পটুয়াখালীতে ৯৯৯ এ কল, প্রান বাচলো গৃহবধূর, স্বামী ও শশুরের বিরুদ্ধে হত্যা চেষ্টার অভিযোগ।
মু,হেলাল আহম্মেদ(রিপন)
পটুয়াখালী জেলা প্রতিনিধিঃ
পটুয়াখালী জেলার কলাপাড়ায় নতুন ঘরে দ্বিতীয় স্ত্রীকে এনেই প্রথম স্ত্রীকে পরপারে পাঠাতে হত্যা চেষ্টার অভিযোগ উঠেছে স্বামী মুসা ঘরামি (৩৫), ও তার বাবা আজিজ ঘরামির বিরুদ্ধে।
অভিযোগকারী হলেন গৃহবধূ জহুরা বেগম (৩০)।পরে ৯৯৯ এ কল, ঘটনাস্থল থেকে গৃহবধূকে গুরুত্বর অসুস্থ অবস্থায় উদ্ধার করে প্রান বাচালো থানা পুলিশ।
ঘটনাটি ঘটে গত শনিবার (১২-জুন-২০২১ ইং) তারিখ বিকেল আনুমানিক ৪ টার সময় পৌরসভার ৪ নং ওয়ার্ডের এতিমখানা এলাকায় ঘটে।
আহত জহুরা চাকামইয়্যা ইউনিয়নের ৮ নং ওয়ার্ড নেওয়াপাড়া গ্রামের বাসিন্দা ইউসুফ তালুকদার এর মেয়ে এবং ঘাতক স্বামী মুসা ঘরামি একই ইউনিয়নের ৬ নং ওয়ার্ডের বাইনবুনিয়া গ্রামের বাসিন্দা আজিজ ঘরামির ছেলে।
অভিযোগ সুত্রে, আহত জহুরা বেগম বলেন, স্বামী মুসা ঘরামি ও শশুর আজিজ ঘরামি মিলে তাকে হত্যা করার উদ্দেশ্যে ঘরের মধ্যে আটকে এলোপাতাড়ি ভাবে লাথি ঘুষি মারে এবং জিআই পাইব দিয়ে পিটিয়ে অমানুষিক নির্যাতন চালিয়ে হাত, পা, মাথা, শরীর সহ এমনকি লজ্জাজনক স্থানে গুরুত্বর জখম করে এবং বটি দিয়ে গলাকেটে হত্যা করে লাশ ঘুম করে ফেলার হুমকি ধামকি দেয়।এসময় ৯৯৯ নাম্বারে কল দিলে কলাপাড়া থানার পুলিশ তাকে গুরুতর আহত অবস্থায় পৌরসভার ৪ নং ওয়ার্ড নিজ বাসা থেকে উদ্ধার করে চিকিৎসার জন্য হসপিটালে পাঠান। তিনি আরও বলেন, গত ১৪ বছর আগে চাকামইয়্যা ইউনিয়ন বাইনবুনিয়া গ্রামের আজিজ ঘরামির ছেলে মুসা ঘরামি (৩৫) এর সঙ্গে পারিবারিক ভাবে ইসলামিক শরীয়াহ মোতাবেক বিবাহ হয় একই ইউনিয়নের নেওয়াপাড়া গ্রামের বাসিন্দা ইউসুফ তালুকদারের মেয়ে মোসাঃ জহুরা বেগম (৩০) এর।জহুরা বেগম ও মুসার ঔরসে মেহেদী হাসান (১২) ও জাবের হোসেন (৬), নামের ২ টি ছেলে সন্তান রয়েছে। গত ৫ বছর পর্যন্ত সোনিয়া নামের এক মেয়ের সঙ্গে পরকীয়া প্রেমে লিপ্ত মুসা ঘরামি, এনিয়ে স্ত্রী জহুরা বেগম এর সঙ্গে পারিবারিক কলহ লেগই থাকতো।এছাড়াও বিয়ের পর থেকে যৌতুকের দাবিতে গৃহবধূ জহুরা বেগম বহুবার নির্যাতিত হয়ে এপর্যন্ত প্রায় ৫ লক্ষ টাকা ও একভরি স্বর্নলংকার এনে দেয়া হয় মুসাকে।এনিয়ে স্থানীয়ভাবে কয়েকদফা শালিশ মিমাংসা করে দেয়া হয়েছে।জানাগেছে, মুসা সম্প্রতি নতুন ঘর তোলার জন্য শশুর বাড়ি থেকে ১ লক্ষ টাকা আনে। সেই ঘরে দ্বিতীয় স্ত্রী সোনিয়া কে এনে বসবাস করে প্রথম স্ত্রী জহুরা বেগম প্রতিবাদ করায় তাকে শারীরিক নির্যাতন চালিয়ে গৃৃহবন্দী করে রেখে হত্যার পরিকল্পনা করে স্বামী মুসা ঘরামি ও শশুর আজিজ ঘরামি।বর্তমানে গৃৃৃৃহবধূ জহুরা বেগম (৩০), পটুয়াখালী ২৫০ শয্যা-বিশিষ্ট সদর হাসপাতালে গুুুরুত্বর আহত অবস্থায় চিকিৎসাধীন রয়েছে।ভিকটিম জহুরা বেগম আইনগত ব্যবস্থা গ্রহনে যাবে বলে জানান।
এবিষয়ে আহত জহুরার মা মোসাঃ আমেনা বেগম বলেন, আমার মেয়েকে বিয়ের পর থেকে যৌতুকের জন্য বহুবার নির্যাতন করেছে জামাই মুসা ও শশুর আজিজ সহ তার পরিবারের লোকজন।এপর্যন্ত ৫ লক্ষ টাকা ও একভরি স্বর্ন নিয়েছে আবারও ৫ লক্ষ টাকা যৌতুক দাবি করে। দাবি পুরন না করলে মেয়েকে রাতের আধারে জবাই করে লাশ গুম করে ফেলবে।এরমধ্যে আবার দ্বিতীয় বিবাহ করে বউ ঘরে এনেছে। এনিয়ে দন্ধ হলে মেয়েকে মারধর করে ঘরে বন্দী করে রেখেছে শুনে ৯৯৯ নাম্বারে কল দিলে পুলিশের সঙ্গে গিয়ে আহত অবস্থায় জহুরাকে উদ্ধার করা হয়।এপর্যন্ত পাষন্ড স্বামী ও তার পরিবারের লোকজন কোন খোঁজ খবর নেয়নি বরং আইনের কাছে গেলে জানে মেরে ফেলার হুমকি ধামকি দিচ্ছে। ভয়ে থানায় মামলা করতে যেতে পারছেনা তারা নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন এবং জহুরার উপরে এমন অমানুষিক নির্যাতনকারীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানান।
আহত জহুরার বড় ছেলে মেহেদী হাসান (১২) বলে, আমার মাকে বাবা ও দাদা মিলে মারধর করে পাইব দিয়ে পিটায় মা কান্নাকাটি করলে বটি দিয়ে জবাই দিবে বলে মুখে গামছা ডুকিয়ে দেয়, ছোট ছেলে জাবের বলে মাকে ছেড়ে দিতে অনুরোধ করলে তাকেও ধমক দেয় এবং বটি দেখে ভয় পায় এমনকি তাদরকেও মেরে ফেলার হুমকি দেয়। অবুজ শিশুরা ও তার বাবা ও দাদার হিংস্রতার হাত থেকে বাঁচতে চেয়ে তাদের প্রতি ঘৃনা জানিয়ে বিচারের দাবি করে।
এব্যাপারে কলাপাড়া থানার এসআই রফিকুল ইসলাম বলেন, ৯৯৯ এর কল পেয়ে অফিসার ইনচার্জের নির্দেশে ঘটনাস্থলে গিয়ে আহত অবস্থায় জহুরা বেগমকে উদ্ধার করা হয় এবং তাৎক্ষনিক তাকে চিকিৎসার জন্য হসপিটালে পাটানো হয়।এসময় ঘরে থাকা জহুরা বেগমের জাল ছাড়া কাউকে পাওয়া যায়নি। আশেপাশের লোকজন এর কাছে জানাগেছে জহুরার স্বামী তাকে মারধর করেছে ঘরের কেহই ধরতে এগিয়ে আসেনি।তিনি আরও বলেন, ভিকটম আইনের সহযোগিতা চাইলে সর্বপ্রকার সহযোগিতা দেয়া হবে। তবে এখন পর্যন্ত থানায় কোন লিখিত অভিযোগ দেয়নি।অভিযোগ পেলে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে বলে জানান তিনি।