সোমবার, ১৩ অক্টোবর ২০২৫, ১০:৩১ পূর্বাহ্ন

সর্বশেষ সংবাদ :
দিনে দুপুরে কিশোরকে ছুরিকাঘাতে হ/ত্যা/র চেষ্টা বাউফলে এক প্রসূতির জরায়ুর ভিতরে সিজারিয়ান কাচি পাওয়ার অভিযোগ ‘শীগ্রই কলাপাড়ায় যুগ্ম জেলা জজ আদালত স্থাপন করতে হবে’ বিচারপতি জেবিএম হাসান কুয়াকাটায় ২দিন ব্যাপী শিক্ষক মিলনমেলা অনুষ্ঠিত বরিশালে নারীপক্ষের আয়োজনে তরুণ প্রজন্মের সফলতার গল্প শীর্ষক আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত বাউফলে জেলা প্রশাসকের শুভ আগমন উপলক্ষে মতবিনিময় সভা বাউফলে জেলেদের মাঝে (বিজিএফ) এর চাল বিতরণে অনিয়ম স্বল্পমূলে তৈরিকৃত ১৯২ জন জেলেদের মাঝে লাইফবয়া বিতরণ পটুয়াখালী র‍্যাব ক্যাম্পে,ঘুমন্ত অবস্থায়  র‍্যাব সদস্যর মৃ/ত্যু কলাপাড়ায় প্রতিষ্ঠান প্রধানদের সাথে ইউএনও’র মত বিনিময় বাউফলে সড়ক দুর্ঘটনায় ২ স্কুল শিক্ষকসহ আহত-৩ মা ইলিশ সংরক্ষণ অভিযান ২০২৫ কলাপাড়ায় বৌদ্ধবিহার গুলোতে উদযাপিত হচ্ছে প্রবারনা পূর্ণিমা কুয়াকাটা সৈকত থেকে অজ্ঞাত যুবকের অর্ধগলিত ম/র/দে/হ উদ্ধার মহিপুরে অগ্নিকান্ডে ক্ষতিগ্রস্ত দোকানিদের টিন ও নগদ টাকা প্রদান
বিএনপির রাজপথের আন্দোলন কবে?

বিএনপির রাজপথের আন্দোলন কবে?

Sharing is caring!

দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচনের সময় থেকেই বিএনপির নেতারা বলে আসছেন, তারা ‘ঈদের পর’ সরকারের বিরুদ্ধে আন্দোলন গড়ে তুলবেন। দশম সংসদ পাঁচ বছর কাটিয়ে গত ডিসেম্বর অনুষ্ঠিত হলো একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন। এই নির্বাচনের আগে বিএনপি প্রধান খালেদা জিয়াকে দু’টি দুর্নীতি মামলায় কারাগারে যেতে হয়। 

তিনি কারাবন্দি হওয়ার পর বিএনপি নেতাদের আন্দোলনের হুঁশিয়ারি আরও বাড়ে। এমনকি নির্বাচন ঘনিয়ে আসার পর দলটির নেতারা খালেদাকে ছাড়া ভোটে না যাওয়ার ঘোষণাও দেন। শেষতক তারা খালেদাকে ছাড়াই ভোট করেন। নির্বাচনী প্রচারণার সময়ও তারা খালেদার মুক্তি দাবিতে আন্দোলনের হুঁশিয়ারি দেন বারবার। এরপর পেরিয়ে গেলো আরও পাঁচ মাস। কোনো ‘চূড়ান্ত আন্দোলন’ দেখতে পেলেন না বিএনপির তৃণমূলের নেতাকর্মীরা। এই অবস্থায় নেতাকর্মীদের প্রশ্ন, ‘রাজপথের সেই আন্দোলন কবে হবে? কবে মুক্তি পাবেন দলের চেয়ারপারসন?’

১৬ মাস আগে ২০১৮ সালের ৮ ফেব্রুয়ারি খালেদা জিয়া কারাগারে যাওয়ার পর এবারের ঈদুল ফিতরসহ তিনটি ঈদ বন্দি হিসেবে কাটছে তার। একসঙ্গে এতোদিন কারাগারে তিনি, গোটা রাজনৈতিক ক্যারিয়ারে এই প্রথম। 

নীতি-নির্ধারক পর্যায়ের নেতাদের ভাষ্যে, কারাগারে যাওয়ার সময় খালেদা জিয়াই দলীয় নেতাকর্মীদের শান্ত থাকতে বলেছেন। বলেছেন শান্তিপূর্ণ আন্দোলন-সংগ্রাম করতে। যদিও কয়েকজন নেতা বিভিন্ন সভা-সমাবেশে বলে চলেছেন, আইনিভাবে খালেদা জিয়াকে মুক্ত করা সম্ভব নয়। আন্দোলন ছাড়া সরকার তাকে মুক্তি দেবে না। তাদের এই বক্তব্য ধরে দ্বিতীয়-তৃতীয় সারির নেতারা জানতে চান, রাজপথের আন্দোলন কি আদৌ হবে?

ওই নেতাকর্মীরা বলছেন, ‘ঈদের পরে আন্দোলন এমন কথা গত ১২ বছর যাবত শোনা যায়। সেই ঈদটা কবে? যেটার পরে আন্দোলন হবে? সরকারের পতন হবে?’ তাদের কথায়, ‘ঈদতো আরও একটা গেলো। এখন কি আন্দোলন হবে?’

গত ২৬ মে সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতি মিলনায়তনে জাতীয় ঐক্যফ্রন্টভুক্ত দল নাগরিক ঐক্য আয়োজিত ইফতার মাহফিলে এই আন্দোলন প্রসঙ্গটি নিয়ে অনেকেই আঙুল তুলেছেন কেন্দ্রীয় নেতাদের দিকে।

সেখানে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক আসিফ নজরুল বলেন, ‘এই দেশে মাগুরার একটি নির্বাচনে কারচুপি হওয়ার পর যে ধরনের আন্দোলন হয়েছে, ৩০ ডিসেম্বর ৩০০ আসনে এমন নির্বাচন হওয়ার পরও সেরকম আন্দোলন হয়নি। এমনকি ঐক্যফ্রন্ট নেতারা একটা হরতাল পর্যন্ত দিতে পারেননি।’

অনুষ্ঠানে বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা আব্দুস সালাম বলেন, ‘আমরা কেন একটি হরতাল দিতে পারলাম না। তখন পারিনি, এখন কেন পারছি না?’

তার বক্তব্যের সূত্র ধরে নাগরিক ঐক্যের আহবায়ক মাহমুদুর রহমান মান্না বলেন, ‘এটা আমাদের ব্যর্থতা। আমিই হরতাল দেওয়ার প্রস্তাবক ছিলাম। কিন্তু আমরা দিতে পারিনি। এখনো আমাদের সামনে অনেক ইস্যু আছে, যা সামনে রেখে হরতাল দেওয়া যায়। খালেদা জিয়াকে অন্যায়ভাবে কারাগারে বন্দি রাখা হয়েছে। তার মুক্তির জন্যও হরতাল দেওয়া যেতে পারে।

তৃণমূলের নেতাকর্মীরা বলছেন, বছরের পর বছর শুনছি ঈদের পরে আন্দোলন। এ নিয়ে আওয়ামী লীগের নেতারাও টিপ্পনি কাটেন। লাখ লাখ অনুসারী আর কর্মী-সমর্থক থাকতেও বিএনপি কোনো আন্দোলন করতে পারছে না। কিন্তু কেন?

সূত্র জানায়, যেদিন খালেদা জিয়াকে সাজা দিয়ে আদালত কারাগারে পাঠান, সেদিন থেকেই আন্দোলনের প্রস্তুতি ছিল দলের মধ্যে। কিন্তু দলের সিনিয়র নেতারা খালেদা জিয়া ও ভারপ্রাপ্ত চেয়ারপারসন তারেক রহমানের দোহাই দিয়ে সে আন্দোলন করতে দেননি। এরপর আস্তে আস্তে নেতাকর্মীরা ঝিমিয়ে পড়েন। তবে ৩০ ডিসেম্বর একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন সামনে রেখে অনেকটা চাঙ্গা হয়েছিলেন দলীয় নেতাকর্মীরা। খালেদা জিয়ার মুক্তির বিষয়টি চাপা পড়ে যায় নির্বাচনী আমেজে। তখন বিএনপি নেতাকর্মীরা ধারণা করেছিলেন, নির্বাচনে জয়লাভ না করলেও শক্ত অবস্থান নিয়ে সংসদে গেলে হয়তো দলীয় নেত্রীর মুক্তির একটা পথ তৈরি হবে। কিন্তু তাদের সে আশা পূরণ হয়নি। ব্যাপক ভরাডুবির পর নেতাকর্মীদের অনেকে আন্দোলনের বদলে গা-ঢাকা দিয়েছেন।

নির্বাচনের আগে যেসব নেতা মনোনয়নের জন্য নয়াপল্টন আর গুলশান কার্যালয়ে ব্যাপক শো-ডাউন করেছেন, তাদের কাউকে এখন আর দেখা যায় না। দলীয় যে দু’চারজন নেতাকর্মী নয়াপল্টন কার্যালয়ে আসেন, এ প্রসঙ্গে তারা বলেন, ‘মৌসুমী পাখিরা এসেছিল ক্ষমতার সুবাতাস দেখে। ক্ষমতা যখন মেলেনি তখন তারা হাওয়া হয়ে গেছে। আবার যদি কখনো ক্ষমতার বাতাস পায় তখনই তারা ফিরে আসবে। তার আগে তাদের আর দেখা যাবে না।’

এসব বিষয়ে জানতে চাইলে বিএনপির ঢাকা বিভাগীয় সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক অ্যাডভোকেট আব্দুস সালাম আজাদ বলেন, দিন তারিখ ঠিক করে আন্দোলন হয় না। তবে আশা করি দলীয় চেয়ারপারসনের মুক্তির দাবিতে শিগগির আমরা রাজপথে আন্দোলন গড়ে তুলবো।

নির্বাচনের আগে যেসব নেতাকর্মী মনোনয়নের জন্য দৌড়ঝাঁপ করেছিলেন তারা কোথায় জানতে চাইলে আব্দুস সালাম আজাদ বলেন, ৩০ ডিসেম্বরের নির্বাচনের চিত্র দেখে সবাই হতবাক হয়ে গেছে। তারা সবাই দলেই আছে। সময় হলে সবাইকে রাজপথে দেখা যাবে। 

তবে তিনি স্বীকার করেন যে মনোনয়নের সময় কিছু মৌসুমী নেতা দেখা যায়। তারা এখন সরকারের নির্যাতনের ভয়ে গা-ঢাকা দিয়েছেন। বর্তমান সরকার যে অত্যাচার নির্যাতন করছে তা গত ৪৮ বছরে কোনো সরকারই করেনি। সেজন্য দলীয় নেতাকর্মীরা অতিষ্ঠ।

নিউজটি আপনার বন্ধুদের সাথে শেয়ার করুন




© All rights reserved © crimeseen24.com-2024
Design By MrHostBD