মঙ্গলবার, ০৪ নভেম্বর ২০২৫, ১১:৫৯ পূর্বাহ্ন
								
                            
                       
ক্রাইমসিন২৪ : রাত তখন আনুমানিক ১২ টা। ১৭ অক্টোবর ২০১৮। নগরীর প্রাণকেন্দ্র সিটি কলেজের নিকট বাড়ির ময়লা ফেলতে যাওয়া গৃহকর্মী ড্রেনের পাশে এক শিশুর কান্না শুনতে পেয়ে চমকে উঠেন। বিষয়টি জানতে পেরে তাৎক্ষণিক ঘটনাস্থলে ছুটে যান বিসিসির সাবেক মেয়র পুত্র কামরুল আহসান রুপম এবং তার ভায়রা নগরীর বিশিষ্ট ব্যবসায়ী ও সাংবাদিক একরামুল হুদা বাপ্পি। উদ্ধার করেন ড্রেনের পাশে পড়ে থাকা শিশুটিকে। ঐ সময় সদ্যজাত শিশুর কান্না শুনে উপস্থিত কেউই চোখের পানি ধরে রাখতে পারেননি। পরবর্তীতে নানা ঘাত-প্রতিঘাতের পর পুলিশ ও কোর্টের মাধ্যমে শিশুটির জিম্মা লাভ করে কামরুল হাসান রুপম। শিশুটির প্রতি তাদের মমতা ও স্নেহ দেখে বিজ্ঞ আদালত শিশুটিকে সরকারের সেভ হোম এর পরিবর্তে রূপমের জিম্মায় দেন। পরবর্তীতে রুপম রাজনীতি ও ব্যবসা নিয়ে ব্যস্ত থাকায় শিশুটির দেখভাল করতে থাকেন রূপমের ভায়রা ও তার ডাক্তার স্ত্রী। ধীরে ধীরে ওই পরিবারের মধ্যমনি হয়ে ওঠেন শিশুটি। নাম রাখা হয় আইশা। বর্তমানে সর্বোচ্চ সেবা ও সুযোগ সুবিধার মধ্যে ওই দম্পত্তির কোলে বড় হচ্ছে আইশা। ইতিমধ্যে বেশ কয়েকজন বিশেষজ্ঞ ডাক্তারের চিকিৎসা সেবা পেয়ে সম্পূর্ণ সুস্থ ভাবে বড় হচ্ছে সে। স্বাভাবিক নিয়মে সম্পন্ন হচ্ছে টিকা প্রদান। এ ব্যাপারে অভিজ্ঞতা জানতে চাইলে ওই দম্পতি বলেন, আমরা যখন আইশাকে টিকা কেন্দ্রে নিয়ে যাই, তখন আইশার অভিভাবকের নাম জিজ্ঞাসা করলে বলি ওর বাবার নাম একরামুল হুদা এবং মায়ের নাম ডাঃ মার্জিয়া মিরাজ। একরামুল হুদা আরো বলেন, আমার স্ত্রীর এখন দিন কাটে আইশার লালন-পালন এবং খেয়াল রেখে। ও কখন খাবে, ঘুমাবে, ঘুম ঠিক মতো হলো কিনা, শরীর খারাপ হলো কি না। ইতিমধ্যে ঢাকা থেকে নামিদামি কোম্পানির পোশাক ও খেলনা কিনে দেওয়া হয়েছে আইশার জন্য। এই দম্পতির শিশুটির প্রতি রয়েছে পরম মমতা। ইতিমধ্যে প্রতিবেশীসহ সর্বমহলের প্রশংসা কুড়িয়েছেন তারা। সচেতন মহলের মতে, মানুষের মধ্যে এমন মানবতা! বজায় থাকলে আমাদের সমাজ আরো উন্নত হবে। থাকবে না কোনো বৈষম্য। প্রসঙ্গত, চলতি বছরের ১ জানুয়ারি বিজ্ঞ আদালতে তিন ব্যক্তি শিশুটির জিম্মাদার হতে চাইলেও আদালত পরবর্তী আদেশ না দেওয়া পর্যন্ত সিদ্ধান্ত প্রদান স্থগিত রাখেন। তবে আয়েশা বর্তমানে ভালো আছেন বলে জানিয়েছে ঐএলাকার বাসিন্দারা।