশিয়াল স্টাম্পে স্বাক্ষর নেয়া হয়। তার সঙ্গে থাকা বাংলাদেশ কমার্স ব্যাংকের রাজধানীর বিজয়নগর শাখার একটি চেকে জোরপূর্বক স্বাক্ষর নেয়।
এছাড়া তিনটি ব্লাঙ্ক কাগজে সই নেয় জসিম শিকদারের সন্ত্রাসী বাহিনী। এমনকি তারা খায়ের মোল্লাকে নগ্ন করে ভিডিও ধারণ করে। পরবর্তীতে যেন এ বিষয়ে আইনের আশ্রয় না নেয়া হয় সেজন্য হুমকি দেয়।
তিনি বলেন, গতকাল ১৫ অক্টোবর (মঙ্গলবার) জসিম সিকদার ও তার সন্ত্রাসী বাহিনী নিয়ে রোজভ্যালী হোটেল পুনরায় দখল করতে যায়। এতে সহযোগিতা করে স্থানীয় কিছু সুবিধাবাদী।
এ ঘটনায় পটুয়াখালী সদর থানায় মামলা করার কথা জানিয়ে খায়ের মোল্লা বলেন, পুলিশ আসামি জসিম শিকদারের ব্যবহৃত গাড়িটি ড্রাইভারসহ জব্দ করেছে। আসামিদের হুমকি-ধমকিতে প্রাণভয়ে আমি আইনের আশ্রয় নিতে চেয়েও পারিনি। প্রাণ ভয়ে আমার কোনো প্রতিনিধি থানায় গিয়ে অভিযোগ দায়ের করতে পারেনি।
প্রায় একমাস চিকিৎসা নিয়ে এবং প্রাণভয়ে পালিয়ে বেড়িয়ে এক পর্যায়ে গত ৩০ সেপ্টেম্বর আমি পটুয়াখালী সদর থানায় মামলা দায়ের করি। কিন্তু আসামি জসিম শিকদার রানা এখনো আমাকে ফোন করে এবং হোটেলে লোক পাঠিয়ে আমার স্টাফদের হুমকি দিচ্ছে।
আমি যদি হোটেলে যাই তাহলে আমাকে মেরে সাগরে ভাসিয়ে দেবে। এ অবস্থায় আমার প্রাণহানির শঙ্কায় আছি এবং আমার ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের ক্ষতির আশঙ্কা করছি। এ অবস্থায় প্রাণভয়ে আমি আমার ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে যেতে পারছি না।
তিনি মাননীয় প্রধান উপদেষ্টা, স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টাসহ সংশ্লিষ্ট দপ্তর ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর জোরালো পদক্ষেপ ও বিশেষ দৃষ্টি কামনা করেছেন।
এবিষয়ে জসিম সিকদার রানা জানান, এই জমির প্রকৃত মালিক হয়েও বিগত বছরে ধারে কাছেও আসতে পারিনি। জনৈক খায়ের মোল্লা নামে এক লোক জোরপূর্বক ভোগ দখল করে আসছে।
সরকার পরিবর্তন হওয়ার পর আইনি প্রক্রিয়ায় হোটেলটি পুনরুদ্ধারের জন্য পটুয়াখালী বিজ্ঞ আদালতে মামলা করি। বিজ্ঞ আদালত থেকে আমি রায় পাই। প্রকৃত দলিল অনুযায়ী আমি এই হোটেলের মালিক।
মোয়াজ্জেম হোসেন
১৬-১০-২০২৪।
কলাপাড়া