সোমবার, ২৫ নভেম্বর ২০২৪, ০৪:১০ অপরাহ্ন
কলাপাড়া (পটুয়াখালী)প্রতিনিধি :
পটুয়াখালীর কলাপাড়ায় বিক্ষোভের মুখে ভূমিহীন ১৩৬ পরিবারের স্থাপনা উচ্ছেদ অভিযান বন্ধ হয়ে গেছে।এতে স্বস্তি ফিরেছে ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারের সদস্যদের মাঝে।
শুক্রবার বেলা ১১টার দিকে উপজেলার
টিয়াখালী ইউনিযনের ইটবাড়িয়া গ্রামে বেড়িবাঁধের ঢালে বসবাসকারী জিয়া কলোনীর ভূমিহীন ১৩৬ পরিবারকে ভেকু নিয়ে উচ্ছেদ করতে আসে একটি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান।
স্থানীয় ও প্রত্যক্ষদর্শী সূত্র জানা গেছে, ভূমিহীন এ পরিবারগুলোকে উচ্ছেদকালে তাদের পুনর্বাসনের দাবীতে বিক্ষোভের মুখে পিছু হটতে বাধ্য হয় ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানের লোকজন। ক্ষতিগ্রস্তদের দাবি বেড়িবাঁধের উপর রাস্তা নির্মানের ফলে এই পরিবারগুলো উচ্ছেদ হতে ছিল। পরিবারকে কোন ধরনের ক্ষতিপূরণ বা পুনর্বাসন দেওয়া হচ্ছে না।
বরং কোন পূর্ব নোটিশ ছাড়াই আজকে উচ্ছেদ করতে আসে ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান।
উচ্ছেদ আতংকে শুক্রবার সকালে ভূমিহীন পরিবারের একটি দল উপজেলা নির্বাহী অফিসারের সাথে দেখা করে তাদের পুনর্বাসনের আগে উচ্ছেদ না করার দাবী জানান।
ইউএনও বাসভবনে এই আলোচনা চলাকালীন সময়ে ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানের লোকজন ভেকু নিয়ে উচ্ছেদ শুরু করতে যায়। এমন পরিস্থিতিতে কলাপাড়া উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোঃ রবিউল ইসলাম তার ফেসবুক আইডিতে লিখেন যে, “জিয়া কলোনি সংলগ্ন ১৩৬ পরিবার উচ্ছেদ করে রাস্তা নির্মাণে উপজেলা প্রশাসন, কলাপাড়া কিংবা উপজেলা ভূমি অফিস, কলাপাড়া কোনো নির্দেশনা দেয় নি। ১৩৬ পরিবারের থাকার যায়গা নিশ্চিত না করে কোনো উচ্ছেদ কার্যক্রম পরিচালনা করা হবে না মর্মে ইতোপূর্বে উপজেলা প্রশাসন সিদ্ধান্ত নিয়েছে।
সংশ্লিষ্ট ঠিকাদারকে কাজ বন্ধ রাখার নির্দেশ দেয়া হয়েছে।”এর আগে বিগত দুই দশক আগে তৎকালীন সরকার বাস্তুভিটাহীন হওয়ার কারণে ভূমিহীন পরিবারগুলোকে বসবাসের জন্য
ইটবাড়িয়া গ্রামে আন্ধারমানিক নদীর পাড়ে
বেড়িবাধের ঢালে বাংলাদেশ পানি উন্নয়ন বোর্ডের জমিতে কলোনী করে থাকার সুযোগ করে দিয়েছিল।
যার পর থেকে তারা দীর্ঘদিন ধরে
বেড়িবাঁধের ঢালে বসবাস করে আসছে। সম্প্রতি পায়রা বন্দরের প্রথম টার্মিনাল থেকে প্রশাসনিক ভবন হয়ে ঢাকা—কুয়াকাটা আঞ্চলিক সড়কের সাথে যুক্ত হওয়ার বিকল্প সড়ক হিসাবে পায়রা বন্দরের গেট থেকে শহীদ সৈয়দ নজরুল ইসলাম সেতু পর্যন্ত বেড়িবাঁধের উপর রাস্তা নির্মাণ করা হচ্ছে।
এই রাস্তা নির্মাণ করতে কলোনীসহ বেড়িবাঁধের ঢালে বসবসকারী ১৩৬টি পরিবারকে উচ্ছেদ
করা হচ্ছে। ফলে ভূমিহীন মুক্ত কলপাড়ায় ১৩৬টি পরিবার নতুন করে ভূমিহীনহতে যাচ্ছে।ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারের সদস্যরা জানান,
আমাদেরকে উচ্ছেদ করা হলেও কোন ধরনের ক্ষতিপুরন বা পুনর্বাসন করা হবে না বলে আমরা
জানতে পেরেছি।
এই পরিস্থিতিতেমাথা গোজার শেষ আশ্রয় হারালে আমাদের জীবন
সম্পূর্ণভাবে অনিশ্চিত হয়ে পড়বে। উচ্ছেদের পরে আমরা কোথায় থাকবো, কি করবো কিছুই বুঝে
উঠতে পারছি না।
মোয়াজ্জেম হোসেন
কলাপাড়া
১২/১০/২০২৪