সোমবার, ২৫ নভেম্বর ২০২৪, ০৩:৫৫ পূর্বাহ্ন
গলাচিপা (পটুয়াখালী) প্রতিনিধিঃ
পটুয়াখালীর গলাচিপায় বিয়ের প্রলোভনে এক প্রতিবন্ধী নারীকে একাধিকবার ধর্ষণের অভিযোগ পাওয়া গেছে। ঘটনাটি ঘটেছে উপজেলার আমখোলা ইউনিয়নে মুদিরহাট এলাকায়। এ ব্যাপারে ধর্ষণের শিকার প্রতিবন্ধী মোসা. ডালিম বেগম (৩০) কারও কাছে বিচার চাইলে অভিযুক্ত মো. আলমাচ খা তাকে গুম করার হুমকি দেয় বলে জানান ওই নারী।
তবে বিচারের আশায় দ্বারে দ্বারে ঘুরলেও বিচার পাননি তিনি। এ বিষয়ে গলাচিপা থানায় একটি এজাহার দায়ের করেন ধর্ষিতা মোসা. ডালিম বেগম বেগম। যার জিআর মামলা নং- ১১৮/২৩, তারিখ- ১০/০৬/২০২৩। এ বিষয়ে ধর্ষণের শিকার প্রতিবন্ধী মোসা. ডালিম বেগম প্রতিবেদককে জানান, আমি প্রতিবন্ধী বলে কয়েক বছর আগে স্বামীর সাথে বনিবনা না হওয়ায় স্বামীর সঙ্গে ছাড়াছাড়ি হয়।
আমি দুই সন্তানের জননী। তালাকের পরে আমি আমার পিতার বাড়িতে আমার ২ সন্তান নিয়ে থাকতাম। আমার বাবা মা মারা যাওয়ায় আমি বাড়িতে একা থাকতাম। এই সুযোগে আমাদের একই এলাকার রাজ্জাক খার ছেলে মো. আলমাস খা আমাকে প্রায় সময়ই কু-প্রস্তাব দিয়ে আসছিল। আমি রাজী না হওয়ায় সে আমাকে বিয়ের প্রস্তাব দিতে থাকে।
এক পর্যায়ে আলমাস খা আমাকে বিয়ে করবে বলে রাতের আঁধারে আমার ঘরে এসে আমার ইচ্ছার বিরুদ্ধে আমাকে ধর্ষণ করে। এভাবে সে আমাকে একাধিকবার ধর্ষণ করে। আমি বিবাহের কথা বললে সে পরে বিবাহ করবে বলে জানায়।
আমি বিবাহের জন্য বারবার বললে সে আমাকে বিবাহ করবে না বলে জানায়। আমি প্রতিবন্ধী মানুষ। থানায় মামলা করেছি। কিন্তু এখনও কোন বিচার পাই নাই। আলমাস খা টাকা দিয়ে সবকিছু তার পক্ষে নিয়ে যায়।
প্রতিবন্ধী নারী হওয়ায় আমি কী এর বিচার পাব না। আলমাস খা আমার সতীত্ব নষ্ট করেছে। সমাজের কাছে এখন আমি মুখ দেখাতে পারি না। আমি প্রশাসন সহ সবার কাছে এর বিচার চাই। যাতে আর কোন নারী আমার মত ধর্ষণের শিকার না হয়। এ বিষয়ে প্রতিবেশী নিলুফা, বিউটি বেগম জানান, ডালিম প্রতিবন্ধী মানুষ। ও ২ ছেলেকে নিয়ে ঘরে থাকত।
আলমাস খা তাকে প্রায় সময়ই উত্যক্ত করত এবং বিয়ের প্রলোভন দেখায়। আলমাস খা বারবার ডালিমের বাসায় আসত। পরে ডালিমের কাছে জানতে পারি আলমাস খা ডালিমকে বিয়ে করবে বলে ধর্ষণ করেছে।
কিন্তু আজ অবধি সে বিবাহ করে নি। এদিকে আলমাসের স্ত্রী ধর্ষণের খবর জানতে পেরে তার স্বামীকে কিছু না বলে উল্টো ডালিমকে মেরে আহত করে। এতে ডালিম গলাচিপা হাসপাতালে ভর্তি ছিল।
এ বিষয়ে ধর্ষক আলমাস খার নিকট জানতে তার মোবাইলে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করা হলে সে বিষয়টি এড়িয়ে যায়। এ বিষয়ে আলমাস খার স্ত্রীর কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ডালিম একজন খারাপ নারী।
তার স্বামী না থাকায় সে আমার স্বামীকে জোর করে বিয়ে করতে চেয়েছিল। আমার স্বামী নির্দোষ।
এ বিষয়ে আমখোলা ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মো. কামরুজ্জামান মনির বলেন, বিষয়টি শুনেছি। আদালতে মামলা হয়েছে। আইন এর বিচার করবে। এ বিষয়ে গলাচিপা থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মো. ফেরদাউস আলম খান বলেন, ঐ নারী থানায় এসেছিলো। আলমাস খা দোষী হলে অবশ্যই বিচারের আওতায় আসবে।