রবিবার, ২৪ নভেম্বর ২০২৪, ১০:০৪ পূর্বাহ্ন
ক্রাইমসিন২৪ ডেস্ক: বৈশ্বিক উষ্ণতার জন্য দায়ী না হলেও জলবায়ু পরিবর্তনের কুফল ভোগ করছে বাংলাদেশ। জার্মানির মিউনিখে জলবায়ু পরিবর্তন ও নিরাপত্তা বিষয়ক প্যানেল আলোচনায় এ কথা বলেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
তিনি বলেন, বাংলাদেশের ২০ শতাংশ মানুষ উপকূলীয় এলাকায় বসবাস করেন, জনসংখ্যার তিনভাগের একভাগ মানুষ সমুদ্রপৃষ্ঠের উচ্চতা বৃদ্ধিজনিত কারণে বাস্তুচ্যুত হওয়ার ঝুঁকিতে রয়েছে। যদিও বিশ্ব-উষ্ণায়নের ক্ষেত্রে আমাদের ভূমিকা অত্যন্ত কম, সত্যি কথা বলতে গেলে আমাদের কোনো ভূমিকাই নেই, আমরা উষ্ণায়নের জন্য দায়ী নই। অথচ, আমরাই সবচেয়ে বেশি ভুক্তভোগী।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব কত ভয়াবহ হতে পারে তা বাংলাদেশে গেলে বুঝা যাবে। এর প্রভাবে বিভিন্ন প্রাকৃতিক দুর্যোগের মুখে পড়ছে মানুষ। কৃষিকাজ, ইলিশের প্রজনন ব্যাহত হওয়ার পাশাপাশি বাড়ছে রোগের প্রাদুর্ভাব। গৃহহীন হচ্ছে হাজারো মানুষ।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, এসব দুর্যোগ মোকাবেলা করেই এগিয়ে যাচ্ছে বাংলাদেশ। নিজস্ব অর্থায়নে জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবেলায় তহবিল গঠন করা হয়েছে।
শেখ হাসিনা জানান, বাংলাদেশসহ অনেক দেশেরই জলবায়ু পরিবর্তনের ঝুঁকি কাটিয়ে উঠতে সীমাবদ্ধতা রয়েছে। বিশ্ববাসীকে এ দিকে নজর দেবার আহ্বান জানান তিনি।
তিনি বলেন, বাংলাদেশ ছাড়াও দক্ষিণ এশিয়া, পূর্ব এশিয়ার মানুষও বাস্তুচ্যুত হওয়ার ঝুঁকিতে রয়েছে। বিষয়টি নিয়ে আমরা উদ্বিগ্ন। ছোট ছোট বহু দ্বীপ রয়েছে, তারাও দুর্ভোগে পড়েছে। তিনি আরো বলেন, জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব মোকাবিলায় বিশ্ব সম্প্রদায়ের নানা প্রতিশ্রুতি থাকলেও কার্যত কোনো পদক্ষেপ নেই।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, মারাত্মক প্রতিবন্ধকতা সত্ত্বেও বাংলাদেশ অব্যাহতভাবে এগিয়ে যাচ্ছে। জলবায়ু পরিবর্তনজনিত বাধা থাকলেও ধান, মাছ ও সবজি উদপাদনে দেশের উন্নতির চিত্র তুলে ধরেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ধনী দেশগুলোর সদিচ্ছা আর ইতিবাচক মনোভাবই পারে জলবায়ু পরিবর্তন ঠেকাতে। শেখ হাসিনা প্যানেল আলোচনায় অংশ নেন নরওয়ের পররাষ্ট্রমন্ত্রী, কেনিয়ার পররাষ্ট্র বিষয়ক মন্ত্রিপরিষদ সচিব, মার্কিন সিনেটর শেলডন হোয়াইট হাউসসহ বেশ কয়েকজন।
জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব মোকাবিলায় বিশ্ব সম্প্রদায়ের নানা প্রতিশ্রুতি থাকলেও কার্যত কোনো পদক্ষেপ নেই উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, জলবায়ু উদ্বাস্তু এবং ক্ষতিগ্রস্থদের জন্য ভবিষ্যত কর্মপন্থা বিশ্ব নেতাদেরই গ্রহণ করতে হবে।
জলবায়ু শরণার্থীদের জন্য জিডিপির এক ভাগ ব্যয় করতে বিশ্ববাসীকে আহ্বানও জানান শেখ হাসিনা। নিরাপত্তা সম্মেলনে যোগদান শেষে আন্তর্জাতিক প্রতিরক্ষা এবং সমরাস্ত্র প্রদর্শনীতে যোগ দিতে আরব আমিরাতে উদ্দেশ্যে জার্মানি ছাড়েন প্রধানমন্ত্রী।